ট্যাগ আর্কাইভঃ দাউদের কবিতা

সহ ব্লগারেরা এসো…..

out.-3d

বাংলা ব্লগের প্রাণ
নির্মোহ ভালোবাসার অনির্বাণ পুরুষ
আজাদ কাশ্মীর জামান!
প্রেরণা ও প্রেমে নিজেকে করেছেন উন্নত শিরস্ত্রাণ!..

নিভু নিভু প্রোফাইল ছবিতে আছেন আবু সাঈদ আহম্মেদ,
যদিও তিনি শব্দের কারিগর….
কথা সাহিত্যের প্রখর সূর্য
কাজে নিবিষ্ট মন, মানবিক এক তূর্য!

ব্লগ দুনিয়ার আশীর্বাদ তার নাম জামান আরশাদ।
দারুণ মমতাবান আর রয়েছে প্রাজ্ঞ জ্ঞান।

সবার প্রিয় আপা লুবনা মুক্তি, অদম্য প্রেরণা
যিনি- আসলেই এক অনন্য শক্তি
শ্রদ্ধা সম্মানে ভক্তিমান!

স্থির শিল্পের যাদুকর ব্লগগুরু জিয়া রায়হান
নিবিষ্ট ধ্যানে ক্যামেরায় ডুবে যান অহর্নিশ
ছবিতা আর কবিতায় দক্ষ হাতে চলেন সমান।

ব্লগবাড়ির গোড়াপত্তনে যার কর্ম শৈলী নিপুন হস্ত,
দুরন্ত দুর্নিবার সাইক্লোন শিবলীর মর্ম রয়েছে বিন্যস্ত!…

ধ্যানে জ্ঞানে করেছেন সন্ধি
প্রিয় কবি ফকির আবদুল মালেক
নান্দনিক স্ফূরণে বুনেছেন
‘একাকিত্বের জবানবন্দি ‘!..

মননশীল কবিতা রচনায় যার কথা না বললেই নয়
নতুন নতুন কবিতায় রোজ নিজেকে দেয় জানান
ভুতু সোনার কারিগর কবি চারু মান্নান! চারু মান্নান

অসাধারণ মানুষ আমাদের জাকির হোসেন
আবৃত্তি আর মননশীলতায় এখনো সবাইকে ভালোবাসেন।

ভোমরার গুনগুনানিতে শব্দ কুড়ান
কথা সাহিত্যের খালিদ ওমর, নক্ষত্রের গোধূলির বয়ানে আচ্ছন্ন করে রাখতেন সমগ্র আসর।

চট্টগ্রামের রত্ন আ স ম এরশাদ
যত্ন করে পূরণ করতেন
সহব্লগারদের সাধ আহ্লাদ।

গল্প ও রান্না
রান্নার গল্পে রুচির বন্যা বইতো শাহদাত উদরাজী ভাইয়ের চমৎকার সৃজনে
পোস্ট পড়লেই ক্ষুধা পেতো পেটে লাগতো চিনচিনে..

ছবি নামে কবিতার প্রেমে অবিরাম হেঁটেছেন
কাজী ফাতেমা ছবি,
ঝলমলে লেখার আলোয়
আসলেই এক জ্যোতির্ময়ী কবি।

প্রান্তিক কবি প্রিয় এসকে দোয়েল
সাজাতেন গদ্য প্রীতি –
আত্মিক অর্থেই সত্যিকার সাধক তেঁতুলিয়ার বাতি!…

তেলের মতো নিজেকে জ্বালিয়ে আলো দিতো সৈয়দ মাজহারুল ইসলাম রুবেল- কবিতা আর গল্লে বইতো আনন্দধারা, চিত্তাকর্ষক উদ্বেল!..

আরো কত গুনীমান্যি
কত ফুল ও নক্ষত্রের কোলাহল
আমাদের ব্লগবাড়ি হতো মুখরিত, ঐকান্তিক উজ্জ্বল!..

নগন্য আমি
অতি ক্ষুদ্র!.. হত দরিদ্র গাঁও গেরামের মানুষ
শুদ্ধ অশুদ্ধ কত কি লিখি – সেদিকে থাকেনা হুঁশ!
ডাকছি তোমাদের
সহ ব্লগারেরা এসো-
আত্মার নন্দনে বসো..
জানি ভালবাসো… তবুও
মনের সনে মনের সাক্ষাতে মিষ্টি করে হেসো!….

