পাঁচ টাকা মূল্যের ফুটপাতের গাউনের জামায় পূজার আনন্দ উপভোগ

কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আমাদের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় আনন্দ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। যুগযুগ ধরেই প্রতিবছর আশ্বিন মাসে শারদীয় দুর্গাপূজা আসে আবার চলে যায়। কিন্তু আমার মন থেকে ফেলে আসা স্মৃতিগুলো মুছে যায় না। যেই অভাবের দিনে পাঁচ টাকা মূল্যের গাউনের জামা গায়ে দিয়ে দুর্গাপূজার আনন্দে মেতে উঠেছিলাম।

তাই শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভাগমনে মনটা চলে যায় সেই ছোটবেলার স্মৃতিতে। তখন আমার বয়স ছিল মাত্র ১১বছর। সময়টা ছিল ১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি। তখনকার সময়ে এই বঙ্গদেশের প্রতিটা জেলাশহরে একযুগে চলছিল দুর্ভিক্ষ। যদিও স্বাধীনতার পর যাদের জন্ম তাদের কাছে ১৯৭৪সালের দুর্ভিক্ষের কথা অজানা থাকলেও, সে সময়ের দুর্ভিক্ষের কথা এখনো এ দেশের অগণিত মানুষেরই মনে আছে। সেই দুর্ভিক্ষপীড়িত সময়ে আমরা সপরিবারে থাকতাম নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানাধীন আদর্শ কটন মিলের ভেতরে। তখই চলছিল আশ্বিনের শুভাগমনে শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি। যত দুর্ভিক্ষই আর দুর্যোগই হোক-না-কেন, মিল কর্তৃপক্ষ মিলের ভেতরে দুর্গাপূজা করবেই। কারণ, মিলে শ্রমিক কর্মচারীদের সংঘটন ছিল, ছিল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নও। শ্রমিক কর্মচারীদের সমস্ত দাবিদাওয়ার মধ্যে দুর্গাপূজাও একটা দাবি। তাই প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতো। আর ছোটবড় সবাই মেতে ওঠতো পূজার আনন্দে।

দুর্গাপূজা শুরু হবার অনেক আগে থেকেই মিলের ভেতরে থাকা সব হিন্দু ধর্মাবলম্বী যার যার সাধ্যমত কেনাকাটা শুরু করে দিতো। শুধু কেনাকাটা আর পূজার আনন্দের নামগন্ধ থাকতো না আমাদের সংসারে। কারণ, আমার বাবা আর বড়দা দু’জনেই ছিল চাকরিজীবী। বাবা চিত্তরঞ্জন কটন মিলে, আর বড়দা আদর্শ কটন মিলে। বড়দা’র চাকরির সুবাদে আমরা সপরিবারে আদর্শ কটন মিলের ভেতরেই থাকতাম। একবার দুর্গাপূজার কয়েকমাস বাকি। সে সময় আমার বাবা চিত্তরঞ্জন কাটন মিলেই কাজ করতো। একদিন ঠিক দুপুরবেলা বাবা চিত্তরঞ্জন কটন মিলে কর্মরত অবস্থায় ক্যালেন্ডার মেশিনে ডানহাতের চারটে আঙুল থেঁতলে যায়। এর কয়েকমাস পরেই শুরু হয় আশ্বিনের শুভাগমনে শারদীয় দুর্গোৎসবের সুবাতাস। বাবা হাতের চারটে আঙুল হারিয়ে ঘরে শুয়ে শুয়ে কাতরাচ্ছে। আর মা-বাবা, বৌদি, ভাতিজা-ভাতিজি, বিয়ের উপযুক্ত দুই বোন সহ পুরো সংসারের দায়িত্বভারই বড়দা’র ঘাড়ের পর পড়েছে। এতো বড় সংসারের দায়িত্বভার দাদা একা কোনভাবেই বহন করতে পারছিলেন না। পুরো বছর মুদী দোকানে বাকি খেতেখেতে দেখা দিয়েছিল বিশাল অংকের দেনার বোজা। সেই দেনার বোজা চাকরি ছাড়ার পর এককালীন যেই সার্ভিসের টাকা পেয়েছিল, সেই টাকা দিয়েও আরও বেশকিছু টাকা বাকি থেকে যায়। তারপর বৌদির হাতের কানের গহনা নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে শোধানো হয়।

