তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়;
মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি
মোর গেহখানি রহিয়াছে ভরি,
মায়ের বুকেতে, বোনের আদরে, ভাইয়ের স্নেহের ছায়,
তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,
ছোট গাঁওখানি – ছোট নদী চলে, তারি একপাশ দিয়া,
কালো জল তার মাজিয়াছে কেবা কাকের চক্ষু নিয়া;
ঘাটের কিনারে আছে বাঁধা তরী
পারের খবর টানাটানি করি;
বিনাসুতি মালা গাথিছে নিতুই এপার ওপার দিয়া;
বাঁকা ফাঁদ পেতে টানিয়া আনিছে দুইটি তটের হিয়া।
নিমন্ত্রণ – পল্লী কবি জসীমউদ্দীন।
____________________
youtu.be/7P4QcN9kN7M
জসীমউদ্দীন (জানুয়ারি ১, ১৯০৩ – মার্চ ১৩, ১৯৭৬) একজন বিখ্যাত বাঙালি কবি। তিনি বাংলাদেশে ‘পল্লী কবি’ হিসেবে পরিচিত। তাঁর লেখা কবর কবিতাটি বাংলা সাহিত্যে এক অবিস্মরণীয় অবদান। পুরো নাম জসীমউদ্দীন মোল্লা হলেও তিনি জসীমউদ্দীন নামেই পরিচিত।
জীবন বৃত্তান্ত :
তিনি ১৯০৩ সনের পহেলা জানুয়ারি ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার বাড়ি ছিলো একই জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। বাবার নাম আনসার উদ্দিন মোল্লা। তিনি পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন। মা আমিনা খাতুন ওরফে রাঙাছুট। জসীমউদ্দীন ফরিদপুর ওয়েলফেয়ার স্কুল, ও পরবর্তীতে ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে পড়ালেখা করেন। এখান থেকে তিনি তার প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১৯২১ সনে উত্তীর্ন হন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি. এ. এবং এম. এ. শেষ করেন যথাক্রমে ১৯২৯ এবং ১৯৩১ সনে। ১৯৩৩ সনে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রামতনু লাহিড়ী গবেষণা সহকারী পদে যোগদেন। এরপর ১৯৩৮ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৯ সনে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মান সূচক ডি লিট উপাধিতে ভূষিত করেন। তিনি ১৩ মার্চ ১৯৭৬ সনে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাকে তার নিজ গ্রাম বিমলগুহে সমাধিস্থ করা হয়।
রচনাবলী সমগ্রঃ
কাব্যগ্রন্থঃ *রাখালী। (১৯২৭) *নকশী কাঁথার মাঠ। (১৯২৯) *বালু চর। (১৯৩০) *ধানখেত। (১৯৩৩) *সোজন বাদিয়ার ঘাট। (১৯৩৪) *হাসু। (১৯৩৮) *রঙিলা নায়ের মাঝি। (১৯৩৫) *রুপবতি। (১৯৪৬) *মাটির কান্না। (১৯৫১) *এক পয়সার বাঁশী। (১৯৫৬) *সকিনা। (১৯৫৯) *সুচয়নী। (১৯৬১) *ভয়াবহ সেই দিনগুলিতে। (১৯৬২) *মা যে জননী কান্দে। (১৯৬৩) *হলুদ বরণী। (১৯৬৬) *জলে লেখন। (১৯৬৯) *কাফনের মিছিল। (১৯৮৮)
নাটকঃ *পদ্মাপার। (১৯৫০) *বেদের মেয়ে (১৯৫১) *মধুমালা। (১৯৫১) *পল্লীবধূ। (১৯৫৬) *গ্রামের মেয়ে। (১৯৫৯) *ওগো পুস্পধনু। (১৯৬৮) *আসমান সিংহ। (১৯৮৬)