সহ ব্লগারেরা এসো….. দাউদুল ইসলাম
২৭/৬/২৩

ধর্মের কল

আমাদের চৌহদ্দি ঘিরে আছে বিষধর সরিসৃপ
ক্ষুধার্ত শকুনেরা জোটবদ্ধ হামলে পড়ার আয়োজনে! নীরবে ধুকছে সমস্ত নন্দন কানন
ধুলির আস্তরে চাপা পড়েছে শিল্পের মনন- দর্পণে
মানুষে অমানুষে একাকার শ্রমণ মাতাল সমীরণে!
তালে – বেতালে বাজছে পতনের দামামা, অনল
গরলে নাচছে ব্যঙ্গমা, বাতাসে নড়ে ধর্মের কল।

ভাষারা সব ফুল হয়ে যায়

Poli

ভাষা
রুধিরা স্রোতে
ভেসে যাওয়া প্রাচীন ভালবাসা!
মাতৃ জঠরে জন্মানো প্রাণের লিপিকা
নিঃশ্বাসে
প্রশ্বাসে
চেতনায়
আদর্শে
মিশে থাকা অনুপ্রাণন
অ আ ক খ…
অক্ষরের জঠরে অক্ষরের ধ্বনি!…
বুলবুলির বোলে
কোকিলের কুহু সুরে
মাতৃকার মাদল;
কে না জানে-
বাদল দিনে
ঝিরিঝিরি বরিষণে
টিনের ছালে
পাতায় পাতায় … গাছের শাখায় …
জেগে উঠে একটি আন্দোলন
মাতৃভাষা বাংলা চাই
তোমার ভাষা আমার ভাষা
বাংলা ভাষা বাংলা ভাষা…..

বন্দুকের নল থেকে
লৌহ মোড়ানো বুট থেকে
ফুলের কলি থেকে চিনিয়ে নেয়া দীর্ঘশ্বাস থেকে
ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি গুঞ্জন তোলে;
ভিন ভাষায়
প্রকাশ করা যায় না এমন সব আত্মনিনাদ
অবলীলায় রচিয়ে যায় মহাকাব্য
নির্ভিকতার অদম্য বীর
রফিক
সালাম
জব্বার
শফিক
পিতৃত্বের অধিকারে আসে একুশে গ্রন্থমেলায়
প্রতি বছর জন্ম দিয়ে যায় অসংখ্য কবি-র!
গভীর শ্রদ্ধায়
গভীর ভালবাসায়
লাখো ভাষাপ্রেমী মানুষ
স্রোতের মতো নেমে আসে
প্রভাতফেরিতে
কৃতজ্ঞচিত্তে, ফুলেল জলসায়
একুশ এলে
এভাবেই
ভাষারা সব ফুল হয়ে যায়।
.

ভাষারা সব ফুল হয়ে যায় // দাউদুল ইসলাম ২১/২/২৩

এটি কবিতা নয়

2090

এটি কবিতা নয়
এই যে অক্ষর গুলো, শব্দগুলো..
এ সবিই নিভৃতের কান্না
কালিমাময় বেদনা
অশ্রুতে কখনো কবিতা হয়না..
এই যে দাড়ি কমা, সেমিকোলন
এসবিই দীর্ঘশ্বাসের অনুকম্পা ;

মৌন প্রস্তরখণ্ডের আদিম আঘাত
মৃতের মতো শীতল
বৃষ্টিস্নাত পরিত্যক্ত ঝর্ণা প্রপাত।

আর যাই হোক
এসব কখনোই কবিতা নয়!..

ঐ যে-
শিশিরের শব্দে একাকার নিতি নৃত্য
পাতা ঝরার ছন্দে শুনতে কি পাওনা
পৃথিবীর তাবত কবিদের গুপ্ত কান্না!
শূন্য দৃষ্টি মেলে
অতলান্তিক দহনে পোড়ায় আলেখ্যদর্শন,
পুড়ে যায় সমূহ চেতনা
প্রাগৈতিহাসিক মন!
কতো
আর কতো নিঃশেষ পতন
কতো আর অধীর ঝুলন..
কবিতাহীন
নির্বাক-ধূসর জীবন!..

