সূর্যসেন, মাষ্টার দা। ব্রিটিশ ভারতের প্রখ্যাত বিপ্লবী। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনসহ বহুবিধ বিপ্লবের অধিনায়ক। এঁর পুরো নাম সূর্য কুমার সেন। সংক্ষেপে সূর্যসেন নামে অধিক পরিচিত। তবে মাষ্টার দা নামে সহযোদ্ধাদের কাছে পরিচিত ছিলেন। সূর্য সেন (জন্ম: ২২ মার্চ, ১৮৯৪ – মৃত্যু: ১২ জানুয়ারি, ১৯৩৪) (ইংরেজি: Surya Sen) বা সূর্যকুমার সেন, ডাকনাম কালু, যিনি মাস্টারদা নামে সমধিক পরিচিত। ভারত উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব। পূর্ববঙ্গে জন্ম নেয়া এই বাঙালি বিপ্লবী তৎকালীন ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন এবং নিজ জীবন বলিদান করেন।
কলকাতা মেট্রো সূর্য সেনের স্মরণে বাঁশদ্রোণী মেট্রো স্টেশনটির নামকরণ করেছে “মাস্টারদা সূর্য সেন মেট্রো স্টেশন”। এছাড়া তাঁর সম্মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি করে আবাসিক হলের নামকরণ করা হয়।
জন্ম ও শৈশব:
সূর্য সেন ১৮৯৪ সালের ২২ মার্চ চট্টগ্রামের রাউজান থানার নোয়াপাড়ায় অর্থনৈতিক ভাবে অস্বচ্ছল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম রাজমনি সেন এবং মাতার নাম শশী বালা সেন। রাজমনি সেনের দুই ছেলে আর চার মেয়ে। সূর্য সেন তাঁদের পরিবারের চতুর্থ সন্তান। দুই ছেলের নাম সূর্য ও কমল। চার মেয়ের নাম বরদা সুন্দরী, সাবিত্রী, ভানুমতি ও প্রমিলা। শৈশবে পিতা মাতাকে হারানো সূর্য সেন কাকা গৌরমণি সেনের কাছে মানুষ হয়েছেন। সূর্য সেন ছেলেবেলা থেকেই খুব মনোযোগী ছাত্র এবং ধর্ম ভাবাপন্ন গম্ভীর প্রকৃতির ছিলেন।
শিক্ষা জীবন:
তাঁর প্রথম স্কুল ছিল দয়াময়ী উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরে তিনি নোয়াপাড়া উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। এরপর তিনি ন্যাশনাল হাই স্কুলে ভর্তি হন। সূর্য সেন ১৯১২ সালে চট্টগ্রামের নন্দনকাননে অবস্থিত হরিশদত্তের ন্যাশনাল স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করে চট্টগ্রাম কলেজে এফ. এ.-তে ভর্তি হন। সে সময় আই.এ বা বর্তমানের এইচএসসি পরীক্ষার পরিবর্তে ফার্স্ট আর্টস বা এফ. এ. পরীক্ষার নিয়ম ছিল। চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এফ. এ. পরীক্ষায় সাফল্যের সাথে পাশ করে তিনি একই কলেজে বিএ-তে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু তৃতীয় বর্ষের কোন এক সাময়িক পরীক্ষায় ভুলক্রমে টেবিলে পাঠ্যবই রাখার কারণে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ থেকে বিতাড়িত হন। ফলে, তাঁকে বহররমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে বিএ পড়তে যেতে হয়। ১৯১৮ সালে তিনি বহররমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বিএ পাশ করেন এবং চট্টগ্রামে ফিরে এসে ব্রাহ্ম সমাজের প্রধান আচার্য্য হরিশ দত্তের জাতীয় স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। অসহযোগ আন্দোলনের সময় বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে গেলে তিনি দেওয়ানবাজারের বিশিষ্ট উকিল অন্নদা চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত অধুনালুপ্ত ‘উমাতারা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে’ অংকের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এসময় বিপ্লবী দলের সাথে তাঁর সম্পর্ক গভীরতর হয়ে ওঠে এবং শিক্ষকতা করার কারণে তিনি ‘মাস্টারদা’ হিসেবে পরিচিত হন।
বিবাহ:
