মোহনীয় ঈদ সাজ

মোহনীয় ঈদ সাজ

সকালের সাজ: ঈদের সকালে হালকা সাজই ভালো লাগে। এ সময় বাইরে যেমন তীব্র রোদ তেমনি আবার হঠাৎ বৃষ্টির খেলা। তাই সকাল বেলার সাজের প্রসাধনীগুলো যেন ওয়াটারপ্রুফ ধাঁচের হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ফ্রেশ লুক মেকআপের ক্ষেত্রে ওয়াটার বেজড লিক্যুইড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। সাজটির সঙ্গে ডাস্ট পাউডারের ব্যবহারও যোগ করা যেতে পারে। পোশাকের ওপরই ঈদের সাজ সংশ্লিষ্ট। তাই পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে সাজটা যেন অন্যের রুচির সঙ্গে মিলে যায় সেদিকেও লক্ষ্য দিতে হবে। এখানে কাপড়ের সঙ্গে মিলিয়ে কালারফুল শ্যাডো, ম্যাচিং শ্যাডো বা নেইল পলিশ ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে গর্জিয়াস পোশাক পরলে সাজের ক্ষেত্রে মেকআপটিও যেন গর্জিয়াস হয়। পারফেক্ট লুকের ক্ষেত্রে চুলের সাজটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই পোশাক ও ত্বকের সাজের সঙ্গে মিল রেখেই নিজে নিজে চুলের পারফেক্ট লুকটা তুলে ধরুন। আগে থেকেই চুলে কোনো শেভ করিয়ে রাখলে বা আয়রন ব্যবহার করে চুল ছেড়েই রাখতে পারেন। চাইলে স্টাইলিশ বিভিন্ন হেয়ার ক্লিপ দিয়েও চুলকে সাজিয়ে নিতে পারেন। তবে গরমের অস্বস্তি থেকে বাঁচতে চুলের খোঁপার বিভিন্ন ঢং আপনাকে আরেকটু স্বস্তি জোগাতে পারে।

বিকেলের সাজ: বিকেলের সাজে শাড়ি পরতে চাইলে চুলে সুন্দর খোঁপা করে বেঁধে রাখতে পারেন। এজন্য ঈদের আগের দিন পার্লারে গিয়ে চুলের গ্লো-সেটিংসটা ঠিক করে নিতে পারেন। চুলটাকে চাইলে প্রিপেলিং করে বা কাঁটা দিয়েও বেঁধে দিতে পারেন। চুলের সাজে চাইলে শোভাবর্ধনকারী বিভিন্ন ফুল বা চুলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অর্নামেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। আর মেকআপের ক্ষেত্রে চাইলে ফাউন্ডেশন করে নিতে পারেন। সেই সঙ্গে ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক, চোখে কাজল, মাশকারা বা আইশ্যাডোও ব্যবহার করতে পারেন। পোশাক যদি খুব গর্জিয়াস হয় তাহলে সাজ ও গয়নার ব্যবহার কম আনলেই ভালো। এক্ষেত্রে কালো বা কোনো হালকা গয়নার ব্যবহারই আপনাকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলবে। আবার ঈদের সাজে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করতে চাইলে কাপড়ের সঙ্গে মিল রেখে চোখ বা ঠোঁটকে একটু গাঢ় করে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। আপনার সাজের যে কোনো একটি বিষয়কে চাইলে বেশি প্রাধান্য দিতে পারেন। এর বাইরেও মাশকারা বা আইব্রুটাকেও গাঢ় করে তুলতে পারেন। যদি লিপস্টিকটা গাঢ় হয় তবে চোখের সাজটা হালকা করলেই ভালো দেখাবে।

সন্ধ্যার সাজ: সন্ধ্যার সাজে চাইলে নিজেকে একটু বেশি গর্জিয়াস করে তোলা যেতে পারে। রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, সাধারণ সাজ এ সময় মানাবে না। আর সেজন্যই সাজটাকে বেশি লাইট ন্যাচারাল না করে একটা বেইজমেট নিতে পারেন। এক্ষেত্রে ব্লাশানটা একটু বাড়িয়ে, চোখের কাজলটাকে একটু গাঢ় করে নেয়া যেতে পারে। গর্জিয়াস সাজে শ্যাডো ব্যবহার করতে চাইলে চোখে বিশেষ কোনো রঙের শ্যাডো ব্যবহার করা যেতে পারে। সাজের পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য দিতে চাইলে চোখে তিন চার রঙা লেয়ার কাজল ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি আপনাকে অন্যদের থেকে ব্যতিক্রম করে রাখবে। এর পাশাপাশি চোখে মাশকারা, আইলাশ বা শেওলাশ ব্যবহার করা যেতে পারে। চুলের সাজের ক্ষেত্রে চুল পাইল করে রাখতে পারেন। আবার চাইলে কিছু চুল সামনে নিয়ে টুইস্ট করেও আটকে রাখতে পারেন। চুলের এমন সাজে নিজেকে একটু গর্জিয়াসই মনে হবে। এর সঙ্গে রাতের সাজ আয়োজনের পোশাকটি হতে পারে কালো রঙের বা অন্য কোনো উজ্জ্বল রঙের পোশাক।