কান্না
থামে না
নিশিদিন ঝরছে বেদনা’শ্রু
নির্বাসনের রোষানলে
ঝরছে প্রাণ
স্বপ্ন শতদ্রু…
চেনা অক্ষরে
চেনা শব্দে- অচেনা গোঙানির মতো
অস্পষ্ট কবিতা
যেনো
বুলি ফোটা কবুতরের ছোট্ট ছানা
তালিম নিচ্ছে “বাকবাকম’…..বাকবাকম…

১১/৯/২২

আত্মহুতি

IMG_20

আমি চলে যাচ্ছি প্রস্থানের পথ ধরে, নিজেকে নিয়ে যাচ্ছি বাধ্যতামূলক অবসরে…
তুমি থাকো… দিগ্বিজয়ের নেশায় বুদ হয়ে আরো কিছু স্বপ্ন আঁকো…। তুমি একা নও জৌলুশ ভরা জলসায় ; তোমাকে রেখে যাচ্ছি ভীড়ের নিভৃতে!
অনেকেই ফিরে গেছে আঁধার বনে, কেউ কেউ বেছে নেয় নির্বাক-ধূসর শূন্যতা ; কেউ কেউ অগ্নিপথ কিংবা খরস্রোতা নদী, জানো নিশ্চয়ই বেচে থাকা মৃত্যুর মতো সহজ নয় ; কষ্টের দুর্গম পারাপারে কখনো কখনো খুইয়ে যায় আজন্মকালের স্বপ্ন!
তবুও কবিতা রচিত হয়
অনেক পাখিরা তাদের উষ্ণীষ বগলে আগলে রাখে অবহেলিত কবির কবিতা! অনেক রাখাল ক্লান্ত দুপুরে বাঁশির সুরে ফিরিয়ে আনে নির্লিপ্ত বাউলের মন। এমন উদাস যাপনে আরো কিছুকাল অতিবাহিত হোক তোমার নিঃসঙ্গ জীবন!..
আমার প্রস্থান তোমাকে ভেঙে যাওয়া মৌচাকের রানী মৌমাছির মতো উত্তেজিত করুক
আমি চাই.. পৃথিবীর তাবত কবিরা জানুক –
সর্বভুক একটি গ্রাস তছনছ করে দিয়েছে আমাদের যৌথ উদ্যান….
যেই ইতিহাসের মর্মরে গুঞ্জরিত হচ্ছে অজস্র ঘাসফুলের করুণ আত্মহুতি!….

১৮/৮/২২

জমি বুঝে জলজ ভাষা

288596

বৃষ্টি আর ঝর্না দুটোই ধারাপাত ধর্মী
পার্থক্য কেবল এক জন পতিত হয় নিরবধি
আরেক জন গলে কেবল মেঘেরা হাত পাতে যদি
নিজস্ব ভাষায় শীৎকারে দুটোই সুরের প্রেমী।

পতিত জমি বুঝে জলজ ভাষা
চির যৌবনা খনিজ উত্তাপে ঝর্নার অনিন্দ্য প্রেম লীলা
সুর ছন্দে প্রেমজ সন্তর্পণে চির স্নিগ্ধ বৃষ্টির চলা কলা।

ঝর্না চায় দুরন্তপনা বুকের গভীরে অদম্য উচ্ছ্বাস
নির্জনতা ভেদ করে কান্নার জলে রচনা করে স্বপ্ন-বিন্যাস
বৃষ্টি মগ্নতায় বিগলিত মেঘেরা বিচরণ করে বৃক্ষ লতা ভূমির অভ্যন্তরে
নিখাদ আলিঙ্গনে নির্বিঘ্ন সঙ্গমে নির্গমন করে অতলান্তিক উষ্ণতায়
জলজ ভাষার পরিভেদে আজ একাত্ম ঝর্না আর বৃষ্টি
প্রমত্ত প্রবণে অনন্তপানে ছুটছে অবিরাম
দৃষ্টি নন্দন বিরল স্রোতে আমিও ভাসিয়ে দিলাম-
হৃদয় খসা দু’টো সবুজ পাতা।

