একসময় আমরা সকলে বাটন মোবাইলে GPRS সংযোগে ইন্টারনেট ব্যবহার করিয়াছিলাম। তখনকার দিনে এখনকার মতন দ্রুতগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট না থাকিলেও, যাহা ছিল তাহাতেই অগণিত মানুষের ইন্টারনেটের কাজ চলিয়াছিল। মোবাইলে টাকা রিচার্জ করিয়া যার যার ইচ্ছামত ইন্টারনেট চালাইত। ইন্টারনেটের উপর কোনপ্রকার শর্তাবলি বা মেয়াদ ছিল না। নেটওয়ার্ক কোম্পানির ব্যাপারেও কাঁহারো কোনপ্রকার অভিযোগ ছিল না বলিয়া মনে হয়। তখন মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যাও ছিল সীমিত। মোবাইল ব্যবহারকারীদের মধ্যে যাঁহারা ইন্টারনেট বুঝিত, তাঁহারাই ইন্টারনেট চালাইত। বর্তমানে যেই হারে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাড়িয়াছে, সেই হারে নেটওয়ার্ক কোম্পানিরও জোচ্চুরি বাটপারি অনেকাংশে বাড়িয়া গিয়াছে। নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলি মনে করিতেছে, “বর্তমানে এই বঙ্গদেশের অগণিত আদম সন্তান যখন ইন্টারনেটে আসক্ত হইয়া পড়িয়াছে। এই সুযোগ আমাদের কাজে লাগাইতে হইবে।”
সেজন্য তাঁহারা দ্রুতগতি সম্পন্ন 4G সেবা প্রধানের নামে নানারকম ফন্দি-ফিকির করিয়া আসিতেছে। কোম্পানিগুলি দ্রুতগতিতে বাংলার জনগণকে ফকির করিবার চিন্তাভাবনা করিয়া, 4G সেবার সাথে তাঁহাদের খেয়ালখুশি মতো মনগড়া মেয়াদ বাঁধিয়া দিয়েছে। যাহা এই বঙ্গদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য মরার উপর খরার ঘা হইয়া দাঁড়াইয়াছে। তাহার পরেও বহু মানুষ ইন্টারনেটে নেশাগ্রস্ত হইয়া কোম্পানিগুলির বাঁধিয়া দেওয়া কঠিন শর্তাবলি মানিয়া লইয়া ইন্টারনেট ব্যবহার করিতেছে। এর ফলে নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলি দ্রুতগতিতে দৈনিক কোটি কোটি টাকা হাতিয়া লইয়া যাইতেছে। আর বাংলার জনগণ ইন্টারনেট ব্যবহার করিয়া দ্রুতগতিতে নিজেদের পকেটের টাকা উড়াইয়া দিতেছে।
এর কারণ হইয়াছে যে, নতুন একখান মোবাইল ফোন বাজার হইতে খরিদ করিয়া প্রথমেই ইন্টারনেট ট্যাবলেট গিলিয়া ফেলিতেছে। তাহার পর আস্তে আস্তে ফেসবুক সহ অনলাইনভিত্তিক সাইটগুলিতে আনাগোনা শুরু করিয়া, ইন্টারনেটের মজা পাইয়া ইন্টারনেটে আসক্ত হইয়া পড়িতেছে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর এইরূপ অবস্থা টের পাইয়া নেটওয়ার্ক কোম্পানি 4G’র উপর কঠিন মেয়াদের শর্তাবলী বাঁধিয়া দিতেছে। ফলে অগণিত মানুষের কষ্টার্জিত টাকা গচ্ছা যাইতেছে। আর নেটওয়ার্ক কোম্পানিও ইচ্ছামত দেশের অগণিত মানুষের পকেটের টাকা চুরি বাটপারি করিয়া লইয়া যাইতেছে। ইহা মনে হইতেছে বাংলার কেহ টেরও পাইতেছে না। কোম্পানিগুলি দৈনিক একজন মোবাইল ব্যবহারকারী হইতে যদি এক টাকা করিয়া চুরি করে, তাহা হইলে বাংলার অগণিত মোবাইল ব্যবহারকারী হইতে কত টাকা নিতে পারে? তাহা আর হিসাব বাহির করিয়া দেখাইয়া দেবার দরকার আছে বলিয়া মনে হইতাছে না। এই হিসাব বাংলার জনগণ মুখে মুখে যোগবিয়োগ করিয়া বলিয়া দিতে পারিবে নিশ্চয়।