রান্নাও এক ধরনের শিল্প। একজন শিল্পী যেমন রং নিয়ে মেতে ওঠেন ক্যানভাসে ঠিক তেমনি রন্ধনশিল্পী তার শৈল্পিক গুণে রান্না করে তোলেন আরো সুস্বাদু। শৈল্পিক রান্নায় চেনা খাবারও অচেনা হয়ে ওঠে। খাদ্য প্রস্তুতের বিভিন্ন ধাপে আলো, বাতাস, তাপ, ক্ষার পদার্থ ইত্যাদির সংস্পর্শে এসে খাদ্যের যে পরিবর্তন ঘটে, তা রন্ধনকারীর অবশ্যই জানা দরকার। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের অধ্যাপক ও নিউট্রিশন বিশেষজ্ঞ তাবাসসুম আজিজ খাদ্য প্রস্তুত ও রান্নার বিষয়ে যেসব টিপস দিয়েছেন সেগুলো দেখে নেয়া যাক।
আলো : কোনো কোনো খাদ্য আছে, যা শুধু আলোতে নষ্ট হয়। ভিটামিন বি২ বা রিবোফ্লেভিন আলোতে নষ্ট হয়। দুধ বা শাক সবজিতে সূর্যের আলো পড়লে সহজেই রিবোফ্লেভিন নষ্ট হয়ে যায়। সে জন্য খাদ্যদ্রব্য যেন রোদে বেশিক্ষণ না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ক্ষার পদার্থ : রান্নার সময় ক্ষার পদার্থ ব্যবহার করলে ভিটামিন নষ্ট হয়। অনেক সময় ডাল সুস্বাদু হওয়ার জন্য খাওয়ার সোডা ব্যবহার করা হয়। এতে ডাল সুস্বাদু হয়। কিন্তু মনে রাখবেন, ডালের থায়ামিন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়।
অক্সিজেন : খাদ্যদ্রব্য বিশেষ করে শাক সবজি রান্নার আগে কেটে খোলা অবস্থায় ফেলে রাখলে বাতাসের সংস্পর্শে ভিটামিন এ, সি নষ্ট হয়। ঢাকনা ছাড়া পাত্রে রান্না করলে খাদ্যমূল্য নষ্ট হয়। পাকা কলা, পেয়ারা, আম কাটার পর অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে কালচে হয়।
উত্তাপ : অত্যাধিক উত্তাপে অধিক সময় খাদ্যদ্রব্য রান্না করলে ভিটামিন বি, সি ও খনিজ লবণ নষ্ট হয়ে যায়। বিশেষ করে শাক সবজি, মাছ-মাংস ইত্যাদির বেশি ক্ষতি হয়।
শাক সবজি রান্না : শাক সবজি কাটার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। সবজির ছালসহ বড় টুকরো করে কাটতে হবে। রান্নার খুব বেশিক্ষণ আগে তরকারি কাটা উচিত নয়। পানি ফুটে উঠলে শাক সবজি পাত্রে ঢেলে ঢেকে দিতে হবে। এতে শাক সবজির পুষ্টিমূল্য বাষ্প হয়ে উড়ে যাবে না। অতিরিক্ত মসলা ব্যবহার করলে খাদ্যের আসল স্বাদ ঢাকা পড়ে। সে জন্য মসলার পরিমাণ জানতে হবে। শাক সবজি সিদ্ধ হওয়ামাত্র নামিয়ে নিতে হবে। তামা বা লোহার পাত্রে শাক সবজি রান্না না করাই ভালো।
মাছ রান্না : মাছ সিদ্ধ করে পানি ফেলতে নেই। তাছাড়া মাছ রান্নায় বেশি পানির প্রয়োজন হয় না। মাছের মধ্যে যে নির্যাস থাকে তা দিয়েই মাছ সিদ্ধ হয়। মাছ সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিতে নেই। কম তাপে মাছ রান্না করা উচিত। তবে বড় মাছের ক্ষেত্রে একটু সময় নেয়া দরকার কারণ বড় মাছ ভালো করে সিদ্ধ হলে খেতে সুস্বাদু হয়। অল্প তেলে ঢাকনা দেয়া পাত্রে মাছ ভাজি করলে ভিটামিন এ, ডি, ই, কে তেলের সঙ্গে মিশে বাতাসে বাষ্প হয়ে উড়ে যেতে পারে না। মাছ ভাজা ও রান্নার সময় পাত্রের মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
মাংস রান্না : মাংস ঢেকে রান্না করতে হবে। মাংস সিদ্ধ না হলে কাঁচা পেঁপের রস, দই বা সিরকা দিতে হবে। মাংস রান্নার সময় নির্যাস বের হয়ে রান্নার পানিতে মিশে যায়। মাংস সিদ্ধ করে পানি ফেলে দিলে খনিজ লবণ, ভিটামিন ইত্যাদি উপাদান চলে যায়। মৃদু তাপে ধীরে ধীরে মাংস রান্না করতে হবে।
খানা খাদ্যে আমার বিশেষ আগ্রহ আছে। সময় পেলেই ইউটিউবে খাদ্য দেখা শুরু করে দেই।
অতএব আপনার পোস্ট যে আমার প্রিয় হবে বলার অপেক্ষা রাখে না। ধন্যবাদ। 
ওয়াও !! দারুণ এডভাইজ।
ভালো সাজেশন।
এককথায় চমৎকার।
* সুন্দর…
খাদ্যের পুষ্টিমান বজায় রেখে করা একটি অত্যন্ত সচেতন হাতের নিপুন কাজ।
পরামর্শের জন্য অনেক ধন্যবাদ।