ভালবাসা শুধু ভালবাসা দ্বিতীয় খণ্ড দশম পর্ব

ভালবাসা শুধু ভালবাসা
দ্বিতীয় খণ্ড দশম পর্ব

দু’ টুকরো ভালবাসা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

পাতা ঝরার মর্মর শব্দ আর রুক্ষ শীতের অবসান ঘটিয়ে আনন্দ বার্তা নিয়ে উপস্থিত হয় ঋতুরাজ বসন্ত। ফুলের সৌরভ আর অপরূপ রূপ প্রেমিক মনকে করে তোলে উদাসী। এই উদাসী মনকে প্রশান্তি দিতে মধুর কণ্ঠে অবিরাম গান শোনায় কোকিল। আর এই ভাষা ও ভালোবাসার মাসের মাঝামাঝি সময়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চলে যায় একটা সপ্তাহ, যাকে আমরা বলি ভ্যালেন্টাইন্স উইক। এই ভ্যালেনটাইনস উইক নিয়ে বিশেষ ফিচার

৭ ফেব্রুয়ারি :হ্যাপি রোজ ডে

কাঁটাবন কিংবা শাহবাগের ফুলের দোকানগুলোর সামনে দিয়ে একবার হেঁটে গেলে আমাদের সবারই ইচ্ছে করে একটি লাল গোলাপ কিনে তাকে উপহার দিতে। ভালোবাসার প্রতীকই যে লাল গোলাপ। ভালোবাসার এই প্রতীকটির দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম নামকরণ করেন ডেনমার্কের রানি আলেকজান্দ্রা। ৫০তম বিবাহবার্ষিকীতে আলেকজান্দ্রা লন্ডনে এলে লন্ডনের অধিবাসীরা তাকে হাজার হাজার লাল গোলাপ দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। আলেকজান্দ্রা এত গোলাপ দেখে তো হতবাক! তিনি এক সিদ্ধান্ত নিলেন, এই হাজারখানেক গোলাপগু বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে দরিদ্র, অসুস্থ মানুষদের প্রতি সেবার, ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দিতে বললেন। লাল গোলাপ দিয়ে তার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য পালিত হয় বিশেষ রোজ ডে।

গোলাপের বিনিময়ে
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

গোলাপ দিবস আজি জানে সর্বজনে,
প্রেমের গোলাপ ফুটে হৃদয় কাননে।
গোলাপের ভালবাসা ব্যর্থ নাহি হয়,
ভালবাসা করে জয়, সবার হৃদয়।

গোলাপের বিনিময়ে প্রীতির বন্ধন,
শুভেচ্ছার বিনিময়ে প্রফুল্লিত মন।
ভালবেসে কর যদি গোলাপ প্রদান,
দিনে দিনে বৃদ্ধি হয়, অর্থ যশ মান।

করিলে গোলাপ দান ভালবাসা হয়,
মিলেমিশে থাকে দুটি অভিন্ন হৃদয়।
হৃদয়ের ভালবাসা পবিত্র গোলাপ,
গোলাপ প্রদানে তাই নাহি হয় পাপ।

ভালবাসা মূল্য দিয়ে কেনা নাহি যায়,
লিখিল লক্ষ্মণ কবি তার কবিতায়।

৮ ফেব্রুয়ারি :হ্যাপি প্রপোস ডে

একসঙ্গে তো কয়েকটি বছর কাটালেন, কিন্তু এখনো বুঝে উঠতে পারছেন না আপনার প্রিয় মানবীটিকে কীভাবে প্রস্তাব করবেন? তাহলে এই দিনটিতে আপনার না বলা কথাটাই বলে দিন হাতে এক গুচ্ছ গোলাপ নিয়ে, নতুবা আপনার অবস্থাটাও হতে পারে ঠিক জন মাইকেলের পিসতুতো ভাইয়ের মতো। মাইকেলের ভাইটি অনেক বছর অপেক্ষা সত্ত্বেও তার প্রেমিকাকে প্রস্তাব করতে পারলেন না, ভাইয়ের এ হাল দেখে মাইকেল এই দিনটিকে উত্সর্গ করলেন প্রতিটি পুরুষের জন্য যাতে না বলা কথাটা এবারে প্রকাশ পায়।

