ঢাকা মানেই চরম মাত্রার নগরায়ন। শুধু বাংলাদেশ না, পৃথিবীর হাতে গোনা কয়েকটি মেগাসিটির (জনসংখ্যা যেখানে কোটির উপরে) একটি। হতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহর এই মুহুর্তে ঢাকা। দিগন্তজোড়া কনক্রিটের স্থাপনার মাঝেও বেশ কিছু গাছগাছালী আছে, কোন কোন রাস্তার পাশে সামান্য মাটিতে কি চমৎকার সবুজ সতেজ ঘাস হয় এখানে। বোঝা যায় জায়গাটা এখনো খুবই উর্বর সুফলা। এমন সবুজ সতেজ এলাকা আমার খুবই ভাল লাগে।
আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা উত্তরবঙ্গতে। সেখানেও এইরকম সবুজ কিছু কিছু এলাকা আছে, যেমন নাটোরের বনপাড়া। কিন্তু সেটা খুবই কম। রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জুরে চলছে মরুকরণ প্রকৃয়া। প্রায় সব সময় নদী পুকুর শুকিয়ে থাকে, টিউবয়েলে পানি উঠেনা। শীত ও খরায় অসহ্য ধুলা, রাস্তার পাশের গাছের পাতাগুলো সবুজ রঙ দেখাই যায়না পুরু ধুলার স্তুপের কারনে। খেলার মাঠে খরের মত ধুসর দুর্বাঘাস, গাছেপালাগুলোও কেমন প্রাণহীন রুক্ষ। শীতে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা, গরম কালে অসহ্য গরম। হ্যাঁ বর্ষায় অনেক বৃষ্টি হয়, তবে ঢাকার বর্ষা ভোলার মত না।
একবার সাভার যেতে যেতে গাবতলি বা আমিন বাজারের জলাভূমির উপরে দেখেছিলাম কি ঘনকালো মেঘ উঠেছে। নিচে জলাভূমি দূরে টিনের ঘরবাড়ি কিছু গাছপালা, ঝিরঝির বৃষ্টিতে সব ভিজে চিকচিক করছে। সেই সন্মোহনী সৌন্দর্যের বর্ণনা দেবার ক্ষমতা আমার নেই। নিরাশাবাদী আমার শুধু মনে হয়েছিল, একদিন দৃষ্টিও ঝাপসা হয়ে যাবে, এমন দৃশ্য সারাজীবন দেখতে পাবো না। মাস চারেক আগে আশুলিয়া থেকে উত্তরায় আসছিলাম বাসে করে। আবারো রাস্তার দুইপাশে বহু কিলোমিটার জুড়ে জলাভূমির উপরে মেঘ, তখন মনে হয়েছিল জীবনটা কত সুন্দর! আজ ভাবি দৃষ্টি ঝাপসা হোক স্মৃতিতে ঠিকই থাকবে ঢাকার সৌন্দর্য।
বছর দশেক আগে এক বড় ভাইয়ের কাছে একটা ঘটনা শুনেছিলাম। কোন একটা এলাকার পানি ভাল, লোকজন স্বচ্ছল, ফসল হয় খুব ভাল। জনশ্রুতি আছে কোন একজন ধর্মপ্রচারক সুফি মুগ্ধ হয়ে প্রার্থনা করেছিলেন সেই এলাকার জন্য। নারায়ণগঞ্জেও কোন এক এলাকায় একজন অলিকে নিয়ে এমন জনশ্রুতি শুনেছিলাম, এলাকায় নাকি কোন গরীব লোকই নাই। ঢাকা নিয়ে আমি এমন কোন জনশ্রুতি শুনিনি, তবে মাঝেমাঝে মনে হয় কোন সাধু হয়তো মুগ্ধ হয়ে বারবার প্রার্থনা করেছিলেন “এই জনপদই যেন কেন্দ্র হয় দেশটার”।
আসিফ আহমেদ
৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬
কবিতায় পাগল করা বিরহ আর শব্দের আহাজারি পড়তে পড়তে ক্লান্তিকর সময়ের মধ্যে আপনার পোস্ট ভীষণ ফুরফুরে এবং মন ভালো করে দেয়ার মতো লাগলো আমার কাছে। সৌন্দর্য্যকে খুঁজে নিতে হয় সুন্দর মন নিয়ে। অভিনন্দন ভাই।
আমি যা, পাঠকও বলা যায়না। লেখক তো বহু পরের কথা। উৎসাহ দেবার জন্য কৃতজ্ঞ।
চোখ সবারই থাকে। সাধারণ কিছু থেকে চোখকে প্রশান্তি দেওয়া বা পাওয়াটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। ঢাকার জন্য আমারও ভালোবাসা।
দেখার চোখ আমার নাই দাদা, সবচেয়ে হতাশাবাদী শ্রেণীর মানুষ আমি
যে কোন ভালো লাগাকে ভালো লাগার মতো করেই প্রকাশ করতে হয়। আপনি সার্থক।
এই লেখাটা এসেছিল মন থেকে। তবে আমি লেখক তো না, পাঠকও না। যা কথায় বলতাম, সেটা জাস্ট বর্ণমালায় লিখেছি। এভাবেই ভাবি নিজেকে।
ধন্যবাদ মুরুব্বী আজাদ ভাই
লিখতে থাকুন। পাঠক হচ্ছে লেখক হবার পূর্বশর্ত।
ঋতুর পরিবর্তনে আমার ঢাকাকে কখনও কখনও ভীষণ ভালো লাগে।
বিশেষত বর্ষায়, এখানে শীত এবং গরমও অনেক কম রাজশাহীর তুলনায়। রাজশাহী হলে বুঝতেন, আবহাওয়া কি জিনিশ
মাছের মতো নির্বিকার চোখ নয়; সৌন্দর্য্যকে উপভোগ করতে চোখের মতো চোখ থাকা চাই। অভিনন্দন কবি দা।
আমাকে কবি বললেন? আমি তো কবিতাই বুঝিনা, কবি সমাজ আপনাকে ক্ষমা করবে তো?
কখনও কখনও আমিও আপনার মতো ঢেকে থাকা আমার প্রিয় ঢাকা দেখি।
দুইদিন পরে এলেন, ধুর। অসুস্থ নাকি আপা?
এখনও অসুস্থ্য ভাই।
অসুস্থ মানে? আমি আছি কি করতে? দোয়া করে দিবো, সব সেরে যাবে। কি ধরনের অসুস্থতা বলেন তো আপা।
ভালো লিখেছেন আসিফ আহমেদ ভাই।
অনেক ধন্যবাদ সাজিয়া আপা