বইমেলায় কি কি বই বিক্রি হয়? কি কি বইয়ের স্টল বেশি। কবিতা গল্প উপন্যাস প্রবন্ধ আর সাহিত্যের বই। আর অন্যান্য বই। তবে অন্যান্য বই খুব সামান্য বিক্রি হয়।
তার মানে বইমেলায় প্রায় আশি নব্বই ভাগ সাহিত্যের বই থাকে। সাহিত্যিক ও সাহিত্য প্রকাশকরা সেই সব বই বিক্রির জন্য উঠে পড়ে লাগে।
আচ্ছা সাহিত্য কারা পড়ে? এবং কখন পড়ে? যারা স্কুলে কলেজে পড়াশুনা করে। যারা সাহিত্য চর্চা করে। যারা সাহিত্য ভালোবাসে এবং অবসর পায়। এরকম মানুষ পাঁচ দশ শতাংশের বেশি নয়।
এর বাইরে বিপুল সংখ্যক মানুষ আছেন যারা সাহিত্য ছাড়াও অন্য অনেক রকমের বই কেনেন পড়েন পড়তে বাধ্য হন। ধর্মোপলব্ধি জীবনচর্চা বিজ্ঞান স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি আইন চিকিৎসা নলেজ ইত্যাদি বই। এই সব বই কিনতে বইমেলায় খুব কম লোক যায়। কিন্তু এইসব বই সারা বছর সব সময় প্রচুর বিক্রি হয়। প্রয়োজনে ও জীবনের টানে কিনতে হয় ও বিক্রি হয়।
আবার এইসব বইয়ের বিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকে চার পাঁচজনকে বই হাতে নিয়ে দাঁড়াতে হয় না? বা দাঁড়ানোর দরকার হয় না। কিংবা বইমেলাতে এইসব বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করার প্রয়োজন হয় না?
যে যার নিজস্ব তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ, দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ইত্যাদি তো ঠিক আছে তার সাথে বইমেলা হোক জীবনের অঙ্গ জীবনের বই নিয়ে।
ক’টা প্রবন্ধের বই বের হয়? ক’টা চেতনার ধারাপাতে আলোচনামূলক লেখা বের হয়?
তাছাড়া সিক্স সেভেন থেকে বিএ বিএসি পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থী নিজের কঠোর শিক্ষাগত অধ্যয়নের পাশাপাশি রবি শরৎ বঙ্কিম পেরিয়ে কত আর আধুনিক কবিতা গল্প পড়বে?
ফেসবুক আসার পরে আবার কতশত কবি সাহিত্যিক। বিখ্যাত তো আছেই তার সাথে আরও কত আরও বিখ্যাত আসছে! যারা শুধু নিজের ওয়ালে শুধু নিজের বইয়ের বিজ্ঞাপন দিয়েই চলেছে। দিয়েই চলেছে। গল্প আর কবিতা, কবিতা আর গল্প। এই এত কপি বিক্রি হল, এই দ্বিতীয় সংস্করণ শেষ হল ইত্যাদি ইত্যাদি। ভাবা যায়!
তারপরে ধরুন আমাদের কর্মজীবনে নিজের কাজের বাইরে কিছু জীবন চর্চা কিছু আলোচনা কিছু বিশ্লেষণ তাও ঠিক আছে। কিন্তু গল্প কবিতার বই আমাদের মত সাধারণের কাছে নৈব নৈব চ।
যদি সাহিত্য ভালোটালোবাসে তো তাহলে গল্প কবিতা ঠিক আছে। না হলে যদি সে এক দু পিস বই কেনেও তা সে আলমারিতে বা কেজি দরে বিক্রির জন্য রেখে দেয়।
তাহলে বইমেলায় বইপ্রেমীরা বই কিনে জীবন রচনায় কতটা ব্রতী? বইয়ের লেখক কি শুধুই কবি সাহিত্যিক? আবার উল্টো দিক করে ভাবছে, যে জীবন সচেতনতার জন্য আমরা কবিতা গল্প লিখি। সেই জীবন সচেতনতা যারা সত্যিকারের জীবন রচনার কাজ করে তাদের কাছে পৌছোয় না। তারা সাহিত্য পড়ে না। সাহিত্য পড়ার সময় পায় না। তাদের কাছে পৌঁছনোর জন্য সাহিত্যের পাশাপাশি কবি সাহিত্যিকরা যেন নিজের কাজে নিজে ফাঁকি না দেয়। তাহলে সাহিত্য রচনা বৃথা হয়ে যাবে।
মাস্টার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার পুলিশ প্রশাসন ক্ল্যারিক্যাল যে যেখানে থাকুন নিজের কাজ, জীবনের কাজ যত করবেন তত আপনার রচনা সাহিত্য জীবনমুখী হবে।
6 thoughts on “বইমেলা”
মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।
আমার খুব ইচ্ছে আছে একদিন আমিও বই প্রকাশ করবো, তবে কেউ কিনবেনা ভেবে আগাতেই পারিনা…
বই আর বইয়ের গন্ধ।
ভাল থাকবেন
Good post
Thanks
ফেসবুকে কতশত কবি সাহিত্যিক। বিখ্যাতদের সাথে সাথে আরও আরও বিখ্যাত আসছে! যারা শুধু নিজের ওয়ালে শুধু নিজের বইয়ের বিজ্ঞাপন দিয়েই চলেছে। কথাটি যেমন সত্য … তেমনি আনন্দের পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক বিক্রয় কার্যক্রম শেষ হতেই মলিন মুখ দেখার সুযোগও হয়েছে। তারপরও চলছে।
তাই তো হয়
ধন্যবাদ
ভাল থাকবেন ।