বিপ্লবী ভাব ধারায় দীক্ষিত সূর্য সেন দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকে একমাত্র তপস্যা হিসেবে নিয়েছিলেন। তাই তিনি বিবাহ-বিরোধী ছিলেন। কিন্তু বিএ পাশ করে চট্টগ্রামে আসার পর থেকেই তাঁর বিবাহের কথাবার্তা অভিভাবকরা তোলেন। অবশেষে তাঁর বড় ভাই শিক্ষক চন্দ্রনাথ সেন (সহোদর নয়) ও অন্যান্য আত্মীয়দের বিশেষ অনুরোধে ১৯১৯ সালে তিনি চট্টগ্রামের কানুনগো পাড়ার নগেন্দ্রনাথ দত্তের ষোল বছরের কন্যা পুষ্প দত্তকে বিয়ে করেন। আত্মীয়-স্বজনের চাপে বিয়ে করলেও মাস্টারদার মনে এ ধারণা বলবৎ ছিল যে, বিবাহিত জীবন তাকে কর্তব্য ভ্রষ্ট করবে, আদর্শচ্যুত করবে। তার ফলে স্ত্রীর সংগে একদিন তিনি কথা পর্যন্ত বলেন নি। বিবাহের তৃতীয় দিনে হিন্দুদের মধ্যে যে ফুলশয্যায় প্রথা প্রচলিত আছে, সেদিন তিনি তাঁর বৌদিকে বলেন, তিনি স্বপ্নে দেখেছেন স্ত্রীর সংগে সহবাসে তাঁর মৃত্যু অনিবার্য। তাই তিনি সেদিনই গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরে চলে আসেন এবং তারপর স্ত্রীর সাথে আর কোনদিন দেখা করেন নি।
১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে গান্ধীজী স্বরাজ এনে দেওয়ার জন্য বিপ্লবীদের কাছ থেকে এক বৎসরের সময় চেয়ে নেন। তৎকালীন বিপ্লবীরা অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী না হলেও গান্ধীজির কথায় অনেকেই সহযোগিতা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত অহিংস আন্দোলন এক বৎসরের ভিতর ভারতের স্বরাজ আনতে ব্যর্থ হলে বিপ্লবীরা আবার সশস্ত্র বিপ্লবের পথ বেছে নেন। অসহযোগ আন্দোলনের সময় স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় তিনি জাতীয় বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। এবং বিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষকতার কাজ শুরু করেন। এভাবেই তিনি খ্যাত হন মাস্টারদা নামে। এই বিদ্যালয়টিই পরে তাঁর বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।
১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই ডিসেম্বর চট্টগ্রাম শহরে একপ্রান্তে বাটালি পাহাড় এলাকায় সরকারি রেলের টাকা লুণ্ঠন করে। এই লুণ্ঠনে অংশগ্রহণ করেন অনন্ত সিং, দেবেন দে ও নির্মল সেন। অম্বিকা চক্রবর্তী ও দলিলুর রহমান রেল ডাকাতির সতের হাজার টাকা নিয়ে অস্ত্র কেনার জন্য কলকাতায় চলে যান। সে সময় সুলুক বাহার এলাকায় ছিল বিপ্লবীদের সদর দপ্তর। ২৪শে ডিসেম্বর এই দফতরে পুলিশ হানা দেয়। এখান থেকে তাঁরা পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হলেও এঁরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। এঁরা প্রথমে নগরকানা পাহাড়ে আশ্রয় নেন। পুলিশের হাতে ধরা পড়া প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেলে মাস্টারদা, অম্বিকা চক্রবর্তী ও রাজেন দাস তাঁদের পকেটে রাখা পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। অন্যান্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেই মৃতপ্রায় মাস্টারদা ও অম্বিকা চক্রবর্তী পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। উল্লেখ্য এঁরা পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়েছিলেন, কিন্তু ভালো থাকার সময় সীমা পেরিয়ে যাওয়ার কারণে কার্যকারিতা হারিয়েছিল। ফলে এই তীব্র বিষে খেয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন। পরে পুলিশ হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসার পর তাঁরা সুস্থ হয়ে ওঠেন। এঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ ডাকাতির মামলা রুজু করেছিল হয়েছিল। যতীন্দ্র মোহন এই মামলা পরিচালিত করেন এবং প্রায় ৯ মাস কারাবন্দী থাকার পর মামলা থেকে তাঁরা খালাস পান।
