পৌষ পার্বন মকর সংক্রান্তি …….. ঘরে ঘরে পিঠেপুলি এসো পৌষ যেও না পৌষপার্বনের কবিতা-৩

পৌষ পার্বন মকর সংক্রান্তি …….. ঘরে ঘরে পিঠেপুলি
অজয়ের ঘাটে সবাকার আহ্বান- এসো পৌষ যেও না।
তথ্যসংগ্রহ সম্পাদনা ও কলমে – লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

নতুন ধানের চাল এবং নতুন গুড় দিয়ে তৈরি পায়েস, পিঠে, তিল আর গুড় দিয়ে তৈরি লাড্ডু, তিলকুট, তিলতক্তি দিয়ে দেবী লক্ষ্মী এবং সূর্যদেবের উপাসনা করেন মানুষরা। প্রথমে দই–চিঁড়ে, তারপর খিচুড়ি, পায়েস, পিঠে, তিলের লাড্ডু, তক্তিতে জমে ওঠে সংক্রান্তির ভোজ। উত্তর এবং পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এই দিন ঘুড়ি উৎসব অত্যন্ত জনপ্রিয়। অসমে বিহু, পশ্চিমবঙ্গে নবান্নের গান, তামিলনাড়ুতে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে দেশবাসী।
পুণ্যস্নান ছাড়াও মকর সংক্রান্তি দেশের বিভিন্ন রাজ্যে নতুন শষ্য ঘরে তোলার দিন। পশ্চিমবঙ্গে এই দিনটি পরিচিত পৌষ সংক্রান্তি হিসেবে এবং অসমে এর নাম মাঘ বিহু বা ভোগালি বিহু। হিমাচলে মাঘা সাজি, কর্নাটকে সুগ্গি, রাজস্থানে সংক্রাত, তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল নামে পরিচিত হলেও সব রাজ্যেই এই দিন উৎসবের দিন।

কোথায় কী নামে পরিচিত?
ভারতে মকর সংক্রান্তি নামে পরিচিত হলেও অন্য দেশে এর আলাদা আলাদা নাম রয়েছে। বাংলাদেশে এর নাম সাকরাইন। নেপালে এটি পরিচিত মাঘি নামে। থাইল্যান্ডে সংক্রান। লাওসে পি-মা-লাও।মিয়ানমারে থিং-ইয়ান। কম্বোডিয়ায় মহাসংক্রান নামে পরিচিত। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত এ বার দেখব সেগুলি – পশ্চিমবঙ্গে এই উৎসব পৌষ সংক্রান্তি, পৌষপার্বণ বা নবান্ন। তামিলনাড়ুতে এই উৎসব ‘পোঙ্গল’ নামে পরিচিত। কর্ণাটকে একে ‘মকর সংক্রমনা’ বা ‘ইল্লু বিল্লা’ বলা হয়। অন্ধ্রে আর কেরলে এই উৎসব মকর সংক্রান্তি নামেই পরিচিত। রাজস্থান ও গুজরাতে এই উৎসবের নাম ‘উত্তরায়ণ’, মহারাষ্ট্রে ‘তিলগুল’, মধ্যপ্রদেশে সুকরাত, কাশ্মীরে শায়েন-ক্রাত। উত্তর ভারতের পঞ্জাব, হরিয়ানা, হিমাচল, জম্মুতে এই উৎসব ‘লোহরি’ নামে চালু। ‘মাঘী’ উৎসবও বলা হয়। বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব ‘খিচড়ি পরব’। পূর্ব ভারতের অসমে এই উৎসবের পরিচিতি ‘ভোগালি বিহু’ নামে।

পৌষ পার্বন মকর সংক্রান্তি …….. ঘরে ঘরে পিঠেপুলি
এসো পৌষ যেও না ( পৌষপার্বনের কবিতা-৩)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

মকরসংক্রান্তি আজি কর পূণ্যস্নান,
অজয় নদীতে আজি টুসুর ভাসান।
ভোর হলে সকলেই টুসু নিয়ে আসে,
ফুলমালা নিয়ে টুসু নদী জলে ভাসে।

দলে দলে কুমারীরা গায় টুসু গান,
অজয় নদীর ঘাটে সবে করে স্নান।
বহুদূর হতে কত আসে লোকজন,
অজয়ের ঘাটে আজি জন সমাগম।

বাউলেরা একতারা হাতে গায় গান,
অদূরে কেহবা দেখি করে পূণ্যস্নান।
রাঙাপথে দেখি কত আসে সারিসারি,
স্নানার্থীরা আসে সবে চড়ি গরুগাড়ি।

বসেছে দোকান কত সার্কাসের খেলা,
অজয়ের ঘাটে আজি ধর্মশীলা মেলা।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

4 thoughts on “পৌষ পার্বন মকর সংক্রান্তি …….. ঘরে ঘরে পিঠেপুলি এসো পৌষ যেও না পৌষপার্বনের কবিতা-৩

    1. সুন্দর মন্তব্যে অনুপ্রাণিত হলাম।
      প্রিয়কবিকে শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু!

  1. রাঙাপথে দেখি কত আসে সারিসারি, স্নানার্থীরা আসে সবে চড়ি গরুগাড়ি। বাউলেরা একতারা হাতে গায় গান, অদূরে কেহবা দেখি করে পূণ্যস্নান।

    কী সুন্দর একটি ছবি। প্রাণ ছুটে যায়। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে আপ্লুত হলাম।
      শুভাশীর্বাদ কাম্য। জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।