প্রস্তাব দিবস (প্রপোজ ডে)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

প্রস্তাব দিবস আজি সারা দেশময়,
হ্যাপি প্রপোজ ডে সকলেই কয়।
ভালবাসি কাছে ডাকি প্রিয়জনে তার,
গোলাপী গোলাপ করে দেয় উপহার।

না বলা প্রস্তাব যত বলে দাও আজি,
নতুন প্রস্তাবে প্রিয় হতে পারে রাজী।
হৃদয় মাঝারে রাখা নতুন অফার,
প্রিয়জনে ব্যক্ত কর সম্মুখে তাহার।

গোলাপের সুবাসেতে ব্যাকুলিত প্রাণ,
কুঞ্জে কুঞ্জে গাহে পাখি বসন্তের গান।
ভালবাসি প্রিয়জনে করে কর রাখি,
অব্যক্ত প্রস্তাব যত কহ কাছে ডাকি।

প্রস্তাব দিবস আজি, পূণ্য শুভক্ষণ,
কবিতায় লিখে কবি ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।

৯ ফেব্রুয়ারি :হ্যাপি চকলেট ডে

একগুচ্ছ গোলাপের সাথে ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহের তৃতীয় দিনটি ইউরোপ আমেরিকায় উদযাপিত হয় এক বাক্স চকলেট নিয়ে। সেই প্রাচীনকাল থেকে চকলেট উপহারের মাধ্যমে পছন্দের মানুষটির কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বার্তাটি। জটেকদের সময়কাল হতে চকলেটকে আধ্যাত্মিক প্রজ্ঞার বিষয় হিসেবে বিয়ের উত্সবে ব্যবহার করা হতো। চকলেটে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস রয়েছে, যা উদ্দীপক, দুশ্চিন্তা নিরোধকের কাজ করে। কাছের মানুষটির দুশ্চিন্তা নিরোধের জন্য আপনিও এক বাক্স চকলেট উপহার দিতে পারেন।

চকোলেট দিবস (হ্যাপি চকোলেট ডে)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

চকোলেট দিবসেতে চকোলেট চাই,
চকোলেট দিয়ে আজি শুভেচ্ছা জানাই।
জানে ভালো সকলেই আজিকার দিনে,
প্রিয়জনে দিতে হয়, চকোলেট কিনে।

চকোলেট বাক্স সাথে দামী উপহার,
গোলাপী গোলাপগুচ্ছ রেখো দুইচার।
মনে রেখো আজিকে গোলাপ দিবস,
চকোলেট দিলে আজি প্রিয়া হয় বশ।

ভালবেসে চকোলেট দাও প্রিয়জনে,
চকোলেট দিবসের পূণ্য শুভক্ষণে।
গোলাপের গুচ্ছ এক ধরি একহাতে,
ভালবাসা বিনিময় করো প্রিয়া সাথে।

চকোলেট ডে আজিকে করহ পালন,
কাব্য লিখিলেন কবি ভাণ্ডারী লক্ষ্মণ।

১০ ফেব্রুয়ারি :হ্যাপি টেডি ডে

সর্বপ্রথম আমেরিকার মরিস মিচটম প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টকে উত্সর্গ করে টেডি বিয়ার বাজারজাত করেন। স্বাভাবিকভাবেই অল্প দিনেই বাচ্চাদের মাঝে টেডির হিড়িক পড়ে যায়। বিশ শতকের সেই টেডি বিয়ারের রূপ অনেক পাল্টেছে কিন্তু টেডির প্রতি ভালোবাসাটা রয়ে গেছে ঠিক আগের মতোই, তাই তো ভালোবাসার মানুষটিকে ভালোবাসার জিনিসটি দেওয়ার জন্যই পালন করা হয় হ্যাপি টেডি ডে। পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, উপহার হিসেবে মেয়েরা টেডি বিয়ার অধিক পছন্দ করে। সেই অনুযায়ী পাশ্চাত্যে এই দিনটিকে সামনে রেখে সাশ্রয়ী মূল্যে হরেক রকমের টেডি বিয়ার বাজারজাত করা হয়, যাতে পছন্দের টেডি বিয়ারটি কারো মুখে হাসি ফোটাতে পারে।