এর কারণ ছিল যে, তখকার সময়ে নামমাত্র বেতনে দুইজনের সংসার চালানোই মুশকিল ছিল। কিন্তু এই সামান্য বেতনের এক শ্রমিকের মাথার উপর থাকা এক বিশাল যমের বোজার খরচ চালানো সম্ভব ছিলো না, তাই আমাদের এতো দেনার বোজার ভার সইতে হয়েছিল। আর সেই কারণেই আমাদের নুন আনতে পান্তা শেষের মধ্যে অনাহারে অর্ধাহারে কোনরকমভাবে দিনগুলো অতিবাহিত করতে হয়েছিল। এর মধ্যে মা দুর্গাদেবীর আগমনী বার্তায় ঘরে ঘরে আনন্দে মুখরিত। কান্নার রোল আমাদের সংসারের কোণায় কোণায়। একবেলা মোটা চালের ভাত পেটে গেলেও, দুইবেলা আহার ঠিকমত সেসময়ে আমাদের কপালে খুব কমই জুটেছিল। সকালে আদর্শ কটন মিলের রেশন কার্ডে পাওয়া গমের আটার বানানো রুটি। আর দুপুরবেলার খাবার বিকাল চারটা বাজে খেয়ে, অনেকসময় রাতেরবেলা সবাই না খেয়েই ঘুমিয়ে থাকতে হতো।
কোনও কোনও রাতে পেটের ক্ষুধায় চোখে ঘুম আসতো না, শুধু ছটফট ছটফট করেই রাত কাটাতাম। রাতের ছটফটানি গর্ভধারিণী মা ঠিকই টের পেতো। তাই রাত ভোর হতে না হতেই আটার যাউ অথবা আটার রুটি তৈরি করার প্রস্তুতি শুরু করে দিতো। ঘরে চাল আটা না থাকলে মিলের ভেতরে থাকা পড়শিদের বাসায় গিয়ে ধরনা দিতো চাল অথবা আটা ধার করার জন্য।

এরকম অভাবের দিনে বাবা হাতের আঙুল হারিয়ে ঘরে শুয়ে শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আর চারদিকে চলছে শারদীয় দুর্গাপূজার আনন্দ। মিলের ভেতরে থাকা সব ছেলে-পেলেদের আনন্দের সাথে আমার মনেও জাগতো পূজার আনন্দ। পাল সম্প্রদায়ের লোকেরা যেই পূজামণ্ডপে প্রতিমা তৈরি করতেন, সেই মণ্ডপের সামনেই বসে থাকতাম সারাক্ষণ। দুর্গাপূজা সামনে রেখে অনেকে বাজার থেকে জামাকাপড় কিনে এনে সবাইকে দেখাতো। তাদের কেনা নতুন জামাকাপড় দেখে মাকে বলতাম, আমার নতুন জামা পেন্ট কবে কিনবে।

আমার কথা শুনে মা চুপ করে থাকতেন, আর দেহের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়তেন। পূজায় সন্তানকে নতুন জামাকাপড় না দিতে পারার দীর্ঘশ্বাস তখন বুঝতাম না। না বুঝেই খানিক পরপরই মায়ের কাছে গিয়ে নতুন জামাকাপড়ের জন্য কান্নাকাটি করতাম। মা তখন শান্তনা দিয়ে বলতেন, পূজা শুরু হতে আরও কিছুদিন বাকি আছে। সবুর করো সময়মত তোমার নতুন জামা পেন্ট হয়ে যাবে। মায়ের কথা শুনে আশায় আর অপেক্ষায় থাকতাম। পেটে ক্ষুধা থাকলেও নতুন জামাকাপড়ের আশায় ক্ষুধার জ্বালা বেশি একটা অনুভব করতে পারতাম। না। মনে মনে বলতাম, খাবার চাই না, চাই পূজার নতুন জামাকাপড়।