আষাঢ়ের শুভেচ্ছা সবাইকে…. 🐸🐸🐸

বে-নামী কবিতা

20951

বন্ধু গন
তোমাদের ভ্রু কুঁচকানোর মত কোন সত্য প্রকাশ করবো না
তোমরা বিস্মিত হলে আঘাত লাগবে আমার ক্ষুদ্র মনুষ্যত্বে;
আমি ক্ষুদ্র
হত দরিদ্র, ছাই পোষা মানুষ
গেও ভুতের বোঝা আর ঘি হজম না হওয়া কুত্তার কাতারে দাঁড়িয়ে আছি –
আই ফোনের বুকে আঙ্গুলের ক্ষীণ স্পর্শে দুনিয়া ঘুরাতে ঘুরাতে –
রাত কে দিন; দিন কে রাত করার ক্ষমতা যখন কারো হাতের মুঠোয়
তখন-
বৃষ্টি ভেজা ব্যাঙ্গের মত রাত দিন অবিরাম ঘ্যঙ্গর ঘ্যঙ্গর করা ছাড়া আমি আর কি করতে পারি!

তোমাদের এই মাহফিলে
আচমকা ঢুকে পড়েছিলাম এক দিন পথ ভুলে
রঙের ঝলক
স্বপ্নের ফলকের মত মোহগ্রস্ত করে তুলেছিল আমাকে;
তারপর……
এই চরণ থেকে সেই চরণ
কারো লাথি
কারো ওষ্ঠা খেতে খেতে আমি রয়ে গেলাম
তোমাদের উচ্ছিষ্ট খাদ্য সাফ করার সুবিধা নিয়ে, ভিজে বেড়ালের মত।
সেই উচ্ছিষ্টের ঋণ শোধ করার ক্ষমতা আমার নাই…

ঋণ দায়গ্রস্ত মানুষ কে মানুষ বলা পাপ
আমি কিচ্ছু মনে করিনি, যখন তোমরা নিকৃষ্ট পশুর সাথে আমাকে গুলিয়ে ফেলেছিলে
সেই দিন থেকে যদিও বন্ধ হল পুরনো জলসা ঘরের ঘুঙুর ছন্দ
স্তব্ধ হলো ঠুমরীর অন্ধ মুখ!
একের পর এক নিশীথের কান্না মিশে যেতে লাগল গগন বিদারী অলিন্দে;
আমি তব চেয়ে রইলাম তোমাদের আনন্দে!
অনন্ত বৃন্তে লক্ষ্যভেদ করা তীর বিধে যাবার পর
ফিরে তাকাবার অবকাশ রই-লোনা যেই তীরন্দাজের
তোমাদের মাঝে সে স্ফুটিত হয়ে থাকুক চিরন্তন পুষ্পরাজির মতন।

যত্নে থেকো

35576

তুমি ভালো থেকো
ভালো থাকার সমস্ত উপকরণ থাকুক তোমার,
আমার সারি বদ্ধ কষ্ট গুলো স্পর্শ না করুক
তুমি নিজেকে স্বযত্নে আগলে রেখো;

তুমি তৃপ্ত হও
তৃপ্তির যাবতীয় আয়োজন সু সম্পন্ন হোক।
আমার ক্ষত বিক্ষত-
বুকের দগদগে গা তোমাকে মর্মাহত না করুক;
তুমি মুখ ফিরিয়ে রাখো!

অসূয়া চোখে দেখিনি তোমাকে
অশুচ হাতে ছুঁইনি
ফণীমনসার নীল বিষে নিজেকে তৃপ্ত করেছি
ঐ দেখো…
মৃত্যু তেড়ে আসছে এই দিকে!

এবার রুখবে কে?
বাধ্যগত প্রস্থান থেকে
তুমি ভালো থেকো, ভালোর দেয়ালে নিজেকে আগলে রেখো।

.
বিঃদ্রঃ কবিতার নামকরণ “মৃত্যু তেড়ে আসছে এই দিকে” নাম বদলিয়ে “যত্নে থেকো” নামকরণ করা হয়েছে।

দেবী ও কবি

21483

নিঃশ্বাসের উত্তাপে হৃদয় বিগলিত উম্মুল সন্তাপ
আদিম হিংস্রতায় বাস্তবতার প্রজ্বলিত রক্ত চক্ষু
জীবনের সিথানে জাত বিজাতের বুভুক্ষু হীনন্মন্যতা ;
প্রাণের নিগৃহীত অণুজীব কষ্ট ক্লেদ মেখে ফিরে আসে
আড়ালের নিন্দুক বার বার হেসে উঠে কটাক্ষে,
মানুষের জগতে মানুষের ভালোবাসা বড় অসহায়!

