স্বপ্ন দেখে বলেই মানুষ বাঁচে, আশা আছে বলেই মানুষ পথ চলে। ভালোবাসা আছে বলেই – মানুষ, প্রতিবাদ প্রতিরোধে ফেটে পড়ে। আমার ভালোবাসা- স্বদেশ প্রেম, ঈশ্বরের আরাধনা, তাৎপর্যহীন জীবনের অর্থ খুঁজে ফেরা। প্রকৃতি সৃষ্টির উৎস উৎসবে পরিণত হয়। জীবন গহীন গাঙের এক ডুব সাঁতার দিয়ে চলে। খাঁ খাঁ প্রান্তর, বানভাসি জনপদ বিকেলে শুয়ে থাকা সোনালী রোদ্দুর অবিশ্বাস্য এক টানে আমাকে মাতায়। বৃদ্ধ গরাদ সজ্জিত গৃহকোণ নিরাপদ আশ্রয় আমাকে বৃত্তাবদ্ধ করে। মানুষকে আমার ভয়। ভয়ে ভয়ে – ভীতসন্ত্রস্ত আমি।
শুধু স্বপ্ন আছি বলে বেঁচে আছি। প্রতিকূলতা আর অবিমিশ্র ছলনায় দিশাহারা আমি। তাই পিছিয়ে পড়ি, মন্তব্য শুনি, অযোগ্য বিবেচিত হই। নিঃসঙ্গতা গ্রাস করে আমার আশপাশ। কি ফিটফাট হাতে জপমালা, মনের কপাট রুদ্ধ বদ্ধ প্রাণ। সমাগম চারিদিক। সব উৎসবের প্রথম কাতারের সাথে উঠি বসি, করতালি দেয় মুহুর্মুহু। এ সবের সাথেই ক্ষয় হয় জীবন। যার যা খুশি … আমি থাকি আমার ভেতর। স্বপ্ন দেখি ভালোবাসি বেঁচে থাকি মহাশূন্যের ক্ষুদ্র এক চরের উপর। অবস্থাটা এমন আমাদের কেউ কোন কালে এদেশে জন্মেনি। যেন তারা এদেশের নয়। কেউ কোন কালে শাক-মাছ-ভাত খায়নি। পিঠা আটা নাড়কেল পুলি শোনেনি কখনো। ভাবে- খাল-বিল, নদী নালা এ জংলা ভূমি- অস্পৃশ্য- অচ্ছুৎ এ জমিন পরিত্যাজ্য। অথচ কালান্তর থেকে এই ভূমিতে- পা রেখেছে সংখ্যাহীন ভিনদেশী। বর্গির মতো, এই ব-দ্বীপের উপর। বীভৎস ভণ্ডামীতে ভরা আশপাশ। জ্ঞানপাপী, রাজ নেতা মেরুদণ্ডহীন বুদ্ধিজীবী মধ্য মেধায় সয়লাব দেশ প্রীতি। বুঝেও বোঝে না কিছু।
আমি ভূমিসূত। এই খানে জন্ম আমার সওয়ারী আসিনি দূর থেকে। আমাকে আমার দেশে এসে আমার ক্ষুদ্রতা নিয়ে উপহাস করো নিরন্ন কাঙাল তুমি দূরদেশী যতো।