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যখন সকল প্রতীক্ষার অবসান ঘটাইয়া দেশে চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক 4G চালু হইয়াছিল। তখন মানুষ আনন্দে টগবগাইয়া উঠিয়াছিল। মানুষ ভাবিয়াছিল স্বল্পমূল্যে দ্রুতগতির ইন্টারনেট হাসিয়া খেলিয়া চালাইতে পারিবে। কিন্তু না, তাহা আর হয় নাই। জনগণের মনের আশা মনেই থাকিয়া গেল। বর্তমানে 4G ইন্টারনেটের মূল্য সীমিত থাকিলেও, কোম্পানিগুলির বিশেষ মেয়াদের কারণে বাংলার জনগণ মনে আনন্দ নিয়া ইন্টারনেট ব্যবহার করিতে পারিতেছে না। 4G প্যাকেটের (প্যাকেজ) উপর বাঁধিয়া দেওয়া মেয়াদের কারণে এর দাম হইয়া যাইতেছে আকাশছোঁয়া।
নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলি মিষ্টির প্যাকেটের (প্যাকেজ) মতন 4G প্যাকেটের ভিতরে চায়না মুলা ঢুকাইয়া দিয়া, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে বিশেষ মেয়াদে 4G বিক্রি করিতেছে। ব্যবহারকারীদের সান্তনা দিবার জন্য সাথে দিতেছে দুই চার মিনিট ফ্রি টকটাইম। বাংলার জনগণ এমনিতেই ফাও খাইতে বেশি ভালোবাসে। ফাও খাইলে যে মুখে ঘাও হইয়া যায়, তাহাও বাংলার জনগণ জানে। তাহার পরও বাংলার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা দুই চার মিনিট ফ্রি টক-টাইম পাইয়া তাঁহাদের বিশেষ প্যাকেটগুলি (প্যাকেজ) খরিদ করিয়া প্রতিদিনই ধরা খাইতেছে। তাহা 4G’র উপর তাঁহাদের বাঁধিয়া দেওয়া মেয়াদের দিকে তাকাইলেই অনুমান করা যায়। ইহা একরকম জনগণের সাথে প্রতারণার সামিল বলিয়া ধরিয়া নেওয়া যায়। বাংলাদেশে 4G সেবা দানে নিয়োজিত নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলির মেয়াদের কিছু নমুনা নিচে আঙুল দিয়া দেখাইয়া দেওয়া হইল।
৫জিবি বাংলালিংক 4G ইন্টারনেট, মেয়াদ হইল ৭দিন। দাম হইল মাত্র ৮৯টাকা। এই ৭দিন মেয়াদের মধ্যে একজন দক্ষ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কিছুতেই ৫জিবি ইন্টারনেট শেষ করিতে পারিবে না। পারেও না। এতে অর্ধেকের চাইতেও বেশি 4G খরিদ্দারের গচ্চা যায়। ইন্টারনেট কোম্পানিও জানে যে, “৫জিবি ইন্টারনেট খরিদ করিয়া কিছুতেই ইহা ৭দিনে শেষ করিতে পারিবে না। ৭দিনে ইচ্ছামত চালাইয়া যাহা শেষ করিতে পারে করুক, আর যাহা থাকিয়া যাইবে তাহা তো আমাদেরই।” সেজন্যই তাঁহাদের এইরকম আকাশচুম্বী অপার! যাহা গাধাকে মুলা দেখাইবার মতন কাণ্ড!
