পালাকীর্তন ও বাউলগান অষ্টম অধ্যায়

পালাকীর্তন ও বাউলগান অষ্টম অধ্যায়

আঠারো শতক পর্যন্ত বাংলা পদাবলি সাহিত্যের এক বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের ভক্তিতত্ত্বমূলক পদসমূহ। বর্তমানেও পদাবলি কীর্তন নামে রাধা-কৃষ্ণের তত্ত্বমূলক পালাগান বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে গীত হয়। আধুনিক গানের পাশাপাশি রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক কীর্তন গান শহুরে শ্রোতাদেরও হূদয় আকর্ষণ করে। এ গান ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলেরই প্রিয়। রাধাকৃষ্ণের লীলাক্ষেত্র বৃন্দাবন হিন্দুদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তীর্থক্ষেত্র। কৃষ্ণের সাহচর্যগুণে রাধা গোপী থেকে দেবীর পর্যায়ে উন্নীত। কৃষ্ণের পাশাপাশি তিনিও এখন সমান গুরুত্বের সঙ্গে ভক্তদের পূজা পেয়ে থাকেন। রাধাকৃষ্ণের যুগল মূর্তি হিন্দুদের, বিশেষত বৈষ্ণবদের পরম শ্রদ্ধা ও ভক্তির বিষয়। গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম ও দর্শনে রাধাতত্ত্ব পূর্ণ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে, অর্থাৎ বৈষ্ণবধর্মের মূল কথাই রাধাকৃষ্ণের প্রেমতত্ত্ব; রাধাকৃষ্ণের যুগল রূপের অন্তরালে তাঁরা এক ঈশ্বরকেই কল্পনা করেন।

শ্রী কৃষ্ণ বিষ্ণুর অবতাররূপে দ্বাপরযুগে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন; আর বিষ্ণুপ্রিয়া লক্ষ্মী জন্মগ্রহণ করেন বৃষভানুর কন্যারূপে রাধা নামে (রাধার জন্ম সম্পর্কে অবশ্য ভিন্ন মতও আছে)। বয়ঃক্রমকালে আয়ান ঘোষের সঙ্গে রাধার বিয়ে হয়, কিন্তু তাঁর জীবন কাটে কৃষ্ণপ্রেমে, আর কৃষ্ণবিরহে। রাধাকৃষ্ণের এই প্রণয়-কাহিনীর অন্তরে নিহিত রয়েছে এক উচ্চ মার্গীয় দার্শনিক তত্ত্ব। কৃষ্ণ মূলত স্বয়ং বিষ্ণু বা ঈশ্বর, আর রাধা তাঁর জীবনসঙ্গিনী লক্ষ্মী। মর্ত্যে তাঁরা ভিন্ন পরিচয়ে জন্মগ্রহণ করলেও প্রকৃতপক্ষে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। ভারতীয় দর্শনমতে বিষ্ণু হচ্ছেন পরমাত্মা, আর সব জীবাত্মা। জীবাত্মার সর্বদা আকাঙ্ক্ষা পরমাত্মার সঙ্গে মিলিত হওয়া। পরমাত্মা বিষ্ণুই হচ্ছেন একমাত্র পুরুষ, আর সব প্রকৃতি অর্থাৎ নারী। রাধা এখানে সকল জীবাত্মার প্রতীক এবং কৃষ্ণ বিষ্ণু বা পরমাত্মার প্রতীক। তাই কৃষ্ণের প্রতি রাধার প্রণয়াসক্তি পরমাত্মা-জীবাত্মার শাশ্বত মিলনাসক্তিরই নামান্তর, অর্থাৎ পরমাত্মার প্রতি জীবাত্মার আত্মসমর্পণ। এটাই রাধাকৃষ্ণ তত্ত্বের মূল কথা এবং ভারতীয় দর্শনেরও সার কথা। রামানন্দ রায়ের সুবিখ্যাত পদ “সো নহ রমণ, হাম নহ রমণী”টির যে লক্ষ্য—এই গানটি তাঁহারই বিবৃতি। নারী ও পুরুষের যৌন-সম্পর্ক ছাপাইয়া উঠিয়াছে, এই গীতিটি তাহার কামগন্ধহীন প্রেম-গৌরবে। এই যৌন-ভাবই আমার সঙ্গে তোমার মিলনের বাধা। তুমি পুরুষ, আমি নারী,—খুব কাছাকাছি-রূপে মিশিতে পারি না। যদি তাহা না হইয়া তুমি ফুল হইতে, তবে তোমায় মাথায় পরিতাম, মণি-মাণিক্য হইলে গলায় হার করিয়া পরিতাম—লোকনিন্দা আমাগিদকে ছুঁইতে পারিত না। অন্ততঃ আমি রমণী না হইয়া যদি পুরুষ হইতাম, তবে একদণ্ডও তোমাকে সঙ্গছাড়া করিতাম না, “লইয়া ফিরিতাম দেশ দেশ” কেহ নিন্দা করিতে পারিত না।