প্রতিদিন প্রতিক্ষণ আমার মুখে ছিল, শুধু নতুন জামা, নতুন জামা। আমার মা যেন দিশা হারিয়ে ফেললেন। মিলের শ্রমিক কোয়ার্টারে যেই ঘরে আমরা থাকতাম, সেই ঘরের পিছনে আমার মা কয়েকটা ধুন্দুলের চারা রোপণ করেছিলেন। সেই বছর মায়ের রোপণ করা ধুন্দুল গাছে বিস্তর ধুন্দুল ধরেছিল। তবে এখনকার দিনের মতন তখনকার দিনে এই ধুন্দুল অনেকেই খেতো না। এক সের ধুন্দুলের দাম ছিল আট আনা বারো আনা। আমার মা প্রতিদিন ঘরের চাল থেকে কয়েক সের ধুন্দুল সংগ্রহ করে এক নং ঢাকেশ্বরী কটন মিলের বাজারে নিয়ে বিক্রি করতো। আসার সময় আমাদের খাবারের জন্য আটা অথবা চাল আর অন্যকিছু কিনে নিয়ে আসতো। অবশিষ্ট কিছু বাড়তি পয়সা থাকলে সেই পয়সা আমার মা ঘরের বাঁশের খুঁটীতে জমা করে রেখে দিতো, বিপদের দিনের কথা চিন্তা করে।

আমার জ্বালা আর সহ্য করতে না পেরে পূজোর দুইদিন আগে ঘরের বাঁশের খুঁটী কেটে কিছু জমানো পয়সা বের করলো। দশ পয়সা, পাঁচ পয়সা, চার আনা, আট আনা মিলে মোট ১২টাকার মতন হয়েছে। তখকার দিনে ১টাকার যেই দাম ছিল, এখনকার সময়ে ১০০টাকারও সেই মূল্য নেই। সেই টাকা একটা পুটুলিতে বেধে আমার মা বড়দা’র হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, পায়ে হেটে নারায়ণগঞ্জ গিয়ে একটা গাউনের জামা আর একিটা পেন্ট ওর জন্য কিনে নিয়ে আয়। মায়ের কথামত বড়দা তা-ই করলেন। রোববার বন্ধের দিনে পায়ে হেটেই চলে গেলেন নারায়ণগঞ্জ শহরে। কিনে আনলেন গাউনের জামা আর একটা হাফ-পেন্ট।

তখনকার দিনে এই বঙ্গদেশে নতুন গাউনের কাপড় আসতে শুরু করেছিল বিদেশ থেকে। বিদেশীরা তাদের ব্যবহারিক মেয়াদ উত্তীর্ণ জামাকাপড়গুলো নাকি ফেলে রাখতে। তাদের সেই ফেলে দেওয়া জামাকাপড়গুলো কিছু বাঙালী ব্যবসায়ী বিদেশ থেকে আমাদের দেশে চালান করতো। সেইগুলেকেই লোকে বলতো গাউন। গাউনের কাপড়ের বিশাল আরৎ ছিল ঢাকা সদরঘাট। সদরঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন জেলাশহরে সাপ্লাই হতো। সেই গাউনের জামা পেন্টের কথা হয়ত বর্তমানে অনেকেরই মনে আছে। সেসময় আমাদের দেশটা ছিল সদ্য যুদ্ধ বিধ্বস্ত একটা দেশ। চারদিকেই ছিল অভাব আর অভাব। আমাদের মতন গরিব মানুষের কাছে এই গাউনের কাপড়গুলো খুবই জনপ্রিয় ছিল। এগুলো গুলিস্তান হকার মার্কেটের সামনে আর নারায়ণগঞ্জ দুই নং রেল গেইট সহ শহরের অলিতে-গলিতে পরসা সাজিয়ে বসতো হকাররা। ডি.আই.টি মার্কেটের সামনেও বসতো এই গাউনের কাপড়ের জামা পেন্টের পরসা।

