সখি ভালোবাসা কারে কয়!

ঘুম না আসা প্রহরে
রাত্তির নিবিড়ে কান পেতে দেখলাম বিষাদের চাপা নিঃশ্বাস
বৃক্ষের শিকড়ে, শাখা প্রশাখায় হাত বুলিয়ে দেখলাম-
অনুক্ত বেদনায় কতো রুক্ষ্ণ তার বিদীর্ণ চাতাল!
আমি খুঁজলাম কৃষ্ণাকাশের নির্বাণ ধ্রুব তারা
ভোরের আবছা আলো মাথায় তুলে ছুটলাম নীল সাগরের তীরে
যেখান টায় হয় সূর্যোদয়;
শিশিরে ভেজা ঘাস ফুলে ঠোঁট ছোঁয়াতেই বুঝলাম
সত্যি বুঝলাম- সখি ভালোবাসা কারে কয়!

করাল দুপুরের তপ্ততায় পুড়ে
নির্মম ক্লেদে আছড়ে পড়া ছাইয়ের স্তূপ
আমি দেখলাম কতটা শূন্যতায় হামাগুড়ি খায় মৃণ্ময়ী গন্ধ
কতটা জ্বালা সয়ে উতলা হয় এক একটি কবুতর
বুঝলাম কতটা প্রতারণায় মেঘ নামায় না বৃষ্টি; অধর ক্ষয়
দেখতে দেখতে জানলাম সখি, ভালোবাসা কারে কয়!

মৃত নদীর বুকে অদৃশ্য ঢেউর গর্জন
ঠুমরী তবলার ধ্রুপদী তর্জন শুনে শুনে আমি শিখেছি কান্না ভোলানো গান।
নিশ্চিত পরাজয় মেনে নিয়ে ছুটেছি বসন্তের রেখে যাওয়া পদচিহ্নের পিছু
দুর্গম পথের ক্লান্তি সয়ে- সয়েছি তৃষিত বুকের জল প্রার্থী অণুয় বিনয়;
শোণিতের স্পন্দনে জাগা শোকের মাতম দেখে দেখে জেনেছি, সখি ভালোবাসা কারে কয়!

কিশোরীর দুরন্ত পনায় সমুজ্জ্বল জোছনার বুক খসে পড়া নিষ্পাপ কবিতা
শব্দের আকরে কুড়িয়ে নেয়া জোনাকির উচ্ছ্বসিত হাসি-
পবিত্র সরল রেখায় দাঁড়িয়ে বাড়ানো হাত ছুঁতে গিয়ে ধসে পড়া জীবন
কেউ জানলোনা, খোঁজ নিলোনা
নিগৃহীতের তমাল অন্ধকারে ডুবতে ডুবতে যার চক্ষু হেরেছে বিস্ময়
আমি সেই আর্তনাদ সয়ে সয়ে বুঝেছি,সখি ভালোবাসা কারে কয়!

দাউদুল ইসলাম সম্পর্কে

সব সময় নিজেকে বলি- মানুষ হবি যদি- অন্ধকার ঘরে যখন একা থাকবি তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করে নিস তুই কতটা মানুষ। কতটা তোর সভ্যতা কতটা তোর ভদ্রতা! স্নান ঘরে যখন একা শাওয়ারের নিচে দাঁড়াস- তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করিস কত টা আছে তোর মনুষত্বের রুচি! জিজ্ঞেস করিস কতটা তুই ভদ্র, সভ্য!

3 thoughts on “সখি ভালোবাসা কারে কয়!

  1.  লেখাটা মুগ্ধতা নিয়ে পড়লাম, ভালো লাগলো।

  2. 'ভোরের আবছা আলো মাথায় তুলে ছুটলাম নীল সাগরের তীরে
    যেখান টায় হয় সূর্যোদয়;
    শিশিরে ভেজা ঘাস ফুলে ঠোঁট ছোঁয়াতেই বুঝলাম
    সত্যি বুঝলাম- সখি ভালোবাসা কারে কয়!' https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।