এই প্রেমে যৌনভাব আদৌ নাই—কেবল সঙ্গ-সুখের কামনা, বরং বাহিরের স্ত্রী-পুরুষ-রূপভেদ মিলনের বিঘ্ন ঘটাইতেছে! ইহারা এই দেশের লোক—যেখানে স্ত্রী নাই, পুরুষ নাই, আছে শুধু বিশুদ্ধ, লালসালেশহীন প্রেম এবং চিরমিলনের আকাঙ্ক্ষা; দেহটা একটা বাধা মাত্র।

ইহাই চৈতন্যের অচিন্ত্য ভেদাভেদ। কতকদিন পর্য্যন্ত তিনি পুরুষ আমি নারী—তাঁহার সঙ্গে ভেদ জ্ঞান; কিন্তু পরে সম্পূর্ণ মিলনেচ্ছু প্রাণ নিজের সত্ত্বা লোপ করিয়া তাঁহার সঙ্গে মিশিয়া যাইতে চায়,—তখন “অনুখন মাধব মাধব সোঙরিতে সুন্দরী ভেল মাধাই” (বি-প) কিম্বা “মধুরিপুরহং ইতি ভবেন—শীলা” (জ)। এই গানটিতে সেই অভেদ অবস্থার প্রাক্-সূচনা। “আমার ‍নারী না করিত বিধি”কথায় বুঝা যাইতেছে, নারী তাহার নারীত্বের সমস্ত দাবী ছাড়িয়া দিয়া পুরুষকে চাহিতেছেন! এই কবিতা ভোগের কবিতা নহে, তবে যদি ইহাকে ভোগই বলিতে হয়—তবে বলিব “দেব-ভোগ”।

বৈষ্ণবেরা প্রেমের জগতে মৃত্যু স্বীকার করেন না। অনেক পদেই দেখা যায়, দশম দশায় রাধা কৃষ্ণের সঙ্গসুখ কামনা করিতেছেন। আসন্ন মৃত্যু, তখনও সখীদিগকে বলিতেছেন, মরিলে আমাকে তমাল ডালে বাঁধিয়া রাখিও (তমালের বর্ণ কৃষ্ণের বর্ণের মত), শ্যামলতা দিয়া বাঁধিও (নামের মিল-হেতু), “আমি হরি-লালসে পরাণ তেজব, তায়ে পাওব আন জনমে”—এইরূপ নানা পদেই দেখা যায়, মৃত্যুর পরও তাহার প্রাণ কৃষ্ণসঙ্গের ইচ্ছা ত্যাগ করিতেছে না; মৃত্যুর পর “আমার এ মৃতদেহ তার চরণেতে দিও ডালি”—এই প্রেম পরমানন্দময়, রাধার মৃত্যুও তাঁহাকে আনন্দপথের যাত্রীস্বরূপ চিত্রিত করিতেছে। আর একটি মাথুরের পদে রাধা বলিতেছেন, “আমার গলায় হার নিকুঞ্জে রহিল, তিনি ফিরিয়া আসিলে যেন একবার ইহা নিজের গলায় পরেন। বড় সাধ করিয়া নিজের হাতে মালতী ফুলের চারা পুঁতিয়াছিলাম, কিন্তু যখন ফুল ফুটিবার সময় হইবে—তখন আর আমি থাকিব না; তোমরা আমার হইয়া মালতী ফুলের মালা গাঁথিয়া তাঁহার গলায় পরাইয়া দিও।” কৃষ্ণকে সেবা করিবার ইচ্ছা ও সঙ্গলিপ্সা মৃত্যু-পথযাত্রীর অন্তিম-দশাকেও আনন্দের পুষ্পে পুষ্পাকীর্ণ করিতেছে। এই সকল পদে রাধা মৃতা ও মৃতপ্রায় নহেন,—অমৃতের অধিকারিণী।