ছবিটি এলাকায় থাকা একটি ফোন-ফ্যাক্স-এর দোকান থেকে তোলা।
আবার ২জিবি 4G ইন্টারনেট, মেয়াদ হইল ৩দিন। দাম মাত্র ৪৮টাকা। এই ৩দিন মেয়াদকালে খরিদদার অর্ধেক ব্যবহার করিতে পারিবে বলিয়া মনে হয়। বাদবাকি ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক কোম্পানির তহবিলেই জমা থাকিয়া যায়। ৭২ঘণ্টা মেয়াদ শেষ হইবার পরপরই মেগাবাইট ব্যালেন্স হইয়া যায় শূন্য।
আবার ১জিবি ইন্টারনেট, মেয়াদ ৭ দিন। এই প্যাকেটখানার দাম দ্বিগুণ, ৮৬টাকা । তাঁহারা জানে যে, এই ১জিবি ইন্টারনেট ৭দিনে খরিদ্দারের কিছুতেই হইবে না। খরিদদারকে আবার ইন্টারনেট খরিদ করিতে হইবে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর পকেটে টাকা না থাকিলেও ধারকর্জ করিয়া ইন্টারনেট প্যাকেট (প্যাকেজ) খরিদ করিবে। যেহেতু ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ইন্টারনেট নেশায় আসক্ত হইয়া পড়িয়াছে।
আবার ৩৫০ মেগাবাইট ইন্টারনেট, মেয়াদ ৩দিন। দাম ৩১টাকা। এইখানেও একই অবস্থা দাঁড়াইয়াছে। যেইখানে ১জিবিতে ব্যবহারকারীর ৭দিন চলা যাইবে না, সেইখানে ৩দিনে ৩৫০ মেগাবাইট ইন্টারনেটে কী হইবে? ৩৫০ মেগাবাইট ইন্টারনেট একদিনেই শেষ করিয়া, আবার ইন্টারনেট খরিদ করিতে হইবে। তাঁহাদের চালাকি কে বুঝিতে পারে!
তাঁহাদের এমুন জোচ্চুরি চালাকি অল্পকিছু আদম সন্তান ছাড়া আর কাহারও নাথায় ঢুকিতেছে না বিধায়, তাঁহারা তাঁহাদের ইচ্ছামত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সাথে ভানুমতীর খেইল দেখাইয়া যাইতেছে। দেখা যাইতেছে যে, গ্রাহক যেকোনো মেয়াদে 4G খরিদ করিবার পর মেয়াদ শেষে অর্ধেকের বেশি 4G থাকিয়া যায়। এইগুলি মেয়াদ শেষ হইবার সাথে সাথে কোম্পানি খরিদ্দারের কষ্টের টাকা দিয়া খরিদ করা 4G ব্যালেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে কর্তন করিয়া লইয়া যায়।
বাংলায় একখান কথা প্রচলিত আছে। তাহা হইল, “ঠনঠনাঠন ঘণ্টা, তোমরা পাইবা ধোনটা।” ‘সব আমার, সব আমার।’ কথাটার মানে হইলো, হিন্দুদের মন্দিরে পুরোহিত যখন পূজা করিয়া থাকেন। তখন দেবমূর্তির সামনে অনেককিছুই দেওয়া হইয়া থাকে। কাপড়-চোপড়, ফল-ফলারি, তামা-কাসা সহ আরও অনেককিছু। পুরোহিত পূজা করিবার সময় একহাতে পঞ্চপ্রদীপ, আরেক হাতে ঠনঠনাঠন ঘণ্টা বাজায়। পূজা শেষ হইবার পর সব ভক্তগণকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইয়া, দেবমূর্তির সামনে থাকা সবকিছু পুরোহিত নিয়া যায়। ইন্টারনেট কোম্পানিরাও পুরোহিতদের মতন আমাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইয়া যাইতেছে।