টেডি বিয়ার দিবস (হ্যাপি টেডি ডে)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

গতকাল ছিল জানি টেডি বিয়ার ডে
স্মৃতি শুধু মনে রয়, আপনার হৃদে।
টেডি বিয়ার দিবস, শুন সর্বজন,
বিগত দিবস কথা, করিব বর্ণন।

প্রিয়জন যদি তব, হয় বড়ো জেদি,
আজিকার দিনে তারে কিনে দাও টেডি।
ভালবাসার বন্ধন না যায় খণ্ডন,
হৃদয়েতে থাকে লেখা বাঁধা রয় মন।

টেডি বিয়ার দিবস পূণ্য শুভক্ষণ,
টেডি উপহার দেয় সকলে এখন।
প্রিয়জনে দাও যদি টেডি উপহার,
নিশ্চয় হইবে খুশি প্রেয়সী তোমার।

পবিত্র দিবসে তাই সবে খুশি হয়,
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কবি, কবিতায় কয়।

১১ ফেব্রুয়ারি :হ্যাপি প্রমিস ডে

ভালেন্টাইন’স ডে পঞ্জিকার পঞ্চম দিনটি হলো ১১ ফেব্রুয়ারি, অর্থাত্ প্রমিস ডে। প্রিয়জনকে আমরা অনেক কথাই দিয়ে থাকি, কিন্তু তার সবই রাখা হয়ে উঠে না, অনেক সময় মনেই থাকে না। তাহলে একবার ভাবুন তো, আপনার কাছের মানুষটির কাছে আপনার মূল্য দিন দিন কমে যাচ্ছে না তো? সম্পর্কের এই দিকটির বিবেচনা করেই প্রমিস ডে। এই দিনটি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? স্বাভাবিকভাবেই কাছের মানুষটি আমৃত্যু একটি প্রতিশ্রুতি চায়,তা হল যেকোনো পরিস্থিতিতে আপনার সহায়তা। নির্দিষ্ট এই দিনটিতে আপনি এই প্রতিশ্রুতিটি করতে পারেন যা আপনাদের সম্পর্কের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে পারে।

প্রতিশ্রুতি দিবস (হ্যাপি প্রমিস ডে)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

প্রতিশ্রুতি দিবসের বার্তা লিখি ভাই,
পবিত্র দিবসে তাই শুভেচ্ছা জানাই।
কবিতায় লিখে কবি করয়ে মিনতি,
প্রিয়জনে আজি তব দাও প্রতিশ্রুতি।

হৃদয়ের গাঁথা মালা দিয়েছো যাহারে,
প্রিয় তব আপনার বুঝে নিও তারে।
প্রতিশ্রুতি দাও নিজ সাধ্য অনুসার,
দিনে দিনে বাড়ে প্রেম হৃদয় মাঝার।

প্রমিস দিবস আজি করহ পালন,
প্রিয়জনে দাও কিনে যাহা প্রয়োজন।
গোলাপের ভালবাসা প্রতিশ্রুতি দেয়,
কার সাধ্য ভালবাসা তার কেড়ে নেয়?

প্রমিস দিবস বার্তা হল সমাপন,
কবিতায় লিখে কবি শ্রীমান লক্ষ্মণ।

১২ ফেব্রুয়ারি :হ্যাপি কিস ডে

প্রাচীনকাল থেকে ভালোবাসার গভীরতা, অন্তরঙ্গতা আমরা চুম্বনের মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকি। হতে পারে তা আপনার সন্তানের, মায়ের অথবা প্রিয়জনের। ভালেন্টাইন’স ডে পঞ্জিকার ষষ্ঠ দিনটি কিস ডে হিসেবেই পালিত হয়ে আসছে। কিস ডে সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডে পালিত হয়। সাংস্কৃতিক কারণে আমাদের দেশে এই দিবসটি তেমন জনপ্রিয় না হলেও পাশ্চাত্যে এর ভিন্ন তাত্পর্য রয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে কিস ডের একটি জনপ্রিয় আয়োজন হলো চুম্বন প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রতিযোগীদের দীর্ঘ সময় ধরে চুম্বনে আবদ্ধ থাকতে হয়। সেই জুটিই বিজয়ী হবে, যারা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চুম্বনে আবদ্ধ ছিল। গত বছর থাইল্যান্ডের এক জুটি টানা ৫৯ ঘণ্টা পেরিয়ে চুম্বনে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়।