অজয়ের নৈপথ্যে বাউল গানের ইতিহাস

অজয় নদীতীরের চরণচারণ পদ্মাবতীর দেশ, বৈষ্ণব কবি জয়দেব গোস্বামীর সাধন ক্ষেত্র। আর এই বৈষ্ণব মোহান্ত সাধক বৈষ্ণব গোঁসাইদের পাশাপাশি বাউলচর্চার প্রাণকেন্দ্রও হয়ে উঠেছে সেই অতীতের সময় থেকেই।জয়দেব আজও সমানজনপ্রিয় বাউলের চর্চা এবং আখড়া ধারীদের সাধনার গানে। দেশবিদেশের হাজার হাজার মানুষ আজও মনের নেশায় ছুটে আসেন অজয় তীরের বীরভূমের জয়দেবে কেন্দুলিতে।

আসেন বহু জানা অজানা বাউলের দলও। বাউলের টানেই আজও বিশ্বদরবারে সমান জনপ্রিয় অজয় পাড়ের বাউল তীর্থ জয়দেব- কেন্দুলি। শুধু বাউল কেন, বাউলের পাশাপাশি এখানে কীর্তন ও বৈষ্ণব কবির গীতগোবিন্দম্এর চর্চাও চলছে। তবে সেই চর্চার ধারা ক্রমশ হারাতে বসেছে। জয়দেবে বৈষ্ণব কবি গীতগোবিন্দের গানের চর্চা টিকিয়ে রেখেছেন অনাথ বন্ধু ঘোষ, শান্তি রজক, লক্ষণ দাস বাউলরা। যদিও এপ্রজন্মের কেউ তেমন ভাবে আর গীতগোবিন্দের গানের চর্চায় আসছেন না। তবুও সুপ্ত ভাবে অনেকে বীরভূমের এই জয়দেবেও নিয়মিত চলিয়ে যাচ্ছেন গীতগোবিন্দম্ গানের চর্চা।

এখানকার কিংবদন্তি গায়ক অনাথবন্ধু ঘোষ বাংলার একজন পরিচিত গীতগোবিন্দম্ গীতের প্রবাদ প্রতিম গায়ক। এছাড়াও এখানকার শিক্ষক, সংগঠক শান্তি রজক নিয়মিত বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন গীতগোবিন্দের গান। এই জয়দেবেরই হারানো গ্রাম মন্দিরাতে প্রাচীন বৈষ্ণব কবি জয়দেব গোস্বামী তাঁর শৈশবের সোনালি দিন গুলো কাটিয়ে, সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। বর্তমানে মন্দিরার সেই মন্দিরময় জন্ম গ্রাম অজয়ের করাল গ্রাসে গেছে হারিয়ে।

তবে যুব রাজা লক্ষণ সেনের তৈরি করে দেওয়া রাধাবিনদের মন্দিরটি এখনও টিকে আছে। এখানে বসেই রচনা করেছিলেন অমর প্রেমগীতি কাব্য গীতগোবিন্দম্। এখানকার বাউলমেলা আজ সারা বিশ্বে জনপ্রিয় সাধন গানের মকর মেলা বলে। কবির শ্রাদ্ধ বাসরকে ঘিরে, নিম্বার্ক সাধুরা শেষ পৌষে এখানে শুরু করে ছিলেন মেলার। সেই স্মরণ মেলাকে ঘিরে আজও শেষ পৌষে লক্ষ লক্ষ মানুষ এসে জড়ো হয় অজয় তীরে। বর্তমানে সেই মেলার এখন পরিচিতি স্নানের মেলা বলে। এই মেলা, বর্তমানে মকর মেলা হয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, স্থানীয় জেলা গুলোর মানুষদের মধ্যে।