রাতের সাজ: রাতের সাজের জন্য বেছে নিতে পারেন সিল্ক, ঢাকাই জামদানি, কাতান, সাউথ ইন্ডিয়ান সিল্ক, পাড় বসানো কোটা ইত্যাদি। সিল্কের ওপর রেশমি সুতা আর কাঁচের কাজ করা ময়ূরকণ্ঠী অথবা অফ হোয়াইট বা বেস কালারের সিল্ক শাড়িতে ব্রাশ প্রিন্ট অথবা জরিপাড়, বড় আঁচলের বুটিকদার কাতান আপনার সাজে আনবে আভিজাত্য। গয়নাও হবে সোনার অথবা জয়পুরী ইমিটেশন। বেছে নিন অভিজাত ডিজাইনের। অল্প বয়সীদের জন্য হালকা গয়নাও ভালো লাগবে। সেটা নির্ভর করবে আপনার রুচি ও বয়সের ওপর। দামি শাড়ি গয়নার সঙ্গে প্রসাধনও হওয়া চাই নিখুঁত। এ বিষয়ে রাহিমা সুলতানা বলেন, প্রথমে মুখ পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইচার লাগিয়ে নিন। সন্ধ্যায় সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই। এ সময় মুখে লাগাতে পারেন তরল মেকআপ। অবশ্যই ত্বকের সঙ্গে মিলিয়ে এটা লাগানোর সময় গলা ও কানের দিকেও নজর দিন। তারপর গালের ঠিক উপরিভাগে বুলিয়ে দিন ব্লাশার, তাও ত্বক ও সাজের সঙ্গে মিলিয়ে।

চোখের পাতায় তিন রঙের শেড বা একটি কালারও ব্যবহার করতে পারেন। উৎসবে শাড়ির রঙের সঙ্গে ম্যাচ করে লাগালেই সুন্দর লাগবে। এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে যাতে তিনটি রং ভালোভাবে মিশে যায়। ভ্রƒর হাড়ের ওপর ব্যবহার করতে পারেন হোয়াইট সিলভার, পার্ল অথবা গোল্ডেন কালার। যাতে ভ্রুর হাড়টি উঁচু দেখায়। আইশ্যাডো শুধু চোখের ওপরের পাতায় লাগান। যদি চান তাহলে চোখের পাতার কোণ পর্যন্ত আইশ্যাডো লাগাতে পারেন। এতে আপনার সাজে আসবে উৎসবের জমকালো চমক। আইশ্যাডো লাগানোর পর আই লাইনারের পালা। চোখের স্বাভাবিক রেখা ধরেই লাগাতে পারেন গাঢ় বাদামি রঙের আই পেনসিলের রেখা। চোখের কোলে সরু করলেও চোখের কোণের দিকে সামান্য মোটা করে দিন। চোখের পাতায় ঘন করে মাশকারা লাগান। লিপস্টিক লাগানোর আগে লিপ ব্রাশ অথবা লিপ পেনসিল দিয়ে ঠোঁটের চারধার আউটলাইন আঁকুন। পোশাকের সঙ্গে মানানসই লিপস্টিক লাগান। রাতে সাজের প্রধান অঙ্গ কপালের টিপ। আপনার মুখের আদল অনুযায়ী কপালে টিপ এঁকে নিন। আজকাল কন্ট্রাস্ট টিপ চলছে। আপনিও তাই দিতে পারেন।

6 thoughts on “মোহনীয় ঈদ সাজ

  1. ওয়াও !! এখানে তো দেখছি বিশাল আয়োজন। টাইমলি এসব করতে থাকলে তো বিপদ। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Paper.gif.gif

  2. টিপস্ গুলোন কপি করে রাখলাম প্রিয় দিদি ভাই। সময়ে ঠিকঠাক কাজে লেগে যাবে। আপনার জন্য একরাশ শুভকামনা। ঈদ মোবারক। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

  3. তাহারা ব্যস্তই থাকুক। আমাদের জন্য টিপস্ নাই। অতএব আমরা রিল্যাক্স। Smile 

  4. আহা মেয়েদেরকে কত পরিশ্রম করতে হবে বা হয়। শুভেচ্ছা জানবেন। 

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।