ভালো থাকা না থাকা ৮

মাঝেমধ্যে টিকটিকি টা বেরোয় শতছেঁড়া বিচিত্র জলের নক্সাকাটা দেওয়ালে টাঙানো সেই ননীচুরির ( এত জিনিস থাকতে কৃষ্ণ যে কেন ননী চুরি করে খেত কে জানে! ননী বেশি খেলে পেটখারাপ হয় জানি। ) ছবির ক্যালেন্ডারের পেছন থেকে। ওপর নীচে আড়াইবার ঘাড়কে চক্কর কাটিয়ে আওয়াজ করে টিকটিক। মোটেও কোনো আহ্লাদ হয়না। কেননা সবকিছু গুবলেট হয়ে আসল সময়ে ঠিকঠিক হয়না।

শীত পড়ছে কি? ভোর রাতে কুয়াশার প্রলেপ? দিব্যি মোটা চাদরেই চলে যাচ্ছে এখনো। বাইকে হাওয়া ঠকানো প্লাস্টিক জামা। পুকুরের পাড় দিয়ে যাবার সময়ে দশটায় অন্যসময় বেশ চোখজুড়ানো স্নানের ছবি নজরে পড়ে। কিন্তু শীত পড়লেই সেখানেও সময় পাল্টায়। আয়াত টা যেমনতেমন, যাত্রাও জলুস হারায়।
ভিনজেলার খেজুরগুড়ের কারিগর সবে আসতে শুরু করেছে। আরো জমিয়ে ঠান্ডা না পড়লে নলেনের সেই রঙ রূপ গন্ধ কিছুই খুলবে না। এখন তো প্রথম কাটের রস নামবে, বৈচিত্রহীন।

সাপেদেরও ভরপেট খেয়েদেয়ে টয়লেট পটি করে মাস তিনেকের তোফা কুম্ভকর্ণ ঘুমে যাবার সময় হয়ে গেল। অন্তত তিনমাস চাষীবাসী মানুষ ভরপেট বাংলু খেয়ে রাতের অন্ধকারে নিশ্চিন্তে মাঠের আলে লটপটে পা ফেলে বাড়ীর ছলাকলা বিবর্জিত বউএর খপ্পরে ফিরতে পারবে। অন্তত মনসার চামচারা ফোঁস করে ছুবলে আত্মারাম পগাড়পার করে দেবেনা গ্যারান্টেড।

তাহলে তাই থাক, যে যার ইচ্ছেমত ঠান্ডায় পিকনিকে মাতুক, আমরাও জয় বাবা অঘ্যানসুন্দরের জয় হেঁকে আপিস কাটি সন্ধের দোহাই দিয়ে।

সৌমিত্র চক্রবর্তী সম্পর্কে

পরিচিতিঃ জন্ম বিহারের এক অখ্যাত বনাঞ্চলে বাবার চাকরীস্থলে। রসায়নে স্নাতকোত্তর এবং ম্যানেজমেন্ট পাশ করে কিছুদিন সাংবাদিকতা। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারী উচ্চপদস্থ কর্মচারী। একাধারে নাট্যকার, কবি এবং গল্পকার। কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, পুস্তক পর্যালোচনা, বিভিন্ন ধরনের লেখা ছড়িয়ে আছে দেশ বিদেশের অসংখ্য পত্র পত্রিকায় ও সংবাদপত্রে। উৎপল দত্ত সহ বহু বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্বের কাছে শিখেছেন থিয়েটার। বহু বিচিত্র ও ব্যাপ্ত ময় তাঁর জীবন। বন, জঙ্গল, পশু, পাখি, বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে তাঁর দীর্ঘকালের নিবিড় ও অন্তরঙ্গ পরিচয়। কবিতা ও বিভিন্ন লেখা লেখিতে তিনি মস্তিস্কের থেকে হৃদয়ের ভুমিকাকে বড় করে দেখেন। কবিতা, গল্প, নাটক এবং মুক্তগদ্য মিলিয়ে এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা নয়। প্রকাশিত গ্রন্থগুলি হলো বইছে লু, থিয়েটার কথা, তিতলিঝোরা, নীলপাখিকে উড়ো চিঠি, রাত্রি আমার নৈশপ্রিয়া, ব্রিজের নীচে বৃষ্টি, ২ একাঙ্ক, প্রতিলিপি এবং বেবুশ্যে চাঁদ, খণ্ড ক্যানভাস। ইতিপূর্বে অঙ্গন সহ কয়েকটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানে অক্ষর বৃত্ত পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। নেশা ফটোগ্রাফি ও ভ্রমণ।

16 thoughts on “ভালো থাকা না থাকা ৮

  1. যাপিত জীবনে ভালো থাকা না থাকা। সবকিছু গুবলেট হয়ে আসল সময়ে ঠিকঠিক হয়না। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  2. খুবি সুন্দর আপনার বর্ণনা। অভিনন্দন কবি সৌমিত্র চক্রবর্তী দা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

  3. শীত পড়ছে কি? ভোর রাতে কুয়াশার প্রলেপ? দিব্যি মোটা চাদরেই চলে যাচ্ছে এখনো। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  4. মোটেও কোনো আহ্লাদ হয়না। সবকিছু গুবলেট হয়ে আসল সময়ে ঠিকঠিক হয়না।

  5. তাহলে তাই থাক, যে যার ইচ্ছেমত ঠান্ডায় পিকনিকে মাতুক, আমরাও জয় বাবা অঘ্যানসুন্দরের জয় হেঁকে আপিস কাটি সন্ধের দোহাই দিয়ে। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।