শেষ জীবনে কবি জয়দেব গোস্বামী, অজয় তীরের কেন্দুলি গ্রাম ছেড়ে বিন্দাবনে চলে যান তাঁর পূর্জিত রাধাবিনোদকে সঙ্গে নিয়ে। এবং সেখানেই নিম্বার্ক আশ্রমের দায়িত্ব নিয়ে, তাঁদের গুরু হয়ে, সেখানেই দেহরক্ষা করেন। সেই আশ্রমে রয়েছে কবির স্মরণে সমাধি মন্দির। আর জয়দেবে এলে দেখতে পাবেন কবির কর্ম তীর্থ ভূমি। নদীর ধারে সাধন মনদিের, কুশেশ্বর শিব মন্দির। যদিও কবির জন্ম গ্রাম মন্দিরা এখন চলে গেছে অজয় গহ্বরে। বসতবাটি, গৃহমন্দির সব, সেইসঙ্গে রাজা লক্ষণ সেন প্রতিষ্ঠিত মন্দিরটিও চলে গেছে অজয় গহ্বরে। পরবর্তীকালে বর্ধমান রাজা কীর্তিচাদের মা ব্রজকিশোরী দেবী ১৬৯৬ খ্রিঃ বর্তমান পঞ্চ চূড়া মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন, সর্বসাধারণের জন্য। সেখানে গড়জঙ্গল থেকে রাধামাধবকে এনে নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা হয়। কবির আমলেই নাথ যোগী ও সহজিয়া সাধকদের আগমন ঘটে জয়দেবে। ধীরে ধীরে কবির নামে বেশ কয়েকটি গ্রামের মধ্যে, কেন্দুলিগ্রামটি জয়দেব বলে পরিচিত হয়।

তখন থেকেই শুরু হয় বাউলচর্চা জয়দেবের মাটিতে। তবে জানা যায়, তারও আগে এখানে বাউলদের রমরমা ছিল। পরম বাবাজী, পঞ্চানন ঠাকুর, সুবল দাস, ললিতা মাতা, জগৎ খ্যাপা, জগৎ খ্যাপি, মনহর খ্যাপা, পাগল রাম দাস, শক্তি খ্যাপা, চুরুক দাড়ি রাম দাস, হালাকাঁপা বাবা, মনোহর খ্যাপা, দাস রসময়, সুধীর দাস বাউল, তুলসী দাসী ও পায়েরের শম্ভু দাসরা যেমন ছিলেন, সে সময়ের জগৎজোড়া নামের সাধক বাউল। তেমনই এখানে থেকেছেন বাউল পূর্ণ দাসের মা ব্রজবাল দেবী ও বড় দিদি রাধারাণী দেবীও।

বিশ্ব বাউল পূর্ণ দাসও রাজেন বাবুদের বাড়ির কাছে এই জয়দেবে আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এখনও অজয় নদের কোলে, রুপোলী বালিয়াড়িতে চলছে বাউল সাধনার নানান গুপ্তময় কর্মময় অধ্যায়। এই জয়দেবে রয়েছেন প্রবীণ বাউল বাঁকাশ্যাম দাস, থাকতেন তারক দাস বাউল এখন তাঁর দুই সুযোগ্য পুত্র কাঙাল ও সাধু জয়দেবে বসেই জয় করছেন বিশ্বকে। রয়েছেন তমালতলি আশ্রমে সুধীর বাউলের শিষ্য লক্ষণ দাস বাউল, উত্তম দাস বাউল, দূরে রামপুর মাঠে সাধন দাস বাউলের মনেরমানুষ আখড়ায় রয়েছেন বাউল সাধনা নিয়ে তম্ময় দাস বাউল।