কিস-এর প্রকারভেদ। 1. এসকিমো কিস, 2. ফ্রেঞ্চ কিস, 3. সিঙ্গল লিপ কিস, 4. ইয়ারলোব কিস, 5. বাটার ফ্লাই কিস, 6. স্পাইডারম্যান কিস, 7. লঁজারি কিস, 8. লিজার্ড কিস, 9. ভ্যাম্পায়ার কিস ও 10. এঞ্জেল কিস

1. এসকিমো কিস:
কিস করার সময় যদি পরস্পরের যখন নাক ঘষাঘষি হয়। এই কিস খুবই স্নেহপ্রবণ।
2. ফ্রেঞ্চ কিস:
প্যাশন ও রোমান্স বোঝানোর জন্য সবচেয়ে ভাল ফ্রেঞ্চ কিস। এই কিসে জিভের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
3. সিঙ্গল লিপ কিস:
এই কিসে একটা ঠোঁটের উপর একটা রেখে স্যান্ডউইচ করা হয়।
4. ইয়ারলোব কিস:
কান বা ইয়ারলোবে কিস। এই কিস সবচেয়ে রোম্যান্টিক ও অন্তরঙ্গ।
5. বাটারফ্লাই কিস:
চুমুর সময় খুব কাছাকাছি চলে এলে পরস্পরের চোখের পাতা একে অপরকে ছুঁয়ে থাকে। একে বলা হয় বাটারফ্লাই কিস। এমন চুমু খেয়ে সঙ্গীকে মোহাচ্ছন্ন করে দিতে পারেন।
6. স্পাইডার ম্যান কিস:
স্পাইডার ম্যান ছবি দেখেছেন? ঠিক ধরেছেন। দুই সঙ্গীর মধ্যে একজন আপসাইড ডাউন থাকলে তাকে বলা স্পাইডার ম্যান কিস।
7. লঁজারি কিস:
অনেক ক্ষণ ধরে গভীর ভাবে লিপ টু লিপ কিসকে বলা হয় লঁজারি কিস।
8. লিজার্ড কিস:
হট কিস বলতে যা বোঝায় তা হল লিজার্ড কিস। পরস্পরের জিভের স্ট্রোকে এই কিস হয়ে ওঠে উপভোগ্য।
9. ভ্যাম্পায়ার কিস:
গলায় গভীর চুমু। সঙ্গে কামড়। অত্যন্ত অন্তরঙ্গ মুহূর্তের জন্য তোলা থাক ভ্যাম্পায়ার কিস।
10. এঞ্জেল কিস:
এই চুমুর অভিব্যক্তিতে গভীর ভালবাসা ও স্নেহ জড়িয়ে রয়েছে। চোখের পাতায় আলতো চুমু।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

চুম্বন দিবস (হ্যাপি কিস ডে)
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

চুম্বন দিবসে জানি কিস দিতে হয়,
কিস দিলে জাগে প্রেম কহিনু নিশ্চয়।
চুম্বন দিবসে তাই আজিকার দিনে,
প্রিয়া নাহি খুশি হয় চুম্বন বিহনে।

চুম্বন মহিমা তত্ব করিব বর্ণন,
সেই জানে পেয়েছে যে প্রিয়ার চুম্বন।
সবাকার রুচিভেদ বিবিধ প্রকার,
চুম্বন চুম্বক সম কহিলাম সার।

ট্রামে ট্রেনে বাসে কারে অথবা মেট্রোয়
সকলেই করে কিস দেখে লাগে ভয়।
বলিহারী এই দেশ! কি কহিব কথা?
পাশ্চাত্য অনুকরণ এদেশে সর্বথা।

