মামুনের_অণুগল্প : একদিন_লিখতে_গিয়ে

শাহেদ তুড়ির সাথে হাতের সিগ্রেটের ছাই ফিল্মী কায়দায় ফেলে দিয়ে একবুক ধোঁয়া টেনে নেয়। এরপর স্মার্ট ভঙ্গিতে ধোঁয়ার রিং বানিয়ে শূন্যে ছেড়ে দিতে থাকে।

মুগ্ধ হয়ে মিলি রিংগুলোর দিকে তাকিয়ে রইলো। শেষে শাহেদের আরো কাছে এসে বলে,
– দারুণ জিনিস তো শাহেদ ভাই! আমাকে শিখাবেন?

শেষ উড়ে যাওয়া ধোঁয়ার কুণ্ডলির পানে চেয়ে থেকে উত্তর দেয় শাহেদ,
– কেন নয়? এই দেখ…

এই পর্যন্ত লিখতেই ভ্রু কুঁচকে যায় গল্পকারের। ‘নাহ! হলো না… উহু, এভাবে না’- ভাবনাটা আসতেই লেখাগুলি এক টানে কেটে দিয়ে আবার প্রথম থেকে শুরু করেন…

“শাহেদ একটু লুকিয়ে সিগ্রেটটা ধরালো। এখন পাবলিক প্লেসে ধুমপান করা নিষেধ। তারপরও তার মত শিক্ষিত মূর্খরা এখনো প্রকাশ্যে এই আকামটি করে থাকে। মিলির দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। সে আর থাকতে না পেরে কাছে এসে বলে,
– শাহেদ ভাই, সিগ্রেটটা ফেলেন। জানেন না প্রকাশ্যে ধুমপান করা নিষেধ?

– স্যরি, ফেলে দিচ্ছি..

বিব্রত শাহেদ উপস্থিত অন্য সকলের ভ্রুকুটিপূর্ণ চাহনির সামনে চোরের মতো হাসে। জুতোর তলায় পিষ্ট হতে থাকা ‘ক্যান্সার শলাকা’ টি থেকে তখনও একটু একটু কালচে নীল ধোঁয়া বের হচ্ছে।”

‘হুমম… এবার ঠিক আছে’- ভাবেন গল্পকার। আনন্দে চোখ বুজে আসে তার। দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য-উভয় চোখ বন্ধ করে গল্পের ক্রম মনে মনে সাজাতে থাকেন। চরিত্রগুলি অক্ষরে রুপ নিতে গিয়ে গল্পকারের ব্রেইণের ইতিবাচক পথটি বেছে নেয়।

#একদিন_লিখতে_গিয়ে_মামুনের_অণুগল্প_৫০৪

মামুন সম্পর্কে

একজন মানুষ, আজীবন একাকি। লেখালেখির শুরু সেই ছেলেবেলায়। ক্যাডেট কলেজের বন্দী জীবনের একচিলতে 'রিফ্রেশমেন্ট' হিসেবে এই সাহিত্যচর্চাকে কাছে টেনেছিলাম। এরপর দীর্ঘ বিরতি... নিজের চল্লিশ বছরে এসে আবারো লেখালখি ফেসবুকে। পরে ব্লগে প্রবেশ। তারপর সময়ের কাছে নিজেকে ছেড়ে দেয়া। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬ তে 'অপেক্ষা' নামের প্রথম গল্পগ্রন্থ দিয়ে লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ। বইমেলা ২০১৭ তে তিনটি গ্রন্থ- 'ছায়াসঙ্গী'- দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ, 'ঘুঙ্গরু আর মেঙ্গরু'- উপন্যাস এবং 'শেষ তৈলচিত্র'- কাব্যগ্রন্থ নিয়ে সাহিত্যের প্রধান তিনটি প্ল্যাটফর্মে নিজের নাম রেখেছি। কাজ চলছে ১০০০ অণুগল্প নিয়ে 'অণুগল্প সংকলন' নামের গ্রন্থটির। পেশাগত জীবনে বিচিত্র অভিজ্ঞতা লাভ করেছি। একজন অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পোষাক শিল্পের কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছি। লেখালেখির পাশাপাশি সাংবাদিকতা করছি। লেখার ক্ষমতা আমি আমার ঈশ্বরের কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছি। তাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লিখেই যেতে হবে আমাকে।

6 thoughts on “মামুনের_অণুগল্প : একদিন_লিখতে_গিয়ে

  1. শিহাব আমার প্রিয় চরিত্র। এই পর্বে অবশ্য শাহেদকে পেলাম।

    গল্প উপহারের জন্য ধন্যবাদ মি. মামুন। শুভ সন্ধ্যা।

    1. মাঝেমধ্যে শাহেদকেও আনার প্রয়োজন আছে ভাইয়া। আপনাকেও ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য। শুভেচ্ছা…https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

  2. ইন্টারেস্টিং গল্প মহ. আল মামুন ভাই। আশা করবো ভালো আছেন। :)

    1. ধন্যবাদ রিয়া দিদি। আপনার অণুভূতি জেনে ভালো লাগলো। ভালো থাকুন। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gifhttps://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।