তৃপ্তি অতৃপ্তির গল্প

‘ভাই শুধু টাকা জমিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকে রাখে, ইন্সুইরেন্স করছে, ডিপিএস আরও কতকিছু।’
‘না রেখে উপায় নেই। ছেলে সন্তান হয়েছে। কিছু না রেখে পিতাকে গালি দিয়ে বলবে আমাদের কি করেছো?’
‘আমি ভাই কিছুই রাখবো না। আল্লাহ যা রাখে কপালে।’
‘শুনুন, আমাদের বাপমায়ের সামর্থ্য ছিলো কিছু দেওয়ার। এমনকি আমাদের সময়ে আমরা স্কুলে গিয়েছি কিনা তারও কোন খোঁজখবর নিতো না। আর এখন…।’
‘হুম, এটা একদম ঠিক কথা বলেছেন। এখনকার ছেলেমেয়েরা বলে তোমার বাবার কিছু ছিলো না বলে তোমাকে কিছু দেয়নি। কিন্তু আমার বাবা! আমার বাবা সরকারি চাকরি করে।’
‘তাহলে ভেবে দেখুন। টাকা না জমিয়ে কি করবো? দিনশেষে সন্ধ্যা ঠিকই নামে।’
‘হুম ভাই। এখন থেকে আপনার মতো…!’
‘আরে! উঠে যাচ্ছেন কোথায়? বসুন। একটা গল্প বলি।’
‘আচ্ছা, বলুন।’
আমেরিকার কোন এক বিখ্যাত হোটেলে বিল গেটসের মেয়ে খাবার খেতে গিয়েছে। অবশ্য সে হোটেলের ওয়েটার থেকে শুরু করে অনেকেই তাকে চেনেন। এবং তাকে নিয়ে বলাবলি শুরু করলো যে এই মেয়েটিই হলো পৃথিবীর একমাত্র ধনীর মেয়ে।
খাবার দেওয়া হলো। খাবার খেয়ে খাবারের মূল্যসহ ৫০০ ডলার ওয়েটারকে বকসিস দিয়ে বের হয়ে গেলো।
ঠিকই একই হোটেলে বেশকিছু দিন পর বিল গেটস নিজেও খাবার খেতে হাজির হলো। এবং যথারীতি সবাই বলাবলি শুরু করলো এই ব্যক্তিই পৃথিবীর এক নাম্বার ধনী। যার কোন কিছুর অভাব নেই।
খাবার দেওয়া হলো। খাবার খেয়ে খাবারের মূল্যসহ… ডলার ওয়েটারকে বকসিস দিয়ে বসে মোবাইল টিপতে শুরু করলো।
ওয়েটার খাম থেকে মূল্যসহ বকসিস বের করে অবাক /তাজ্জব হয়ে গেলো। এবং কিছু প্রশ্ন এসে তার মনের মন্দিরে ভিড় করলো।
অবশেষে বুক অবধি সাহস নিয়ে বিল গেটসের সামনাসামনি দাঁড়িয়ে রইলো। বিল গেটস জিজ্ঞেস করলো, ‘কিছু বলবেন কি?’
ওয়েটার বলল, ‘জ্বি স্যার। একটা প্রশ্ন ছিলো।’
বিল গেটস, ‘ঠিক আছে। বলুন।’
ওয়েটার, ‘স্যার, কিছুদিন আগে আপনার মেয়ে এসেছিলো এখানে। এবং খাবার খেয়ে খুশি হয়ে আমাকে ৫০০ ডলার বকসিস দিয়ে গেছেন। অথচ, আপনি পৃথিবীর ১ নাম্বার ধনী হয়েও আমাকে মাত্র ৫ ডলার বকসিস দিলেন।’
বিল গেটস, ‘আপনার এখানে যে এসেছিলো তার বাবাকে চেনেন? তার বাবা হলো পৃথিবীর ১ নাম্বার ধনাঢ্য ব্যক্তি। এজন্যই সে আপনাকে ৫০০ ডলার দিয়েছে। আর আজকে যে এসেছে তাকে চেনেন? তার বাবা ছিলো দিনমজুর। সে আপনাকে ৫ ডলার বকসিস দিয়েছে এটা আপনার সৌভাগ্য।’

মুহাম্মাদ মাসুদ সম্পর্কে

মুহাম্মাদ মাসুদ (মোঃ মাসুদ রানা)। ১৯৯৫ সালের ১৪ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার এনায়েতপুর থানার চৌবাড়ীয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মোঃ লাল মিয়া, মাতা মোছাঃ জাহানারা খাতুন। শিক্ষা জীবনঃ চৌবাড়ীয়া টোকের পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাশ করে স্থল পাকড়াশী ইন্সটিটিউশনে ভর্তি হন। পরবর্তীতে বাড়ির পাশে নতুন স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে ৮ম শ্রেণীতে সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হয় খামারগ্রাম মহাবিদ্যালয়ে। ২০১২ সালে ব্যাবসায় শিক্ষা শাখা থেকে পাশ এইচএসসি করেন এবং ২০১৬ সালে মানবিক শাখায় বেলকুচি সরকারি কলেজ থেকে বিএ (ডিগ্রী পাশ কোর্সে) করেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থঃ যৌথভাবে মুক্তচিন্তা (২০১৮) ও নীলপদ্ম (২০১৯ বইমেলা) দন্ত্য 'স' প্রকাশনী থেকে প্রকাশ পায়। গল্পগ্রন্থঃ হুমায়ূন হিমু (বইমেলা - ২০২০)।

6 thoughts on “তৃপ্তি অতৃপ্তির গল্প

  1. শিক্ষণীয় অণুকথন। অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা মি. নৃ মাসুদ রানা। ধন্যবাদ। :)

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।