কে আছে – আছো কেউ?

রাতের সমুদ্রের সামনে ঠাকুমা আমাকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল ছেলেবেলায়। অন্ধকারে ছুটে আসা ঢেউগুলো দেখে মনে হয়েছিল জমাট কালো দলমার চলমান পাহাড় ধেয়ে আসছে। তার যেন শেষ নেই। তারা করাল শুঁড়ে জড়িয়ে আমায় দূরে ছুঁড়ে ফেলে চূর্ণ করে দেবে একেবারে। ভয়ে ছুটে পালিয়ে এসেছি সমুদ্র সৈকত থেকে। স্বপ্নেও সে দৃশ্য দেখে ঘুম ভেঙে গেলে ঠাকুমা আলো জ্বেলে দিয়ে জড়িয়ে ধরে ভয় তাড়াত আমার।

আজও যেন মনে হচ্ছে, সারা পৃথিবী জুড়ে নিরেট অন্ধকারের অতিকায় ঢেউ ছুটে আসছে ক্রমাগত, আর আছড়ে পড়ছে অনিঃশেষ। হাঁসফাঁস করে বাতাসে ভেসে উঠতে না উঠতে আবার -! দিগ্বিদিক বিরাট সেই কালো পাহাড় আমাকে চাপা দিচ্ছে, গুঁড়িয়ে যাচ্ছি কখনও। অন্ধকারের ভেতর অন্ধের মতো হাতড়াচ্ছি – এখান থেকে কোথায় পালাব?

কোথাও এতটুকু আলো নেই। জ্বেলে দেবার কেউ নেই। অন্ধকার ঘর থেকে ছুটে পালিয়ে এলে বাইরে শূন্য রোয়াক। সেখানে ঝরে পড়ছে বালি, পলেস্তারা। … এরপর… কোথায়?

পালাতে পালাতে বারবার এসে পড়ি অন্ধকার সমুদ্রেরই সামনে। তবে কি এর থেকে পরিত্রাণ নেই, পালাবার পথ নেই? ভবিতব্যের হাতে তবে এভাবেই মার খেতে হবে? নাকি কেউ আসবে বরাভয় নিয়ে আর আলো জ্বেলে দেবে? কে আছে – আছো কেউ?

1 thought on “কে আছে – আছো কেউ?

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।