তরুণ তরুণী যুবা, সবে কিস খায়,
লক্ষ্মণ লজ্জায় লিখে তার কবিতায়।

১৩ ফেব্রুয়ারি :হ্যাপি হাগ ডে

প্রিয় মানুষটির সঙ্গ আমরা কে না চাই? শৈশবে মা-বাবার আদর থেকে শুরু করে, বন্ধুর হাত ধরে বন্ধুত্ব এবং সবশেষে জীবন সঙ্গীটির হাত ধরা। আচ্ছা, যখন আমাদের মন খারাপ করে, কারো সঙ্গ পেতে ইচ্ছা করে তখন নিশ্চয়ই আমরা চাই প্রিয় মানুষটিকে জড়িয়ে ধরতে, একাকিত্ব ভাগাভাগি করতে। আপনার প্রিয় মানুষটির একাকিত্বটা সরিয়ে দিতে আপনি না হয় তাকে একটি আলিঙ্গন করলেন। অধিক ব্যস্ততায় মা-বাবাকে সময় দিতে পারছেন না, ফেব্রুয়ারির এই দিনটিতে শৈশবের স্মৃতিটা ফিরিয়ে আনুন আলিঙ্গনবদ্ধ হয়ে।

আলিঙ্গন দিবসের কবিতা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

আলিঙ্গন দিবসের কবিতা আমার,
হৃদয়ের ভালবাসা করে অঙ্গীকার,
পূণ্য শুভক্ষণে তাই কর আলিঙ্গন,
তরুণ তরুণী সাথে মধুর মিলন।

হৃদয়ের কথা বলে যুবক যুবতী,
একে আকর্ষিত হয় অপরের প্রতি।
ভালবাসা নাহি মানে কভুও বারণ,
উভয়েতে পরস্পর করে আলিঙ্গন।

ধন্য ধন্য বঙ্গদেশ! মহিমা অপার,
পাশ্চাত্য অনুকরণে এই অনাচার।
নির্লজ্জ বেহায়াপনা করে সতীনারী,
লজ্জাহীনা তরুণীর শিক্ষা বলিহারী।

আমার কলম কভু না শুনে বারণ,
কবিতায় মাগে কবি দেহ আলিঙ্গন।

১৪ ফেব্রুয়ারি : হ্যাপি ভালেন্টাইন ডে

একটি সপ্তাহজুড়ে অনুরাগের হরেক দিবস শেষে ভালোবাসার দেবীর আবির্ভাব হয়। বার্ষিক উত্সবের এই দিবসটি প্রেমিক-প্রেমিকার প্রেম অনুরাগের মাধ্যমে অথবা প্রিয় মানুষটির সঙ্গে উদযাপিত হয়। এই দিনে মানুষ তার ভালোবাসার মানুষকে ফুল, চিঠি, কার্ড, গহনা, টেডি প্রভৃতি উপহার প্রদান করে দিনটি উদযাপন করে থাকে।

বিশ্ব ভালবাসা দিবসে
ফাগুনের গান
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

এসেছে ফাগুন ধরেছে আগুন
আমার হৃদয় মাঝে,
প্রকৃতি আজিকে নব রং মেখে
সাজে অপরূপ সাজে।

অরুণ তপন রাঙায় ভুবন
ফুল ফুটে গাছে গাছে,
মাঝি খেয়া বায় তরণী ভিড়ায়
নদীর ঘাটের কাছে।

তরুর শাখায় বসি পাখি গায়
ফুলবনে ফুটে ফুল,
আসি অলিগণ করে গুঞ্জরণ
ধরেছে আম্র মুকুল।

বসন্ত প্রভাতে শুনি কান পেতে
কোকিলের কুহুতান,
বসন্ত এসেছে কমল ফুটেছে
শুনি ফাগুনের গান।

পলাশের শাখে শালিকেরা ডাকে
রং লাগে দেহ মনে,
বসন্ত এলো রে এ ধরার পরে
পলাশের বনে বনে।