এখন কথা হইল গিয়া, এতো দামের 4G টাকা দিয়া খরিদ করিয়া তাঁহাদের মেয়াদে শেষ করিতে হইবে কেন? আমার টাকা দিয়া খরিদ করা উচ্চমূল্যের 4G আমার হিসাব মতন আমি ব্যবহার করিতে পারিব না কেন? মোবাইল সিমে টাকা ঢুকাইলে যেইভাবে মেয়াদ বিহীনভাবে চলে, সেইভাবে হইবে না কেন? নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলির এহেন কর্মকাণ্ডে বাংলার অগণিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারী চুপ করে বসে আছে কেন? আসলে মনে হইতেছে বাংলার অগণিত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলি জিম্মি করিয়া ফেলিয়াছে।
শুনিয়াছি বর্তমানে সরকার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করিয়াছে। ইহাতে শহুরে থাকা মানুষের মাথা গরম হইয়া গিয়াছে। রাজপথে মিছল মিটিং করিবার সিদ্ধান্তেও করিয়া ফেলিয়াছে। গ্যাস শুধু শহুরে মানুষেই ব্যবহার করিয়া থাকে। চুলা প্রতি অল্পকিছু টাকা বাড়িয়াছে বলে মনে হইতেছে। তাও নিবে মাসে একবার করিয়া। আর ইন্টারনেট কোম্পানিগুলি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা কাড়িয়া নিতেছে প্রতিদিনই। ইন্টারনেট এখন গ্রাম শহরের সকলেই ব্যবহার করে। অথচ এই ইন্টারনেট কোম্পানিদের চুরি বাটপারির বিষয়টি নিয়া কেউ প্রতিবাদ করিতেছে না। এই কারণেই তাঁহাদের চুরি বাটপারি দিন দিন আরও বাড়িয়া যাইতেছে।
একজন চোর দশ টাকা চুরি করিয়া ধরা খাইলে, ওই চোর মাইর খাইয়া দশদিন হাসপাতালে শুইয়া থাকিতে হয়। আর দেশের ইন্টারনেট সেবা দানকারী কোম্পানিগুলি 4G প্যাকেটের(প্যাকেজ) উপর তাঁহাদের খুশিমত মেয়াদ বসাইয়া দিয়া বাংলার জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি বাটপারি করিয়া ছিনিয়া লইয়া যাইতেছে। তাহাতে বাংলার কাহারো কোনও অভিযোগ নাই, প্রতিবাদও নাই। সত্যি আমরা দিন দিন কেমন যেন ইন্টারনেট নেশায় আসক্ত হইয়া ইন্টারনেট কোম্পানিদের কাছে জিম্মি হইয়া যাইতেছি। এই সবের প্রতিকার কিছুই দেখিতেছি না। শুধু দেখিতে পাই, 4G’র অপারেটরের সাথে বাঁধিয়া দেওয়া মেয়াদের বাহার। 4G খরিদ করিব নিজের টাকায়। ব্যবহার করিব নিজের ইচ্ছায়। 4G শেষ করিবার ইচ্ছাও থাকিবে ব্যবহারকারীর নিজের। কিন্তু না, তাহা কিছুতেই হইবে না! ইন্টারনেট ব্যবহার করিতে হইলে ইন্টারনেট কোম্পানিদের কথামত ব্যবহার করিতে হইবে। কিন্তু কেন-ই-বা করিতে হইবে? তাহা হইলে কি সত্যি ইন্টারনেট কোম্পানিগুলি আমাদের জিম্মি করিয়া ফেলিয়াছে? প্রশ্ন শুধু থাকিয়া যায়!
