লেংচাতে লেংচাতে এল ধানি বুড়ি। বুড়ির সবগুলো চুল চলে গেছে, শরীর শিথিল। আজ দুপুরেও বউটা তাকে খেতে দেয় নাই। রাতে ছেলে আসলে তারে বিচার দিতে হবে।
আজকাল আর এরকম দুঃখে কষ্টে চোখে পানি আসে না। প্রথম প্রথম আসতো। ছেলে যখন বউ নিয়ে আসলো ঘরে। কি যে খুশী তার মন তখন। ছেলেতো একটাই। বস্তিতে দুই রুমের ঘর নিয়েছিল। এক রুমে ছেলে থাকবে বউ নিয়া আর এক রুমে সে। বউ এসে প্রথম প্রথম ভালোই ছিলো। কিন্তু একমাস পরেই তার আসলে চেহারা বের হলো। প্রথম প্রথম ছোটখাট বিষয় নিয়ে লাগলো। এরপর প্রায় রান্না বান্না করে নিজেদের রুমে নিয়ে জামাই বউ খেতে লাগল। বুড়ির মন খারাপ হতো।
বউ বলে যে নিজে লইয়া খান। আমি দিতাম ফারতাম না। এরপর এমন হয়েছে তার জন্য রান্নাও করে না। তাদের দুই জনের পরিমান রান্না করে। ছেলের কাছে বিচার দিলে প্রথম প্রথম বউকে বকতো। অমনি বউ না খেয়ে দেয়ে থাকতো। মুখ ঝামটা রাগ ইত্যাদি দেখাতো। এতেই ছেলে কাইত।
মা’কে বকা দেয়া বরং সহজ। মা তুমি দুইডা রাইনধা খাও না কেরে ? হের লগে ঝগড়া কর কেরে ? সে বৃদ্ধা, তার রান্না করতে ইচ্ছে করে না। এটা ছেলেকে বলতে যেয়েও বললো না। কিন্তু পেটের জ্বালা বড় জ্বালা। অতএব সে কষ্ট করে রান্না করতে গেলো। এভাবে কয়েকদিন যাবার পর দেখা গেল ভাত রান্না করার জন্য বউ চালও দেয় না। সেদিন চালের কথা বলাতে গেলে বউ তেড়ে আসলো। বুড়ি ভয়ই পেয়ে গেছিল।
আজ এসেছে পাশের ৪ তালা বাড়ির বাড়িওয়ালীর কাছে। বুড়ি ভাবতে লাগলো সে কিভাবে বলবে – মাগো ভাত খাই নাই। ভাত খাওয়ান চাইরটা।
না এভাবে না – সে চোখে পানি নিয়ে এসে বলবে – মাগো ভাত দেন চাইরটা। সারাদিন ভাত খাই নাই। ক্ষিধায় পেট জ্বলতাছে। আবার এভাবেও বলা যায় – আজ বউ এ ভাত দেয় নাই। চাইরটা ভাত খাওয়ান।
সে দরজায় নক করলো কিন্তু তার বুক ঢিপ ঢিপ করতে লাগলো।
কিভাবে বলবে সে – আবার তার কথা বিশ্বাস করবে কি না –
চিন্তায় পড়ে গেলো সে।
আহারে দুনিয়াটা এত কঠিন কেন ? চাইর টা ভাত খাইতে এত কষ্ট ! অভিমানে চোখে জল এল তার – কার উপর অভিমান কেন অভিমান সেটা সে বুঝলো না – চোখ মুছলো শাড়ির খুঁট দিয়ে।
দুঃখজনক অণুগল্প।
ভালো থাকবেন সাজিয়া।
জীবনের জন্য কখনও কখনও দুঃখ হয় আপা।
আসলেই। আমারও হয়।
ভালো থাকবেন
বৃদ্ধা মা এর জন্য মনটা আর্দ্র হয়ে গেলো আপা। আমার আজকের এফবি স্ট্যাটাস …
তোমার গণ্ডির সীমা তোমারই মত। দায়িত্ব. সমস্যা. অভিজ্ঞতা সবই সূক্ষ্ম; আমার অবস্থান- শংকিত বৃত্তের মত। আমাকে উপেক্ষা করা যায়। তোমাকে নয়। তুমি সর্বংসহা। আমি নই।
তুমি সর্বংসহা আমি নই -মায়েরা তো এমনি মুরুব্বী।।
ভালো থাকবেন
লিখাটি পড়ে সত্যই মুগ্ধ হলাম দিদি ভাই।
তুমি মুগ্ধ হয়েছ তাতে আমি আপ্লুত।ভালো থেকো
ধন্যবাদ।
মা এর জন্য ভালোবাসা থাকুক। শুভেচ্ছা কবি বোন নাজমুন নাহার।
এরকম ভালোবাসা সৌমিত্র?
ভালো থাকবে।
এই ভালোবাসা।
সুন্দর লেখেছেন কবি আপু
অনেক শুভেচ্ছা নিবেন——
ধন্যবাদ সরকার লিটন।
ভালো থাকবেন
সমাজের ঘটে যাওয়া একটি অসুস্থ অমানবিক চিত্র, মায়ের জন্য নিটোল চির অম্লান ভালোবাসা।
প্রিয় কবিকে শুভেচ্ছা, ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ যে পড়লেন।ভালো থাকবেন
খুব সুন্দর লিখেছেন আপা। পৃথিবীর সব অসহায় মায়েদের জন্য ভালবাসা রইল।