হকাররা সদরঘাট থেকে সেসব জামা পেন্টের গাইড এনে রাস্তার পাশে একটা চটের উপরে গাউনের জামা পেন্টগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখতো। আর চিৎকার করে বলতো, “যেটা নেন পাঁচ টাকা, বাইচ্ছা বাইচ্ছা পাঁচ টাকা, এক দাম পাঁচ টাকা।” সেই গাউনের জাম পেন্টই ছিল আমার জন্য শারদীয় দুর্গোৎসবের নতুন জামাকাপড়। তখনতো বুঝতামনা এগুলো কিসের কাপড়। কমদামী না বেশি দামী তাও বুঝতামনা। নতুন জামা পেন্ট পেয়েছি তো মহা-খুশি। মিলের ভেতরে থাকা আরও দশটা ছেলেকেও দেখাতে লাগলাম, আমার নতুন জামা পেন্ট। আমার খুশিতে আমাদের সংসারে সবাই খুশি। আমাদের সংসারে আমিই ছিলাম সবার ছোট। সংসারে সবার চেয়ে ছোটদের আবদারই বেশি থাকে। আমার বেলায়ও হয়েছে তা-ই। আমার বড় আরও দু’বোন ছিল। সে সময় তাঁরা বিয়ের উপযুক্ত হওয়ায় সংসারের দুঃখকষ্ট বুঝতো। বুঝতামনা শুধু আমি। বুঝতাম শুধু নতুন জামা পেন্ট পড়ে সেজে-গুজে কখন পূজামণ্ডপে যাবো আর সমবয়সীদের দেখাবো।

সেই দিনগুলোর কথা এখনো মনে পড়ে। মনে পড়ে তখন, যখন প্রতিবছরই আশ্বিনের আগমনে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছোটবড় সবাই শারদীয় দুর্গোৎসবের আনন্দে জেগে ওঠে। সবার সাথে সাথে আমার মনেও শারদীয় দুর্গোৎসবের আনন্দ জাগে। কিন্তু চোখের সামনে টেলিভিশনের পর্দার মতো ভেসে ওঠে ফেলে আসা অভাবের দিনে দুর্গাপূজায় গাউনের জামা পেন্ট হাতে পাওয়া খুশির স্মৃতিকথাগুলো।

নিতাই বাবু সম্পর্কে

নিতাই বাবু ২০১৫ সালে তিনি শখের বশে একটা ব্লগে রেজিষ্ট্রেশন করে লেখালেখি শুরু করেন।তিনি লিখতেন নারায়ণগঞ্জ শহরের কথা। লিখতেন নগরবাসীর কথা। একসময় ২০১৭ সালে সেই ব্লগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ব্লগ কর্তৃক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জনাব সাঈদ খোকন সাহেবের হাত থেকে ২০১৬ সালের সেরা লেখক সম্মাননা গ্রহণ করেন। সাথে নগর কথক উপাধিও পেয়ে যান। এরপর সেই ব্লগে লেখালেখির পাশাপাশি ২০১৮ সালের জুলাই মাসে তিনি শব্দনীড় ব্লগে রেজিষ্ট্রেশন করেন। শব্দনীড় ব্লগে উনার প্রথম লেখা "আমি রাত জাগা পাখি" শিরোনামে একটা কবিতা। তিনি চাকরির পাশাপাশি অবসর সময়ে লেখালেখি পছন্দ করেন এবং নিয়মিত শব্দনীড় ব্লগে লিখে যাচ্ছেন।

8 thoughts on “পাঁচ টাকা মূল্যের ফুটপাতের গাউনের জামায় পূজার আনন্দ উপভোগ

  1. এক জীবনে আমাদের কত স্মৃতি; স্মৃতির পাহাড় জমে যায়। আমাদের শ্রোতার সংখ্যাও কমে যায়। সবাই যেন নিজেরটাই বলতে চায়; নিজের সত্য কাউকে বলা হয় না। :(