সাধু ভাষার মিশ্রণে আলোচ্য কাহিনী কদাচিৎ হইলেও পাঠক এবং ভোক্তা মনে অত্যাচারিত শব্দটির সাথে দুঃখ কষ্টবোধ জাগাইয়া তুলিতে পারিবে বটে, তবে তাহার আয়ুষ্কাল হইবে আধাঘন্টা। নাই মেগাবাইটের অস্বস্তি তাহাকে আধাঘন্টার মধ্যেই জাগরুক করিয়া তুলিবে। ইহার নাম নেশা। ব্রাউজ নেশায় পাগল ব্যবহারকারীরা কি হইলো আর কত ক্ষতি হইলো সেই নিঃশ্বাস নিতে না পারার যন্ত্রণায় ছটফট করিতে থাকিবে। যেমন মৎসের জল। বিড়িখোরের বিড়িহীন অবস্থা। হতাশা আর হতাশা।
এই অফার গুলোকে আমি রমজান মাসের বড় বড় সব হোটেল মালিকদের বুফে/বাফেট অফারের সাথে তুলনা করিতে চাই। যেখানে থাকে শতাধিক পদের খাদ্যিখানা। প্যাকেজ মাথাপিছু ১৩০০ টাকায় সারচার্য, সার্ভিস চার্জ, সরকারী শুল্ক, অনির্ধারিত শুল্ক, আরামদায়ক ব্যবস্থাপনার শুল্ক, শুল্কের শুল্ক সব মিলাইয়া বিল পরিশোধ করে একজন পাবলিক খাইতে পারে ৫/৬ শত টাকার খাবার। অসাধারণ বাণিজ্য হে মহাশয়।
শংকিত হইবার কারণ নাই কারণ এখনও একটি পরিবারে ৫শ টাকার ওয়াইফাই নামের আনলিমিটেড প্রযুক্তিতে বাড়ির দশজনের ব্যবস্থা হইয়া যায়। আওতায় না থাকিলে ফ্রি ফেসবুকের কাজও চালানো যায়। সুতরাং নো দুঃখ নো টেনশন। হিপ হিপ চীয়ার্স।
লুটেরা ফাঁকিবাজদের সাথে থাকুন। দেশের টেলিটককে দূর্লভ করিয়া দেশের উন্নয়নে শতাব্দীর স্বাক্ষর হইয়া নিজেকে অমর রাখুন। জয় বাংলাদেশ। জয় হো।
দুঃখ হয় তখন, যখন দেখি দেশীয় পণ্য বর্জন করে বিদেশি পণ্য খুঁজে বেড়ায়। আমরা ঠকছি, আমদের নিজের কাছেই। টেলিটক নিজেদের নেটওয়ার্ক। অথচ দেশীয় টেলিটক খুব কম মানুষেই ব্যবহার করে। সেই কারণেই বহুজাতিক নেটওয়ার্ক কোম্পানিগুলো আমাদের ঠকিয়ে দিব্বি ব্যবসা করে যাচ্ছে। আমরা হ্ব্রে যাচ্ছি আমাদের নিজের কাছে।
মন্তব্যের জন্য শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা সহ শুভকামনা সবসময়।
মোবাইল অপারেটরদের কাছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে পুরো জাতি। এটা যেমন সত্য তেমন সত্য আমাদের লালসা। আমরা ওদের পাতা ফাঁদে পা দেই।
ঠিক বলেছেন শ্রদ্ধেয় সুমন দাদা। আমরা দিন দিন তাঁদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি। আর আমাদের দেশীয় নেটওয়ার্ক টেলিটকও ওদের চুরি বাটপারির সাথে একাত্মা পোষণ করে চলছে।
এই ভেজালের মধ্যে আমরাও বহুকাল পচেছি নিতাই বাবু। এখন শুধু অফার আর অফার। কে কার চেয়ে কমমূল্যে দেবে তার প্রতিযোগিতা। আমাদের এখানে ইন্টারনেটের সু্বিধার নাম পাওয়ার। বহু কোম্পানীর পাওয়ার অফারে চোখে অন্ধকার দেখি।
