৬৫।
এসে কি করতে হবে সব ভুলে গেছেন। মনের যে অবস্থা আর এইমাত্র যে খুকুর দেয়া পেয়ালা রেখে এসেছেন তাতে আর কীইবা মনে থাকবে? সমস্ত কিচেনে ঘুরঘুর করতে লাগলেন কি করি, কি করি? আচ্ছা অন্তত ইফতারের ঝামেলা গুলি ধুয়ে রাখি এর মধ্যে কবির এলে ওর কাছে জানা যাবে কি করতে হবে। একটু পরেই কবির নেমে এলো।
-সালামালেকুম কবির ভাই, আসেন আসেন কি খবর?
-আরে আপনে এগুলি কি করেন ফ্রিজ থেকে মাল বার করেন!
-হ্যাঁ ভাই আসলে আমি ভুলে গিয়েছিলাম কি করতে হবে তাই এইটা করছিলাম।
-ও বুঝছি আসেন আমার সাথে।
দুইজনে মিলে সব মালামাল বের করে যা যা করতে হবে সব গুছিয়ে একেবারে রেডি। মিনিট দশেকের মধ্যেই অর্ডার আসতে শুরু হয়েছে। প্রথম অর্ডার নিয়ে এলো আসাদ। আজকের অর্ডার একটু তাড়াতাড়ি এলো। একের পর এক টেক এওয়ের অর্ডার আসছে আর মারুফের ফ্রাই প্যান, চামচের ঠং ঠং শব্দ, কুকের চিৎকার, কবিরের দৌড়া দৌড়ী, রাশেদ সাহেবের প্যাকেটের গায়ে কারির নাম লেখা, বিল দেখে ব্যাগে ভরা আবার সাথে সাথে মারুফের প্যান ধুয়ে দেয়া, কুককে পোলাও রাইস গরম করে দেয়া, তন্দুরি সেফের নান বানানোর শব্দ। নানের শিক উঠানো নামানোর শব্দ, একটা কিমা নান, একটা পেশোয়ারি নান, দুইটা নানের হাঁক ডাক সব কিছু গতকালের ব্যস্ততাকে ছাড়িয়ে গেলো। এর মধ্যে ঘটনা একটা ঘটে গেলো। ভিতরে চার জনের এক টেবিলের অর্ডারের কারি রাশেদ সাহেব প্যাকেটে ভরে ফেলেছে এখন আসাদ এসে ওই কারি খুঁজে পাচ্ছেনা। মারুফ বললো-
-আমি বানিয়ে সব ডিশে ভরে হট বক্সে রাখতে বলেছি। ভাই সাহেব, ওই যে দিলাম ওটা কি করলেন?
-আমিতো প্যাকেটে ভরে ফেলেছি।
-ইইশ কি করেছেন কি?
-শিগগির বের করেন আবার যেমন ছিলো তেমন করে ডিশে ঢালেন, না না থাক এটা আর দেয়া যাবেনা আমি আবার বানিয়ে দিচ্ছি। এর পর একটু দেখে ভরবেন। নতুন মানুষ নিয়ে কাজ করার কি যে ঝামেলা!
রাশেদ সাহেব মারুফকে বললেন-
-ভাই এই ডেকচিতে কিন্তু সাদা রাইস আর নেই।
-আরে বলেন কি? এই কবির শিগগির সাদা রাইস চড়াও।
-ভাইছাব চার পট রাইস ধুয়ে দেন তাড়াতাড়ি।
এই ভাবে ভুল ঠিক, এলোমেলো, বকাঝকা, গালাগালি, তারা হুড়ো, গুঁতো গাঁতি, চিৎকার, হইচই, চেঁচামেচি সব কিছু মিলিয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে একটু হালকা হবার পর আসাদ গতকালের মত ট্রে করে চারটা গ্লাসে অরেঞ্জ জুস আর কোক এনে সবার সামনে ধরল। যার যা খুশি তুলে নিয়ে এক চুমুকে শেষ। এর মধ্যে একটু পানি খাবার সময় কেও পায়নি। রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়নি তবে একটু ভিড় কমেছে। তবুও একটু শান্ত পরিবেশ। টেক এওয়ের ভিড়ও কমেছে। এবারে যারা ভিতরে বসে খাচ্ছে তাদের ভিড়। এগুলি মোটামুটি সামাল দেয়া যায়। এখন একটু ধীর গতিতে চলছে। তারপরও কম না, রোজা রাখা শরীর তো এমনিতেই কাহিল তারপর ইফতার আর কি হয় মাঝে একটু পানি খাবার মত সুযোগও পাওয়া যায়না তারপরে নতুন মানুষ। এবার কবিরের একটা মাশরুম রাইসের অর্ডারের সাথে কবির স্টাফের জন্যেও কিছু বানিয়ে কয়েকটা পেয়ালায় রেখে বললো-
-ভাইছাব এই কড়াইটা ধুয়ে দেন তারপরে এই যে এখান থেকে একটা নিয়ে খান।
আসাদ এলো মাশরুম রাইস নেয়ার জন্যে। তখন তাকে বললো-
-ভাই একটু ডায়েট কোক দেয়া যাবে?
-আচ্ছা দিব আর কেও কিছু খাবেন?
-আমাকে একটা, আমাকে অরেঞ্জ, আমাকে পাইন এপল।
-আচ্ছা আনছি, এই টেবিলটা সার্ভ করে নেই।
বাহ দাদু…
ভালবাসা রইলো
ভালবাসা কাহারে কয়? যেখানে হাতিরা ঘুমায় উহাই কি ভালবাসা?
এখনই এই পর্ব পড়া শেষ করলাম বন্ধু। শুভ সন্ধা।
এত ধৈর্য কোথায় থাকে বন্ধু?
শুভেচ্ছা কবি ঔপন্যাসিক খালিদ ভাই।
শুভকামনা প্রিয় পাঠক। আপনারা আছেন বলেই লেখা হচ্ছে।
দিনের ভাগেই পড়ে নিয়েছিলাম।
দারুন একটা কাজ করেছেন আপা।
আমি সৌমিত্র চক্রবর্তী।
ও! আপনি সৌমিত্র চক্রবর্তী! আমি ভেবেছিলাম মৌমিতা চৌধুরি। কী যে মারাত্মক ভূল!
অফলাইনে পড়েছি খালিদ দা।
একভাবে পড়লেই হলো দিদি। চেয়ারে বসে পড়া আর বিছানায় হেলান দিয়ে পড়ার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।