রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতেই হবে
রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে অনেকেই নেতিবাচক ধারনা পোষণ করছেন। তাদের বলছি থিং পজেটিভ অর্থাৎ ইতিবাচক ভাবে ভেবে দেখুন।
রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াটের ২টি ইউনিট থাকবে। আশা করা যায় সবকিছু ঠিক থাকলে ২০১৮ সালে প্রথম ইউনিট থেকে ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন সম্ভব হবে। তবে দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ সাল নাগাদ বিদ্যুত উৎপাদনে সক্ষম হবে। তখন ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৪২ টন সালফার ডাই-অক্সাইড ও ৮৫ টন নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড নির্গত হবে। এই বিষাক্ত গ্যাস শুধু মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নয়, পরিবেশ এবং পশুপাখির জন্যও সমান ক্ষতিকর। বিদ্যুত কেন্দ্রের চিমনি থেকে অনবরত তাপ এবং আর্সেনিক, পারদ, সীসা, নিকেল, ভ্যানাডিয়াম, ব্যারেলিয়াম, ব্যারিয়াম, ক্যাডমিয়াম, রেডিয়াম ইত্যাদি বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গত হয়ে বাতাসে মিশে সুন্দরবনের পরিবেশ ধ্বংস করবে।
রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র বাস্তবায়নের জন্য ১৮৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে যার ৯৫%ই কৃষি জমি। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মাত্র ৬০০জনের কর্মসংস্থান হলেও জমি অধিগ্রহণের কারণে উচ্ছেদ হবে প্রায় আট হাজার পরিবার।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ভয়াবহ দূষণ ঘটায়। তাই বিশ্বের কোথাও সংরক্ষিত বনভূমি ও বসতির ১৫-২০ কিলোমিটারের মধ্যে নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়না। কিন্তু রামপাল থেকে প্রায় ৯ মতান্তরে ১৪ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবনের অবস্থান হলেও দেশপ্রেমিক ও প্রকৃতিপ্রেমিক সরকার এবং সরকারের এলাহী উপদেষ্টা রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে। কারণ, সরকারের কাছে সবার আগে সুন্দরবন।
একটু গভীরভাবে চিন্তা করুন। বিদ্যুত কেন্দ্র বাস্তবায়িত হলে সুন্দরবন কি আসলে ধ্বংস হবে? দেশপ্রেমিক সরকার কি সুন্দরবনকে ধ্বংস করার মত প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে? উত্তর হল সুন্দরবন ধ্বংস হবেনা, সরকার সুন্দরবন ধ্বংস করার মত কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেনা। একমাত্র সুন্দরবনকে রক্ষার জন্যই রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে-
-সুন্দরবনে বিদ্যুত সুবিধা পৌঁছে যাবে। সুন্দরবনের প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিশাল স্ক্রীনের এলসিডি মনিটর লাগিয়ে দেওয়া হবে। সেই এলসিডি মনিটরে হরিণেরা হিন্দী সিরিয়াল দেখে দেখে খুনসুটি করবে। বানর’রা ডিসকভারী আর এনিমেল প্ল্যানেট দেখে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হবে। শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান দেখে বানরকূল সভ্য হবে, শান্ত হবে। বাঘ সমাজ ধর্মীয় চ্যানেল আর সামাজিক অনুষ্ঠান দেখে দেখে মানবিক হয়ে উঠবে। তারা মাংসের বদলে ভেজিটেবল স্যুপ আর পটেটো নুডুলস খেতে শিখবে। হরিন,বানর আর বাঘ শিশুরা একসাথে বসে কার্টুন চ্যানেল দেখবে। প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় সকল পশুপাখী আবহাওয়া বার্তা শুনে সতর্ক হবে।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে-
শেয়াল পন্ডিতের পাঠশালা আবার নতুন করে জেগে উঠবে। পাঠশালাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করা হবে। নাইট শিফটে ছাত্র পড়ানো হবে। শিয়াল পণ্ডিত আর রাতের বেলা টক’শো দেখে দেখে সচেতন হওয়া কুমীর সন্তানদের খেতে পারবেনা। সকাল বেলা বাঘ-হরিণ-মোষ-বানর-কুমির শিশুরা কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে ইশকুলে যাবে। পশু-পাখীদের সন্তানরাও জিপিএ-5 পেয়ে বাবা-মার মুখ উজ্জল করবে। শিক্ষাকে জঙ্গল পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হবে।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে-
