শরতের আগমনী …… সোনাঝরা রোদ নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা এসেছে শরৎ (পঞ্চম পর্ব)

শরতের আগমনী …… সোনাঝরা রোদ
নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ (পঞ্চম পর্ব)

শিউলি আর কাশ ফুলের মিলিত প্রকাশ মানেই এটা শরৎকাল। আর শরৎকাল মানেই শিউলির গন্ধ, কাশ ফুলের মেলা, সব মিলিয়ে আকাশে বাতাসে উৎসবের ছটা। শোনাযায় মায়ের পদধ্বনি.. তাই, প্রত্যেক বাঙালির কাছে শিউলি ফুল, কাশ ফুল আর শরৎ কালের একটা আলাদাই গুরুত্ব আছে। কারণ, সর্বপ্রথম এরাই জানান দেয় পুজো আসছে। আর, বেশি দেরি নেই। দরজায় কড়া নাড়ল বলে, এবার আনন্দের দিন শুরু।

শিউলিকে স্বর্গের ফুল বলা হয়। প্রভু কৃষ্ণ স্বর্গ থেকে এই ফুল মর্তে এনেছিল। আবার সারা রাত গাছে থেকে ভোরে ঝরে যাওয়ায় এই ফুল নিয়ে আছে নানা গল্প।

এক রাজকুমারী সূর্যকে ভালোবেসে না পেয়ে আত্মহত্যা করে ফুল গাছে পরিণত হয়। সকাল বেলায় যেন সূর্যের মুখ না দেখতে হয়, তার জন্য সূর্য উঠার আগেই ঝরে পরে গাছ থেকে। রাজকন্যার নাম ছিল পারিজাতিকা। এই জন্য শিউলির আরেক নাম পারিজাত।

কৃষ্ণের দুই স্ত্রী সত্যভামা ও রক্ষিণীর খুব ইচ্ছে তাদের বাগান পারিজাতের ঘ্রাণে আমোদিত হোক। কিন্তু পারিজাত তো স্বর্গের শোভা ! কৃষ্ণ স্ত্রীদের খুশি করতে চান। তাই লুকিয়ে স্বর্গের পারিজাত বৃক্ষ থেকে ডাল এনে বাগানে রোপণ করেন।

গাছ থেকে ফুল ঝরে পড়ে সুগন্ধ ছড়ায়। স্বর্গের রাজা ইন্দ্র এ ঘটনা জেনে রেগে যান। তিনি কৃষ্ণকে শাপ দেন, পারিজাত ফুল দেবে ঠিকই কিন্তু বীজ থেকে নতুন প্রাণের সঞ্চার হবে না।

বাংলা কবিতার আসরের সকল শ্রদ্ধেয় কবিগণকে জানাই শারদ-শুভেচ্ছা। বাংলা কবিতা-আসরের জয় হোক, বাংলা কবিতার জয় হোক, কবিদের জয় হোক। সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। জয়গুরু!

নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা
এসেছে শরৎ (পঞ্চম পর্ব)

শারদ প্রভাতে তরুর শাখাতে
পাখি সব গান গায়,
কমল কাননে মধু আহরণে
দলে দলে অলি ধায়।

পথের দুপাশে তৃণদল হাসে
শিশিরের বিন্দু ঝরে,
নিশির শিশির পড়ে ঝিরঝির
রোদে ঝিকমিক করে।

সোনা রোদ ঝরে আঙিনার পরে
কচি কচি দূর্বাঘাসে,
মাধবী মালতী কেতকী ও যুথী
টগর, শিউলি হাসে।

অজয়ের চরে সারাদিন ধরে
যাত্রীদের কোলাহল,
ধবল বলাকা থাকে বসে একা
উড়ে শালিকের দল।

শারদ আকাশে সাদা মেঘ ভাসে
শুনি আগমনী গান,
পূজা এলো কাছে হৃদয় যে নাচে
ভরে ওঠে মনপ্রাণ।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

1 thought on “শরতের আগমনী …… সোনাঝরা রোদ নীল আকাশের আঙিনায় আমার কবিতা এসেছে শরৎ (পঞ্চম পর্ব)

  1. বলতে গেলে প্রায়শঃই আপনার কাছ থেকে পাঠক আকৃষ্ট করার মতো পোস্ট উপহার পাই। বোরিং লাগে না, বরং ভালোই লাগে। নিরন্তর শুভেচ্ছা কবি মি. ভাণ্ডারী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।