১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের নোয়াপাড়ায় একটি অস্ত্রলুটের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মাস্টারদার নাম শোনা যায়। এই কারণে ১ নং বেঙ্গল অর্ডিনেন্স ঘোষণা করে সারা বাংলায় বিপ্লবীদের ব্যাপকহারে গ্রেফতার করা হয়। শুধু এক ২৫ অক্টোবর তারিখেই বাংলার বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ২০০ বিপ্লবী কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এই সময় গ্রেফতার হন নেতাজী সুভাষ, অনিলবরণ রায় প্রমুখ নেতারাও। চট্টগ্রামের বিপ্লবীরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে মাস্টারদা কলকাতা শোভাবাজার আশ্রয় নেন। ওই সময় তাঁরা কলকাতার দক্ষিণেশ্বরে বোমা তৈরীর প্রশিক্ষণ নিতেন। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই নভেম্বর সেখানে পুলিশ হানা দেয়। সূর্যসেন গায়ের জামা খুলে খালি গায়ে একটা অপরিষ্কার ময়লা গামছা কাঁধে ফেলে চায়ের কেতলি হাতে ধীরে ধীরে সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে আসেন। পুলিশ তাঁকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সাদাসিধেভাবে বলেন, বাবু লোকদের জন্য চা আনতে যাচ্ছেন। পুলিশের দারোগা কিছুক্ষণ জেরা করার পর সন্দেহ করার মতো কোনো কিছু না পেয়ে তাঁকে ছেড়ে দেন। এর প্রায় একবছর পর ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের ৮ অক্টোবর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটের এক মেস থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় ‘মুরারিপুকুর ষড়যন্ত্র মামলা’। এ মামলায় ১৯২৮ সাল পর্যন্ত দুইবছর তাঁকে মেদিনীপুর প্রেসিডেন্সি জেল, পুনার রায়েরোড়া জেল ও বম্বের রত্নগিরি জেলে কারাবাস করতে হয়।
১৯২৮ সালের শেষের দিকে তাঁর স্ত্রী পুষ্প কুন্তলার অসুস্থতার খবর পেয়ে সূর্যসেন তাকে দেখতে আসার অনুমতি প্রার্থনা করেন। এই আবেদন মঞ্জুর করা হলে তিনি জেল থেকে তিনি ছাড়া পান। কিন্তু তাঁকে নজরবন্দী রাখা হয়। বাড়ি পৌঁছার দিনে তাঁর স্ত্রী পুষ্প কুন্তলা মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তিনি টাইফয়েডে আক্রান্ত হলেন। তিন মাস শয্যাশায়ী থাকলেন। এই সময় একজন ইংরেজ ম্যাজিস্ট্রেট রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য পরামর্শ দেন এবং এর বিনিময়ে সংসারের খরচ ব্রিটিশ সরকার চালাবে বলে জানানো হয়। সূর্যসেন এর কোনো উত্তর দেন নি। সূর্যসেনের দাদা চন্দ্রনাথ সেন বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে সময় চেয়ে নেন। এরপর একদিন পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান এবং কিছুদিন আত্মগোপন করে থাকেন।
এরপর থেকে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের জন্য পরিকল্পনা করতে থাকেন। এর চূড়ান্ত রূপ লাভ করে ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই এপ্রিলে। মোট ৬৫ জন যোদ্ধা নিয়ে প্রায় রাত দশটার দিকে আক্রমণ করে চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে অবস্থিত অস্ত্রাগার দখল করেন। এই সময় তাঁদের পরনে ছিল সেনাবাহিনীর পোষাক। তাঁরা ব্যবহার করেছিলেন কয়েকটি রিভলবার এবং সাধারণ বন্দুক। অস্ত্রাগার ভেঙে তাঁরা মাস্কেট্রি