সুন্দরবনকে ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধিত হবে। বনের প্রতিটি প্রানীর ঘরে ঘরে ইন্টারনেট সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হবে। যুবক হরিণেরা যুবতী হরিণের সাথে অসভ্যের মত বন-বাঁদাড়ে না ঘুরে-ফিরে ঘরে বসে বসে ফেসবুকে চ্যাট করবে। বানর রমনী তার বানর প্রেমিকের বিষয়ে স্ট্যাটাস দিবে। পুরো পশুকুল বিশ্বের সাথে যোগাযোগ করবে। সুন্দরবনের স্মার্ট বাঘের সাথে ফেসবুকে প্রেম হয়ে যেতে পারে কোন আফ্রিকান সুন্দরী সিংহীর। বাঘ বিপন্ন প্রানী বলে তাদের গলায় গলায় জিপিএস লাগিয়ে দেওয়া হবে। ফলে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে-
অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবার সম্ভবনা প্রচুর। সুন্দরবন সভ্য হয়ে উঠলে সুন্দরবনের পশুদের মাঝে রং ফর্সা করা ক্রীম, হরলিক্স, চুলের কলপ, টুথপেস্ট, শ্যাম্পু, সুগন্ধী হার্বাল সাবান বিক্রি করার একটা বিশাল বাজার সৃষ্টি হবে। এছাড়া টিভি, ফ্রীজ, চেইন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, কর্পোরেট হসপিটাল, ফ্রাঞ্চাইজি রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করে জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশাল ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।
রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ হলে-
সুন্দরবনের পশুদের জন্য নিরাপদ বাসস্থান সম্ভব হবে। বিদ্যুতের তার এবং পশুদের বিনোদন কেন্দ্র ছাড়া বাকী গাছগুলো কেটে কেটে পশুদের জন্য পাকা বাড়ি/ফ্ল্যাট বানিয়ে দেওয়া হবে। ফলে ঝড়-বৃষ্টি অথবা অন্য কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে পশুরা থাকবে নিরাপদ। ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌছে দেওয়ার ফলে গরমে পশুরা এসির বাতাসে শীতল হতে পারবে আর শীতে হিটারের গরমে উষ্ণ হবে। এখন কেউ কেউ প্রশ্ন করতে পারেন পাখিদের কি হবে? পশুদের পাকা বাড়ীর ভেনটিলেটারে পাখিদের জন্য আরামদায়ক আবাসন তৈরী হবে।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান হলে-
সুন্দরবন আরো সুন্দর হয়ে উঠবে। সুন্দরবনের ভিতরে পৌঁছে যাবে সভ্যতার আলো। যারা সকলের জন্য সভ্যতা চায়না, যারা চায়না বৈষম্য কমে আসুক তারাই রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করতে পারে, তারা সবাই অসভ্য।
রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ হলে-
সুন্দরবন দিনে দিনে সভ্য হয়ে উঠবে। সুন্দরবন হবে পৃথিবীর প্রথম সভ্য জঙ্গল। আমাদের একজন সভ্য ইলাহী সাহেব আছেন। তিনি তার নিজ তৌফিকে সুন্দরবনে সভ্যতার আলো পৌঁছে দিবেন। সভ্যতার খাঁটি ডিজিটাল বৈদ্যুতিক আলো। ভবিষ্যতে ভোটার লিস্টে সভ্য সুন্দরবনের শিক্ষিত প্রাপ্তবয়স্ক পশুদের নাম উঠবে। আর সেই পশুরা রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে সুন্দরবনকে সভ্য করে গড়ে তোলার স্বপ্নদ্রষ্টা ও মহান কারিগর এলাহী সাহেবের দলকেই ভোট দিবে।
শেষ কথা হল রামপালে বিদ্যুতে কেন্দ্র হতেই হবে। যাদের একজন তৌফিক-ই-এলাহী আছেন তাদের সুন্দরবনের প্রয়োজন কি!!
______________
২৫শে আগস্ট, ২০১৩
ওহোহোহো। খামোখাই রামপালের বিরুদ্ধে মনোভাব পোষন করেছি এতোকাল। এখানে তো দেখছি সুবিধাই আর সুবিধা। ডিজিটাল প্রযুক্তি ছড়িয়ে যাবে গোটা সুন্দরবনময়। ঝাঁটা মারি আমার কপালে।
সরকার জনগনের। জনগনের দুঃখ বুঝবে নাতো গ্যাসের মূল্য বাড়িয়ে আর সুইস ব্যাংকে টাকা সরিয়ে আত্ম তুষ্টিতে ভুগবে !! ঘরে ছেলেপিলে হলেও টিন সার্টিফিকেট মাস্ট মানেই তো সুশাসন। পাবলিক বুঝে না। কী মূর্খ আমি ?
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতেই হবে।
হাহাহাহা মুরুব্বি ভাইয়ের মতের সাথে একমত হাহাহা
আমাদের সুখ দু:খ দেখার দায়িত্ব সব সরকারের, গ্যাসের দাম এমনি এমনি বাড়ে নাকি
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতেই হবে।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতেই হবে। রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতেই হবে। এককথা।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতেই হবে।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতেই হবে।
জোড়া চক্ষু আমার ওপেন হয়ে গেলো। কত মিছা কথাই না শুনছি। ভোট দিলাম বস্।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতেই হবে।
যদিও তেমন আপডেইট পাচ্ছি না রামপালের। আশা করবো এতো সুখ দ্রত চালু হবে।
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতেই হবে।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন নিয়ে শুরু থেকেই যেই ক্যাচাল শুরু হয়েছিল। তখন এবিষয়ে একবার লিখেছিলাম। লিংক দিলাম, দেখুন! https://blog.bdnews24.com/nitaibabu/188028/comment-page-1
হতেই হবে
রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতেই হবে।