    শুভ সকাল মি. নিতাই বাবু। জীবন যেমন চলে … চলতে দিন। শুভ সকাল।

    1. শ্রদ্ধেয় কবি দাদা, আমি আমার জীবন নিয়ে লুকোচুরি খেলা খেলি না। আমার জীবনটা অনেক কষ্টের জীবন ।অভাবের মাঝেই হাতে-পায়ে লম্বা হয়েছি। তাই ফেলে আসা দিনগূলোকে এখনো স্মরণের রাখি। 

      সুন্দর মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় কবি দাদা।

  2. জীবনের কথা গুলো পড়লাম নিতাই দা। ঠিকই বলেছেন মন থেকে ফেলে আসা স্মৃতিগুলো আসলেই মুছে যায় না। ভালো থাকবেন।

    1. শ্রদ্ধেয় সৌমিত্র দাদা, আমার জীবন নিয়ে কখনো মিথ্যে কিছু লিখিনা। নিজের জীবন নিয়ে মিথ্যে কিছু লেখা মানে নিজে নিজের সাথেই প্রতারণা করা। আমার ফেলে আসা দিন নিয়ে এই শব্দনীড়ে আরও কিছু শেয়ার করবো দাদা। আশা করি সাথে থাকবেন ।

  3. শুধু আপনি একা না দাদা এমন আরও অনেকেই আছেন। কেও প্রকাশ করে কেও করেনা। আমাদের বাড়িতে ওই ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময়ও একই অবস্থা ছিল। ভোর ৩টায় গয়ে রেশনের লাইনে দাড়াতাম পরনে লুঙ্গির পরিবর্তে থাকত গায়ের চাদর, লুঙ্গি কিনে দেয়ার মত সামর্থ ছিলনা বাবার। মায়ের পরনে হাজার তালি/সেলাই করা শাড়ি। ছোট ভাইদের মার্কিনিদের খাবার অযোগ্য পোকায় খেয়ে বেচে যাওয়া গম যা রেশনে পেতাম সেই আটার রুটির পরিবর্থে ভাত খাবার জন্য কান্নাকাটি, আশেপাশে থেকে মায়ের কুড়িয়ে আনা শাক ছিল উপাদেয় তরকারি। এগুলিও দেখেছি সহ্য করেছি। কাজেই দুঃখ করে কি করবেন ভাই?

    1. শ্রদ্ধেয় দাদা, আপনার মূল্যবান মন্তব্য পড়ে সেসময়ের অনেককিছুই মনে পড়ে যায়। যা এসময়ের ছেলেপেলেদের কাছে হবে রূপকথার কাহিনী। আসলে কিন্তু সত্য ! আমার সেই সময়ের স্মৃতিকথায় আরও অনেককিছু লেখার বাকি ছিল। কিন্তু লিখিনি । কারণ , ব্লগে শব্দ সংখ্যা বেড়ে যায়, তাই আর বেশি শব্দ ব্যবহার করিনি । আগামীতে আরও অনেককিছু নিয়ে লিখবো বলে আশা করি।

      আমার লেখায় আপনার সুন্দর মন্তব্যখানিও স্মৃতি হয়ে থাকবে দাদা।

  4. আমাদের অনেকের জীবনে প্রকাশিত অপ্রকাশিত গল্পই ধীরে ধীরে মনোগল্প হয়ে থেকে যায়। খুব কাছের মানুষও এক সময় জানতে চায় না। কথা কথার চাপে চাপা পড়ে যায়।

    আজ আপনার জীবন গল্প পড়লাম নিতাই দা। আপনার জন্য শুভকামনা থাকলো।

    1. আমি দিদি আমার জীবনের ঘটনাবলী প্রকাশ করেই যাচ্ছি। কারণ, অদূর ভবিষ্যতে আমার দুটো নাতিন আর একটা নাতি আমাদের চেয়ে অত্যাধুনিক মোবাইল ফোন ব্যবহার করবে। ওরা দিনরাত বিশ্বের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে। আমার লেখাগুলোও ওদের নজরে পড়বে। এখন যদি আমার জীবন নিয়ে মিথ্যে কিছু লিখে যাই, ওদের কাছেও মিথ্যেবাদী হয়ে থাকবো। তাই আমি সত্য প্রকাশে যথেষ্ট মনোযোগী । 

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।