ঐচ্ছিক ব্যবহারের অভাবনীয় সুযোগ। মূল্যও তুলনামূলক কম। জয়তু ভারত।
সত্যি দাদা, জয়তু ভারত। আমার প্রিয় বন্ধুটির কাছে আপনাদের দেশীয় নেটওয়ার্ক কোম্পানিগোলোর আন্তরিকতার গল্প শুনি। তারপর আমাদের দেশের বহুজাতিক নেটওয়ার্ক সংস্থাগুলো কর্মকাণ্ড ফলো করি। লজ্জা লাগে নিজেকে নিয়ে ভাবতে। পার্শ্ববর্তী দেশে একরকম, আমার আমাদের দেশে আরেকরকম অবস্থা। বর্তমানে ইন্টারনেট প্যাকেজের কথা ভাবতে গেলে আগেই শরীর শিউরে ওঠে দাদা।
ব্যবহার করিব নিজের ইচ্ছায়। আজ পর্যন্ত কি বাংলাদেশের সরকার জনমানুষের ইচ্ছের কোন মূল্য দিয়েছে? মানুষ কি সোচ্চার হয়েছে? রেগুলারিটি কমিশনকে এড্রেস করেছে? নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করার মতো কোন প্রতীকী কাজ করেছে? নামে স্বাধীন, স্বাধীনতা কি এসেছে?
নাকি ঘরে বসে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করে অপারেটরের বিরুদ্ধে বিড়াল মেরে চলেছে?
জনগণের ইচ্ছার প্রতিফল রাষ্ট্র কর্তৃক কখনো ঘটেনি দিদি। রাষ্ট্র এখন উন্নয়নের মাঠে নেমে উন্নয়নের তেলেসমাতি খেলা নিয়ে ব্যস্ত। এসব দেখার দায়দায়িত্ব মন্ত্রণালয়গুলোর উপর ন্যস্ত, মন্ত্রণালয়ের সকল ঊর্ধ্বতন কর্তারা ব্যস্ত তাঁদের আখের গোছাতে। এই সুযোগের দেশে মোবাইল প্রোভাইডার কোম্পানিগুলো তাঁদের ইচ্ছেমত দেশের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাঁরা খেলার মাঠ সাজায়, প্লেয়ারদের জার্সি দান করে দেশের মানুষকে দাতাগিরি দেখায়। মরছি এখন আমরা আমজনতা। ভোট নেওয়ার আগে দেখি নেতাদের চেহারা। ভোটাভুটি শেষ হয়ে গেলে, নেতারাও গাঢাকা দিয়ে চোরদের সাথে হাত মেলায়। আমাদের কষ্ট দেখারমত কেউ নেই দিদি। ন্যায্যমূল্যে 4G সেবা এই দুনিয়ার কোনও দেশে পেয়ে থাকে, সেসব দেশের মধ্যে আপনাদের ভারত হলো অন্যতম। শুনেছি আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কাছে। ইন্টারনেটের জন্য জয়তু ভারত। জয়তু আমার রিয়া দিদি।
দুঃখ লইবেন না। বঙ্গদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ইন্টারনেট ব্যবহার করিতে না পারিলে দেশের অর্থনীতি ভাঙ্গিয়া পড়িতো। দেশকে ভালোবাসুন। দেশের জন্য মানিব্যাগ খালি করিয়া জয়ধ্বনী তুলুন। ভুলিবেন না, দেশের মঙ্গলে জাতির মঙ্গল।
দেশের জন্য সবসময়ই মঙ্গল কামানা করি শ্রদ্ধেয় দাদা। আবার চাই, জনগণের টাকা বিদেশিরা চুরি বাটপারি করে নিক! এতেই মনে হয় দেশ ও দশের মঙ্গল!