রাইফেল, রিভলবার এবং কার্তুজ লাভ করেন। এই আক্রমণের শুরুতেই তাঁরা টেলিফোন লাইন কেটে দিয়েছিলেন। ফলে আক্রমণের সময়, ব্রিটিশ পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শহরের অন্য প্রান্তের সৈন্যদের কাছে এই আক্রমণের যথার্থ সংবাদ পাঠাতে ব্যর্থ হয়। এইউ সময় বিপ্লবীরা এত দ্রুত আক্রমণ করে দখল করে নেয় যে, সার্জেন্ট ব্লাকবার্ন, কলোন, সার্জেন্ট মেজর ফেরেল-সহ অনেক অফিসার প্রতিরোধ করার আগেই মৃত্যুবরণ করেন। এই মামলায় ইন্ডিয়ান পেনাল কোড ১২১/১২১এ ধারা অনুযায়ী স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ১৪ আগষ্ট ১৯৩৩ সালে মামলার রায় ঘোষনা করে। এবং ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জানুয়ারিতে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। অস্তমিত হয় এক ইতিহাস।
মাষ্টার দা সূর্যসেন চিরজীবী হোন।
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে তিনি সহযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন।
আমার শেষ বাণী – আদর্শ ও একতা। ফাঁসির রজ্জু আমার মাথার উপর ঝুলছে। মৃত্যু আমার দরজায় করাঘাত করছে। মন আমার অসীমের পানে ছুটে চলছে। এই তো আমার সাধনার সময়। এই তো আমার বন্ধু রূপে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার সময়, হারানো দিনগুলোকে নতুন করে স্মরণ করার এই তো সময়।
কত মধুর তোমাদের সকলের স্মৃতি। তোমরা আমরা ভাই-বোনেরা তোমাদের মধুর স্মৃতি বৈচিত্র্যহীন আমার এই জীবনের একঘেয়েমিকে ভেঙে দেয়। উৎসাহ দেয় আমাকে। এই সুন্দর পরম মুহূর্তে আমি তোমাদের জন্য দিয়ে গেলাম স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন। আমার জীবনের এক শুভ মুহূর্তে এই স্বপ্ন আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিল। জীবনভর উৎসাহভরে ও অক্লান্তভাবে পাগলের মতো সেই স্বপ্নের পেছনে আমি ছুটেছি। জানি না কোথায় আজ আমাকে থেমে যেতে হচ্ছে। লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগে মৃত্যুর হিমশীতল হাত আমার মতো তোমাদের স্পর্শ করলে তোমরাও তোমাদের অনুগামীদের হাতে এই ভার তুলে দেবে, আজ যেমন আমি তোমাদের হাতে তুলে দিয়ে যাচ্ছি। আমরা বন্ধুরা – এগিয়ে চল, এগিয়ে চল – কখনো পিছিয়ে যেও না। পরাধীনতার অন্ধকার দূরে সরে যাচ্ছে। ঐ দেখা যাচ্ছে স্বাধীনতার নবারুণ। কখনো হতাশ হয়ো না। সাফল্য আমাদের হবেই। ভগবান তোমাদের আশীর্বাদ করুন।
১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই এপ্রিলের চট্টগ্রাম ইস্টার বিদ্রোহের কথা কোনো দিনই ভুলে যেও না। জালালাবাদ, জুলখা, চন্দননগর ও ধলঘাটের সংগ্রামের কথা সব সময় মনে রেখো। ভারতের স্বাধীনতার বেদিমূলে যেসব দেশপ্রেমিক জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের নাম রক্তাক্ষরে অন্তরের অন্তরতম প্রদেশে লিখে রেখো।
আমাদের সংগঠনে বিভেদ না আসে– এই আমার একান্ত আবেদন। যারা কারাগারের ভেতরে ও বাইরে রয়েছে, তাদের সকলকে জানাই আমার আশীর্বাদ। বিদায় নিলাম তোমাদের কাছ থেকে।
বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক বন্দেমাতরম্।
চট্টগ্রাম কারাগার, ১১ জানুয়ারি ১৯৩৪ সকাল ৭টা।
তথ্যসূত্র: অন্তর্জাল।
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে … স্বাধীনতার পতাকা হাতে সাম্য মুক্তির জন্য যাঁরা লড়ছেন কাজ করছেন – তাঁদের চেতনায় মাস্টারদা সূর্যসেন অমর হোন চিরজীবী থাকুন। জন্ম বার্ষিকীর এই দিনে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি।