কখনো আমি কেউ ছিলাম না

আমি কেউ নই। কখনো আমি কেউ ছিলাম না।

সমুদ্রের ফেনায়িত মদে ভাঙ্গে প্রবাল-প্রাচীর
আমি তার কিয়দংশ;
মৃত;
ভঙ্গুর;
সামান্য।

রক্তস্রোতের মাঝে আদিমতম যাযাবর নেশা
তরঙ্গ-স্পন্দনে শিরায় শিরায় মাদলের বোল বেজে ওঠে; তবু
নিবিড় সমুদ্র-দর্শনে ব্যর্থ
তিন ঢেউ পেরুনো হয়না
প্রবল জোয়ার-জলোচ্ছ্বাসে বালুকাবেলায় ফিরে আসি
বার বার।
ছুটে চলা কেবল গন্তব্যে পৌঁছানো নয়; অভ্যস্ত পদক্ষেপ।
মধ্যাহ্নের খররোদে অনায়াস-রপ্ত পদযাত্রা শেষে
ছায়াবীথি
অশ্বত্থের মূলে ঠান্ডা ঘাস
তরুছায়ে বৃন্তচ্যুত দু’একটি বর্ণগর্বী পারিজাত;

কেউ অপেক্ষায় থাকেনা।

আমি কিছু নই। কিছুই হতে চাইনি।
না বাজীর রেসের ঘোড়া
না ইতিহাসের পাতায় লেখা এক নাম
লোকশ্রুত-কিংবদন্তী; কিছু নয়।

একক-বিশুদ্ধ আমাকে চেয়েছি
আমি
শুদ্ধতম-বিশুদ্ধতায় আমি

কোনটি সত্য ছবি-
লহর-মগ্ন জলের অস্থির কারুকাজ?
দর্পণের ক্ষীণ দোদুল্যমানতা?
নাকি দেয়ালের ফ্রেমে ঈষৎ হাসিমাখা স্থিরচিত্রের উদ্ভাস;
দ্বন্দ্ব ঘুচেনা…..

আমি নেই……..
না আয়নায়;
না জলে;
না স্থিরচিত্রে…………।

.
(বিষাদের প্রখর বেলুনগুলো, ২০০৯)

2 thoughts on “কখনো আমি কেউ ছিলাম না

  1. আপনার লিখা পাঠে অসাধারণ স্নিগ্ধতার আবেশে মন পূর্ণ হয়ে যায় আপা। সালাম। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

  2. সুন্দর উপস্থাপন। 
    অনবদ্য রচনা। 
    বেশ লাগলো ।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।