যেদিকে তাকাই দেখিবারে পাই
নব নব কিশলয়,
ফাগুনের গানে সাগরের পানে
কল কল নদী বয়।

কিন্তু তবুও ভালবাসার বালুচরে বাঁধা ঘর অবিচারের ঝড় এসে চুর্ণ বিচুর্ণ করে দেয়। বাস্তবের কঠোর আঘাতে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় দুজনের ভালবাসা। কিন্তু ভালবাসার মৃত্যু নেই। তাই বিপন্ন ভালবাসা আজও দুই টুকরো হয়েও বেদনার বালুচরে বাঁধতে চায় খেলাঘর।

বুকের পাঁজরে বেদনাময় ঢেউগুলো যখন মনকে বারে বারে ব্যথা দেয়, তখনই ভালবাসা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। তাই ভারাক্রান্ত মন নিয়ে জীবন নদীর চরে কেঁদে বেড়ায় দু’ টুকরো ভালবাসা।

সমাপ্ত

প্রতি উত্তরের আশায় বা মন্তব্য পাওয়ার প্রত্যাশায় মন্তব্য করবেন না। কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ততার জন্য সময়ের অভাবে অথবা প্রয়োজনবোধে লেখক প্রতিটি মন্তব্যের প্রত্যুত্তর নাও দিতে পারেন।
সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
জয়গুরু!

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

9 thoughts on “ভালবাসা শুধু ভালবাসা দ্বিতীয় খণ্ড দশম পর্ব

  1. শেষের সতর্ক বার্তা পড়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে গেলো মি. লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী। ধন্যবাদ। :)

    1. আন্তরিক কৃতজ্ঞতায় আপনাকে বেঁধে রাখবো।
      হিম হতে দেবো না স্যার। সার্টেনলি নট।
      পবিত্রতম ঈদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন।
      সাথে থাকুন। পাশে রাখুন।
      জয়গুরু।

  2. নাহ্। এবার আর আপনার সঙ্গে নেই ভাই। ভালো থাকুন। 

    1. আন্তরিকতার সূতোয় বাঁধা হয়ে গেছে দুটি হৃদয়, দুটি মন।
      আপনি ছেড়ে দিতে চাইলেই কি মুক্তি পাবেন।
      বন্ধুত্বের বন্ধনে আপনাকে জড়িয়ে রাখবো।
      ভালো থাকবেন এটা প্রত্যাশা করি।
      জয়গুরু!

      1. পবিত্রতম ঈদের শুভেচ্ছা জানাই।

        ধন্যবাদ।

  3. দীর্ঘ পোস্টটি পড়তে ক্লান্তি এলো না। অসাধারণ হয়েছে ভাণ্ডারী দা। লিখার সাথে সাথে আপনার মন্তব্যের তড়িৎ উত্তরও মনে আশা জাগালো। অভিনন্দন সহ ভালোবাসা রইলো। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif 

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হয়েছি আর খুবই আনন্দিত হয়েছি কবিবর। “ভালবাসা শুধু ভালবাসা” প্রথম খণ্ড ও দ্বিতীয় খণ্ড দিয়ে ধারাবাহিকটা শেষ করলাম প্রিয়।

      নতুন একটি ধারাবাহিক গল্প লেখার বিষয় ও মতামত পেলে বাধিত হবো।
      খুব শীঘ্রই শুরু করবো। ইচ্ছা আছে। সহযোগিতা কাম্য।

      সাথে থাকবেন। মন্তব্য প্রদান করে অনুপ্রাণিত করবেন। আশা রাখি।
      পবিত্রতম ঈদ-উল ফিতর-এর শুভেচ্ছা গ্রহণ করুণ প্রিয়।
      জয়গুরু!

    1. মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ প্রিয় কবি বোন আমার। প্রতি উত্তর দিতে দেরি হাওয়ার জন্য দুঃখিত।

      আপনাদের সহযোগিতা, সহমর্মিতায় “ভালবাসা শুধু ভালবাসা” প্রথম খণ্ড ও দ্বিতীয় খণ্ড সমাপ্ত করা হলো। নতুন বিষয় নিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করার ইচ্ছা আছে।

      আপনাদের সুচিন্তিত মতামত ও পরামর্শ নিয়ে পথ চলা শুরু করতে চাই। সর্বতোভাবে সহায়তা করবেন আশা রাখি।
      সাথে থাকবেন। পাশে রাখবেন।

      জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।