কোথায় যেন পড়েছিলাম দেশের মোবাইল অপারেটররা ৩০ পয়সা হারে প্রতি মেগাবাইট কেনে। ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা সেটাকে ১০০% বাড়িয়ে ব্যবহারকারীদের কাছে বিক্রয় করে। সরকার চুপচাপ নির্বিকার।
এখানে সবচেয়ে বড় দুঃখজনক ম্যাটার হচ্ছে মেয়াদ। এই ব্যাপারে আজাদ ভাই বহুলাংশে সত্য বলেছেন। পরিস্থিতি এমনটাই।
আমার জানামতে মোবাইল অপারেটররা সরকার থেকে তিনমাদিক নাকি বাৎসরিক মেয়াদের 4G ক্রয় করে থাকে। আর ওরা আমাদের বেঁধে দিচ্ছে ঘণ্টায়। স্ববাদের নেট যা ব্যবহার করে যায়, তাও ঠিকমত গতি পাওয়া যায় না। আর যা থেকে যায় সবই গ্রাহকের গচ্ছা যায়। যার এসব তদারকির দায়িত্বে থাকে, তাঁরা তাদের আখের গোছায়। এই হলো আমার সোনার বাংলাদেশ। আমি কী করে ভালোবাসি?
খেয়ালখুশি মনগড়া মেয়াদ ব্যবস্থাকে সমর্থন করিনা।
ইন্টারনেট পাগলমনাদের তো সমর্থন করতেই হচ্ছে শ্রদ্ধেয় দিদি। তা যদি না করি তো আপনাদের সাথেও একরকম যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তা যাতে না হয়, সেজন্য বাধ্যতামূলক ওদের চুরি বাটপারিকে সমর্থন করতেই হচ্ছে।
যারা ২৮ পয়সা করে কিনে নিয়ে সেই জিনিস আম পাব্লিকরে ১২৮ টাকা খাওয়াতে পারে তাদের নিয়ে আর কি বলব? এদের সাথে সরকারও জড়িত তা না হলে সরকার কোন এ্যাকশান নেয় না?
খুব কষ্ট করে বিভিন্ন উপাত্ত যোগার করে লিখেছেন এই সুপাঠ্যটি। চমৎকার লেগেছে পড়তে।
শুভ কামনা রইল!
কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু ২৩ বছর পর ভারত থেকে আমাদের এখানে বেড়াতে এসেছিল। ওর মুখে ওদের ওখানকার 4G'র সুবিধার কথা শুনে রীতিমত থ বনে গেলাম শ্রদ্ধেয় দাদা। ওরা ৮৪ দিনের মেয়াদে ৪জি ব্যবহার করে, যেকোনো অপারেটরে প্রায় পুরোমাস ইন্টারনেটের সাথে পাওয়া ফ্রি টকটাইম দিয়ে কথা বলতে পারে। আরো অনেক অনেক সুবিধাও আছে দাদা। আর আমাদের দেশের অবস্থা কোথায় পৌঁছেছে দেখুন! আমরা যেন একরকম নিরুপায় হয়ে পড়েছি।
@ রিয়া আপু, BTRC তো আছে অপারেটরদের ব্যবসা দেখাশুনার জন্য? এরা কবে আম পাব্লিকের স্বার্থের দেখেছে বলুন? এরা সবচেয়ে বড় দূর্নীতিবাজ!!!
ওরাই তো সবকিছুর মূলে রয়েছে শ্রদ্ধেয় দাদা। না হলে ওদের আখের গোছাবে কী করে?
আমাদের অতি আসক্তি, হীনমন্যতা, উচ্চাভিলাষ, সব কিছুর সুযোগ নিয়ে মোবাইল কোম্পানী নামে বেনামে পকেট কাটে ….
ওদের চালাকি আর জুচ্চুরির কাছে আমরা সবসময়ই ধরাশায়ী। তা রাষ্ট্রও থাকে চুপ। দেখেও যেন না দেখার ভাণ করে বসে থাকে।