ফুট ফুটে আলোর ধারায় ফেরে রণপ্রভাতের স্বপ্নরা
পরম বিশ্বাসে পৃথিবীর সকল শৃঙ্খল ছিন্ন করে
ঝর্নার ছন্দে আত্মচেতনায় অনুভব করে পুরুষালী তেজ
উঠে দাঁড়ায় কবি-
হাত বাড়ায় দেবীর পাণে……
অধুনা সভ্যতার তীব্র টানাপোড়নের ধর্ম উপেক্ষা করে
মুখোমুখি হয় প্রজ্বলিত সূর্যের-
সত্যের দুর্জয় নেশায় উদ্দীপ্ত প্রেমের পঞ্জি-ভুত স্বপ্ন!

স্বদৃশ্য স্ফুটনে আকাশের বুক চিরে নামে আনন্দলোক
দেবী ও কবি আবদ্ধ অবিমৃষ্য আলিঙ্গনে, শিশির আবর্ত
রণ-বিম্ব পরিশুদ্ধ চেতনায় উজ্জ্বল, নবারুণ আশীর্বাদে।

.
💠 প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থ ” দেবী ও কবি” থেকে…

অক্ষত নেই কিছু

Screenshot

অক্ষত নেই কিছু
অক্ষত থাকেনা, থাকতে পারেনা। বেড়ে চলছে মাথা পিছু ঋণের বোঝা
আনুপাতিক হারে বাড়ছে ক্ষত, যন্ত্রণা! ধুলোর কাছে বৃক্ষের ঋণ!
ক্ষত ঢাকতে
বৃক্ষের কাছে ছায়ার ঋণ, শিশিরের কাছে ঘাসফুল, মেঘের কাছে বৃষ্টির ঋণ!
ক্লেদ ঝরাতে-
বোঝা পড়ার দিন আসে না- কখনো সীমাহীন আনন্দ, কখনো কঠিন কষ্টের ছুঁতো,
গুনতে গুনতে প্রহর যায় ভেসে…
ক্ষতের পর ক্ষত… ক্ষতের পর ক্ষত!…
অক্ষত নেই কিছুই। অক্ষত থাকেনা। থাকতে দেয় না। অন্তর জুড়ে গহন-
গহীন আস্তাকুড়ে পড়ে আছে প্রথম যৌবনের রঙ্গিন খাম, নিশিজাগা কবিতা, স্বাধীন চেতা স্বপ্ন!…
এসব ক্ষত শুকিয়েছে- মরে
মৃত্যুপুরীর দমবদ্ধ ঘরে জমেছে ক্রমবর্ধমান ভার; চাপা ব্যথা
আর বেড়েছে ঋণ- অন্ধকারের কাছে , ধুলো মলিন আড়ালের কাছে, কবরের মতন
নিস্তব্ধ মৌনতার ঋণ! গল্পের বাহিরে যে সব সত্য মিথ্যা, যে সব রঙ, রস, চন্দ্র মোহন
কোন রাতের ঋণে নিমজ্জিত – সে সব অব্যক্ত কথা।
যে উঠে আসতে চেয়েছিলো ক্ষতের ভেতর থেকে, প্রবীণ বালিহাঁসের সঙ্গীহীন ক্রন্দনের সাথে
মিশে থাকা নিবিড় গন্ধ থেকে, বয়ে চলা এক অন্তহীন ক্ষরণ থেকে।…
জীবনের স্কন্ধে জ্বলন্ত পিণ্ড বয়ে নিয়ে
যে অক্ষত নদী মোহনা খুঁজে খুঁজে এতটা কাল আমি ক্ষতের রচনা লিখে যাচ্ছি
আমি জানি না আমি কি করে শোধ করবো এই দহন ঋণ!…

দা উ দু ল ই স লা ম ।

মৃতরা যখন বাঁচতে শিখে

images-55

তুমি বেঁচে আছো সুখ বাহারে
দহন শেষে
মরেছি আমি অকথ্য অন্ধকারে।

এবং
দুঃখ আমাকে ঢেকে ফেলেছে
ধোঁয়া উঠা শীতে…কুয়াশার চাদরে।

আমরা দুজন কতকাল একসঙ্গে ছিলাম?
যতক্ষণ সময়ে
বড়জোর একটা পরিতৃপ্ত নিদ্রা ভোগ করা যায়!