আত্মকথাঃ *যাদের দেখেছি। (১৯৫১) *ঠাকুর বাড়ির আঙ্গিনায়। (১৯৬১) *জীবন কথা। (১৯৬৪) *স্মৃতিপট। (১৯৬৪)
উপন্যাসঃ * বোবা কাহিনী। (১৯৬৪)
ভ্রমণ কাহিনীঃ *চলে মুসাফির। (১৯৫২) *হলদে পরির দেশে। ( ১৯৬৭) *যে দেশে মানুষ বড়। (১৯৬৮) *জার্মানীর শহরে বন্দরে। (১৯৭৫)
সঙ্গীতঃ * জারি গান। (১৯৬৮) * মুর্শিদী গান। (১৯৭৭)
অন্যান্যঃ *বাঙালির হাসির গল্প। *ডালিমকুমার। (১৯৮৬)
পুরস্কার প্রাপ্তিঃ *প্রেসিডেন্টস এওয়ার্ড ফর প্রাইড অফ পারফরমেন্স ১৯৫৮। *একুশে পদক ১৯৭৬। *স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ১৯৭৮ (মরণোত্তর)। *১৯৭৪ সনে তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন। *রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি. লিট ডিগ্রি (১৯৬৯)।
তথ্যসূত্র: বাংলা উইকিপিডিয়া।
পূর্ণ চিত্তে এই মহীরূহ এর বিদায়ী দিনে শব্দনীড় পরিবার জানায় বিনম্র শ্রদ্ধা।
বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই কবির বিদায়ী দিনে।
আমি কবির বাড়ির পাশেই থাকি
আপনি তাঁর প্রতিবেশী জেনে যারপরনাই আনন্দিত হলাম প্রিয় শ্রদ্ধেয়।
পূর্ণ চিত্তে এই মহীরূহ এর বিদায়ী দিনে আমরা জানাই আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা।
ও বাবু সেলাম বারে বার,
আমার নাম গয়া বাইদ্যা বাবু,
বাড়ি পদ্মা পার।
মোরা পঙ্খি মারি পঙ্খি ধরি মোরা
পঙ্কি বেইচা খাই-
মোদের সুখের সীমা নাই,
সাপের মাথার মণি লয়ে মোরা
করি যে কারবার।
এক ঘাটেতে রান্ধি-বাড়ি মোরা
আরেক ঘাটে খাই,
মোদের বাড়ি ঘর নাই;
সব দুনিয়া বাড়ি মোদের
সকল মানুষ ভাই;
মোরা, সেই ভায়েরে তালাশ করি আজি
ফিরি দ্বারে দ্বারে;
বাবু সেলাম বারে বার।
youtu.be/cjVniFh2zVk
কবির আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। আমিন
বাংলা সাহিত্য যতদিন বেঁচে থাকবে কবি জসীমউদ্দীন এর নাম ভাস্বর থাকবে।
পূর্ণ চিত্তে এই মহীরূহ এর বিদায়ী দিনে শব্দনীড় পরিবার জানায় বিনম্র শ্রদ্ধা।
পূর্ণ চিত্তে এই মহীরূহ এর বিদায়ী দিনে শব্দনীড় পরিবার জানায় বিনম্র শ্রদ্ধা।
তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,
পল্লী বাংলার অপরূপ রূপ এঁকে গেছেন যা আর কোনদিন আসবে না!
ছোট গাঁওখানি – ছোট নদী চলে, তারি একপাশ দিয়া,
কালো জল তার মাজিয়াছে কেবা কাকের চক্ষু নিয়া;
যে যায় সে যায় ফেরে না কেউ।
বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই প্রিয় কবিকে।
পল্লীকবি জসীমউদ্দীন থাক আমাদের হৃদয়ে।
এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।
এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,
সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া দিল কারা।
কবির মহাপ্রয়াণ দিবসে কবির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ।
সালাম জানবেন মুরুব্বী ।
কবির মহাপ্রয়াণ দিবসে আমাদের সকলের শ্রদ্ধাঞ্জলি।