প্রকৃতির মনোরম পরিবেশে ১৪০৯-১৪১০ বঙ্গাব্দে জয়দেবে প্রথম বাউলের মনেরমানুষ আখড়া করেন গুরু বাউল সাধন দাস ও গুরু মা মাকী কাজুমি। মেলার কয়েক দিন এখানেই বিশ্ব বাউলের হাট বসে, মাটির আসনে। এই বসন্তে মরা যৌবনহারা অজয়ের কোলে কোলে, দানব লড়ির দৌড়াত্ব। কান পাতলেই শোনা যায় ধর্ষিত অজয়ের কান্না, মিশছে গাবগুবিতে। গভীর রাতে এখনও জাগ্রত হয় কদমখণ্ডী মহাশ্মশান। আর তারই পাশে অবিরত খোল করতাল বাজিয়ে বৈষ্ণবসাধকরা গেয়ে চলেন জীবনপুরের গান। অনন্ত আত্মার গান ধ্বনিত হয়, মেঘবালির চড়ে। জয়দেবের একই অঙ্গে বাজে বাউলের গাবগুবি, ফকিরের ডুবকি আর বৈষ্ণবের খোল- করতাল। সেইসঙ্গে দূরে বাজে মুসলমানের মসজিদে আজানের সুর, যেন মহামিলনের আনন্দনিকেতন। ইতিহাস খ্যাত জয়দেবের রাধামাধবের মন্দিরের পাশ দিয়েই অবিরত ছুটে চলেছে ওভার লোডের বালি বোঝায় ভারি ভারি গাড়ি। ইতিহাস, পুরা তত্ত্ব কাঁপিয়ে দিয়ে সে গাড়ির পর গাড়ি, রাত দিন ছুটে চলেছে বীরভূমের দিক থেকে বর্ধমানের দিকে।

বালি ঘাটের ইজারাদার রা তুলছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। সরকারি দলের ছত্রছায়াতে ক্রমশ ইতিহাসের প্রাচীন মন্দিরটি ধ্বংসের মুখে। যদিও ইতিহাসের এই জয়দেব মন্দির বলে পরিচিত মন্দিরটির সংরক্ষণ করেছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের কলকাতা মণ্ডলী। তাহলে তারা কেন রাখছে না নজর? কি করছে জয়দেবের অঞ্চল সংস্কৃতি পরিষদ, ও সংস্কৃতি কর্মীরা। আশ্রম, আখড়াধারী বাউল, সাধকসহ সাধারণ মানুষের কাছেই বা এই নিয়ে ভাবনা কি। শেষ ইতিহাসের নিদর্শন টি ধ্বংসের কবলে, তা হলে আর কি দেখতে জয়দেবে আসবে সাধারণ মানুষ। যদিও আসার কথা, রাস্তা সরিয়ে আরও পশ্চিমে টিকরবেতা গ্রামের কাছে তৈরি হচ্ছে অজয়ের উপর ব্রিজ। তবে সে নির্মাণও শেষ হতে এখনও বছর দু’য়েক তো লাগবেই। ততদিনে জয়দেব মন্দির, ভারি লড়ির কম্পনে সম্পূর্ণ ধ্বংসের কবলে হারিয়ে যাবে। বর্ধমানের একটি সংস্থা “পাণ্ডুরাজা প্রত্ন গবেষণা কেন্দ্র” ও “সহজ সেবা ও সংস্কৃতি শিক্ষা মিশনে”র যৌথ উদ্যোগে মন্দির রক্ষায় আন্দোলন করার জন্য, আপামর জয়দেবের জনসাধারণের কাছে, সহযোগিতার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

6 thoughts on “পালাকীর্তন ও বাউলগান অষ্টম অধ্যায়

  1. পালাকীর্তন ও বাউলগান। আমাদের শিল্প সংস্কৃতির অংশবিশেষ পড়লাম প্রিয় কবি মি. ভাণ্ডারী। শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_smile.gif.gif

  2. মাথায় রাখার চেষ্টা করছি কবি ভাণ্ডারী দা। শুভেচ্ছা জানবেন। 

  3. যতটা সম্ভব পেরেছি পড়েছি কবি দা।

    আপনার এমন নিরলস পরিশ্রম সত্যই অনুসরণীয় বটে। শুভেচ্ছা জানবেন। :)

  4. উচ্চমার্গের নিবন্ধ প্রকাশ করে চলেছেন কবি ভাণ্ডারী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।