বিশ্বত্রাস করোনা! পৃথিবী জেলখানা… যাত্রাদলের অবক্ষয় (পঞ্চম পর্ব)

বিশ্বত্রাস করোনা! পৃথিবী জেলখানা।
যাত্রাদলের অবক্ষয় (পঞ্চম পর্ব)

তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

যাত্রাকে তা হলে বাঁচাবে কে? পুঁজি? একটু-আধটু হলেও, যাত্রা-পুনরুজ্জীবনে সহযোগিতার হাত কিন্তু বাড়িয়েছিল ব্যবসা সাম্রাজ্য। মাল্টিন্যাশনাল। তাঁদের প্ররোচনায় যাত্রার সংলাপে গুঁজে দেওয়া হচ্ছিল ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন। কী ভাবে? ধরা যাক, বৃদ্ধ স্বামী নিরুদ্দেশ। অনেক দিন পরে ঘরে ফিরলেন তিনি। তাঁকে দেখে ছুটে এলেন স্ত্রী। ‘ওগো কোথায় ছিলে?’ স্বামীর উত্তর, ‘সে অনেক কথা, পরে বলছি, আগে জল দাও।’

শুনে স্ত্রীর জবাব, ‘জল খাবে কেন গো, তোমার জন্য অমুক কোল্ড ড্রিংক আনছি!’ বা, বাচ্চা ছেলে অসুস্থ। তার মা স্বামীর উদ্দেশে বললেন, ‘ছেলিডারে এট্টু তমুক এনার্জি ড্রিংক খাওয়ানি লাগে। তা পাই কই?’ দরিদ্র স্বামী অনেক কষ্টে জোগাড় করে আনেন বলবর্ধক পানীয়টি এবং সারা স্টেজ ঘুরে স্ত্রীকে দেখাতে থাকেন।

স্পটলাইটের আলো পড়ে বোতলের গায়ে ব্র্যান্ডের উপর। অবশ্য, বেশি দিন এগোয়নি এই ব্যবস্থা। মরা গাঙে যে আর কখনও বান আসবে না, সেটা বুঝে গিয়ে ব্র্যান্ড মালিকরা হাত গুটিয়ে নিয়েছেন যাত্রা থেকে।

এখন কোনও আশ্চর্য নতুন এনার্জি ড্রিংক যাত্রাকে আবার চনমনে করে তুলবে, সে আশা কারও নেই। বাঙালির আদরের এক শিল্প, অতএব, এখন দাঁড়িয়ে লাস্ট সিনে।

যবনিকার অপেক্ষায়।
৫০০ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে নীরবে বেঁচে আছে যাত্রাপাড়া। জনপ্রিয়তার নিরিখে কি পিছিয়ে বাংলার এই আদি লোকসংস্কৃতি? যাত্রার জন্মভিটে চিৎপুরে চোখ পেতে যা দেখা গেল, তার নির্যাস।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

2 thoughts on “বিশ্বত্রাস করোনা! পৃথিবী জেলখানা… যাত্রাদলের অবক্ষয় (পঞ্চম পর্ব)

  1. চলতি ধারাবাহিকের পঞ্চম পর্ব পড়লাম। ধন্যবাদ লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।