এখন আবার
তেঁতে উঠেছে তোমার সঙ্গ ভুক!..
আমি ফিরবো না আলোর প্রহেলিকায়;
মৃতরা যখন বাঁচতে শিখে যায়
তখন আক্ষরিক হয়ে উঠে তাবত যতিচিহ্ন!…

দাউদুল ইসলাম
১৫/২/২২

বন ভোজন

ima

বন ভোজন।
আয়োজন করে ভোজনের পাঠ চুকে গেলে, আসেন শুনি- অরণ্য রোদন! কোন এক জাতিগত নিধনের কাহিনী। বিবর্ণ শূন্যতার বুকে অসংখ্য ভোজন সন্ধ্যার উল্লাস- ধ্বনি! রাক্ষসী করাতের ক্রমাগত ভোগ! যেভাবে উজাড় হতে হতে সবুজ দেহে বেঁধেছে নিঃসাড় স্নায়ুরোগ!

ক্ষয়ব্যাধি। … আর অপার দুর্ভোগ। আসেন, সুজন বন্ধু… বন ভোজনে। বসেন, সবুজের মনে। কিছু অবুঝ প্রজাতি এখনো টিকে আছে বিলীন অস্তিত্বে। এরা নিষ্কর্মার ঢেঁকি! তবুও
শক্তিধর শেকড় বিস্তৃত মাটিতে, এদের সমূলে নিধন প্রয়োজন! ভোজন সম্পন্নের জন্যে।
নতুবা- অরণ্যের নাগ উত্থিত হতে পারে আপনার নগর জীবনে। রূপ নগরে। যেভাবে আগর পোড়া গন্ধে দম বন্ধ হতে পারে, অথবা দম বন্ধ হলে আগর পোড়ে!…

বন ভোজন।। দাউদুল ইসলাম
২৬.১২.১৭

কবিতা ও প্রত্যয়

কবিতা আনবে মানবতা
কবিতাই রুখে দেবে
সাম্প্রদায়িকতা…

বিশ্ব কবিতা দিবসের শুভেচ্ছা সবাই কে…🌷🌷

FB_IMG_1647893360832

শত শতাব্দীর স্মৃতির মত প্রাণের কোঠরে আঁকড়ে রাখি জীবন বাক্য
হৃদয়গ্রাহী শব্দের নৈবদ্য, যৌবনের আধিক্য স্মর লুকিয়ে রাখি-
অজস্র কবিতার ভেতর; অক্ষরের পর অক্ষর সাজিয়ে আঁকি প্রত্যক্ষ স্বপন
শব্দের পাশে শব্দ স্থাপন করে গড়ে তুলি একান্ত সাম্রাজ্য… নিভৃত জীবন।
দিন -রাত এক করে ডুবে থাকি যেই অতল গহ্বরে
বসন্তের দাবী ছেড়ে বিগত জীবন কেটে গেছে কবিতার ঘোরে …..
জানতে পারতে যদি-
কোন এক নির্লিপ্ত প্রহরে পৃথিবীর পাঁজরে প্রবিষ্ট হতে হতে
তোমাদের অগোচরে বয়ে চলছে পৃথিবীর সবচেয়ে তীব্র খরস্রোতা নদী!
অথচ, আমি কোন জাত কবি নই; যদিও
চেতনার মর্মরে একটি অধরা সত্ত্বা ক্রমাগত খচ খচ করে চলে
কখনো বর্ণ মালার আদলে- কখনো পল্লবিত ছন্দের তালে, কখনো বা নীরব অশ্রু জলে…
আমার কবিতারা পড়ে থাকে মলাট বাধা ডায়েরীর পাতায়
পড়ে থাকে বেনামী ফুলের মত নৈশব্দের প্রান্তরে…
এই কবিতারাই একদিন জেগে উঠবে… দুরন্ত হয়ে ছুটবে
এই কবিতারাই একদিন পৌঁছে যাবে বাংলা একাডেমীর প্রাঙ্গণে, টি এস সি’র চত্বরে
পৌঁছে যাবে একুশের প্রভাত ফেরীর দীর্ঘ স্রোতে, আবৃত্তির মঞ্চে
শ্লোগান হয়ে মিশে যাবে তারুণ্যের কণ্ঠে, জড়ো প্রপাতে…
পৌঁছে যাবে লাঙ্গলে -জোয়ালে; কৃষকের হাতে ঘামের জোয়ারে
অভাগা জীবনের ক্রন্দন থামাতে একদিন এরাই হবে স্পন্দন;
শিশুর ঘুম, কিশোরের রুমঝুম… এই কবিতারাই হবে যৌবনের অগ্নিহার!
প্রেমের সঙ্গোপনে, খুনসুটি আলাপনে
রাগে- অনুরাগ , মান -অভিমানে কবিতাই ভাঙবে সমস্ত জড়তা;
জ্ঞানে বিজ্ঞানে সত্যের অবগাহনে –
ধর্মান্ধতা কাটিয়ে এই কবিতারাই রুখে দেবে সমস্ত সাম্প্রদায়িকতা।

