শান্তির ঘুম শ্মশানঘাটে

শান্তির ঘুম শ্মশানঘাটে
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শ্মশানে আছে শান্তি রে মন
কাঁদিস নারে মন,
যাবি যেদিন শ্মশান ঘাটে
কাঁদবে আপনজন।

কপালে চন্দনের ফোঁটা আর
নয়নে দেবে তুলসীপাতা,
আত্মীয় স্বজন কাঁদবে সেদিন
কাঁদবে রে তোর মাতা।

যে ঘুম আসে না পাখার হাওয়ায়
নরম বিছানায় শুয়ে,
আসে নাকো ঘুম রাতের বেলায়
ঘুমের ওষুধ খেয়ে।

শান্তির ঘুম ঘুমোবে যেদিন
সে ঘুম তো ভাঙবে না।
বৃক্ষ খচিত পালঙ্ক তোমার
মৃত্যুর পরে থাকবে না।

শ্মশানে হবে শেষ বিছানা
সে ঘুম কভু ভাঙবে না।
লক্ষ্মণ বলে শোন রে মানুষ
শ্মশান শেষের ঠিকানা।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

12 thoughts on “শান্তির ঘুম শ্মশানঘাটে

  1. শ্মশানে হবে শেষ বিছানা সে ঘুম কভু ভাঙবে না।
    লক্ষ্মণ বলে শোন রে মানুষ শ্মশান শেষের ঠিকানা। চিরন্তন সত্য। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ কবিবর।
      মৃত্যু কাউকে ক্ষমা করে না।

      মানুষের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী জেনেও মানুষ মরতে ভয় পায়।
      সেটা এক প্রকার মায়া। মায়া ত্যাগ করতে পারলেই মোক্ষলাভ হয়।
      সাথে থাকবেন প্রিয় কবিবর। জয়গুরু!

  2. সমাধি হচ্ছে মানব জীবনের পরিসমাপ্তি। তারপর অনন্তকাল ….

    1. সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।

      জীবনের শেষ পরিণতি মৃত্যু। মৃত্যু নিয়তির মতো ক্ষমাহীন।
      মৃত্যু ভয়াল, ভয়ংকর, আর কান্না দিয়ে এর প্রায়শ্চিত্ত। মৃত্যু কাউকে ক্ষমা করে না।
      জীবনের শেষের দিন না আসা পর্যন্ত আসুন আমরা কিছু অসমাপ্ত কাজ করে যাই।

      সাথেই থাকবেন। প্রত্যাশা রইল। জয়গুরু।

  3. দেহ খাঁচা থেকে আত্মার মুক্তিই নিরবিচ্ছিন্ন মুক্তি কিনা জানিনা। তবে শুরু।  

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে বিমুগ্ধ হলাম কবিপ্রতীম।
      সুন্দর জীবনের শেষ পরিণাম মৃত্যু জেনেও আমরা সর্বদাই সাজসজ্জায় মেতে থাকি।
      শেষের দিনে কেউ সাথী হবে না। অবশ্যম্ভাবী মৃত্যু সবাইকে গ্রাস করবেই।
      তার করাল গ্রাস থেকে কারো মুক্তি নেই।

      সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

  4. কপালে চন্দনের ফোঁটা আর
    নয়নে দেবে তুলসীপাতা,
    আত্মীয় স্বজন কাঁদবে সেদিন
    কাঁদবে রে তোর মাতা। :(

    1. জীবন মানে সংগ্রাম, জীবন মৃ্ত্যুর কাছে পরাজিত সৈনিক।
      আমাদের এই অমূল্য জীবন মৃত্যুর কাছে মূল্যহীন।
      তাই জীবনের শেষ পরিণাম হল মৃত্যু।

      সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম কবি।
      সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

  5. মৃত্যুর কথা মনে পড়লে আমি ভয়ে কেঁপে উঠি। :(

    1. মা ম্রিয়স্য মা জহিঃ
      শক্যতে চেত্ মৃত্যুম অবলোপয়ঃ

      মরো না, মেরো না।
      যদি পারো মৃত্যুকে অবলুপ্ত করো।

      অমৃতের সন্তান মোরা। আমরা মরতে ভয় পাই না।
      মৃত্যুকে জয় করার নামই সুন্দর জীবন।
      সুন্দর জীবনের শেষ অমোঘ পরিণাম মৃত্যু।

      সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম কবি বোন আমার।
      সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

    1. দুই চোখে তুলসীর পাতা ছড়াবে গঙ্গার জল,

      অঙ্গে দেবে সাদা কাপড় কাঁদবে আত্মীয়সকল।

       

      জীবন সন্ধ্যা আসবে কবে কেহ নাহি জানে,

      নিষ্প্রাণ দেহটাকে সবে নিয়ে যাবে শ্মশানে।

       

      দু’দিনের তরে ভবে আসা মিছেই কর আশা

      শ্মশান ঘাটে শেষ বিছানায় কাঁদে ভালবাসা।

       

      সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম কবি।
      সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।