.
কবিতা ও প্রত্যয় // দাউদুল ইসলাম

মৌন প্রচ্ছদ

FB_IMG_1645367092232
.. এভাবেই
অনন্তকাল পর উচ্চারিত হলো বধির গুঞ্জন, আর
প্রাগৈতিহাসিক কবিতা
ক্রমে ক্রমে জন্মনেয় যে সব বোধের অভিধান,
ধূসর পাণ্ডুলিপি… ছোঁয়ার আবেদন!..

বিস্তীর্ণ শস্যক্ষেত
কুয়াশার ঘোমটায় জড়োসড়ো অন্তিম গোধূলি
যেনো সদ্য রজঃস্বলার মতো গুটিসুটি লাজুকলতা।

দীর্ঘকাল খরার পর যেন অমিয় নরম তুষার
জ্যোতস্নার আলিঙ্গন মুখর শৈল্পিক রাত!…
পূনরায় উচ্চকিত ধ্বনি, স্খলিত-স্বর….
অশেষ সঙ্গমের ধারাপাত!

…… তারপর
মধ্য নিশিথের গল্প আঁকা মৌন প্রচ্ছদ বুকে জড়িয়ে
একটি রক্তিম লালিমা মাখা সকালের অপেক্ষা!…

২০/২/২২

অধরা তাপসী

9573494

অধরা তাপসী, হে প্রিয়তমা আমার
দেখো ঐ অকূল প্রান্তর থেকে, ছুটে আসছে দুর্মার অন্ধকার;
দেখো ঐ হিজলের বুকে বিঁধে আছে অপয়া বিষাদাগার,
তপ্ত বিলাসী প্রজাপতির ডানা জোড়ার বর্ণাঢ্য কারুকাজে
জমেছে ধুলোর আস্তরণ, বিস্মৃতির বিরহী সুর বাজে।
অলীক অহংকারে
দূর আকাশে মেঘের বনে ঠুমরীর গর্জন বজ্র হুংকারে
শুনো আমার আর্ত চিৎকার!

যে আকুতি ঘিরে কেঁদেছি বার বার, দেখো সেই ঘোরে
ডুবে আছে সহস্র স্বপন তোমার -আমার। ক্রুদ্ধ স্মরে
যে কথা বলে যাই, দুঃস্বপ্নের গহ্বরে তার প্রতিধ্বনি শুনতে পাই;
এই সেই মিনতি
বিগলিত অলকানন্দা হয়ে তোমার চরণে দিয়েছে আরতি; বৃন্তচ্যুতে
যেই উত্তাপ তোমাকে বিস্ফোরণ করেছে টগবগে লাভার মতন,
এই সেই শীতল দৃষ্টি; যেই চোখে পেতে পারো এক পশলা জীবন।

অধরা তাপসী // দাউদুল ইসলাম