আমার অনেক কিছু হওয়ার কথা ছিল
অনেক ভারী কিছু, শৈশবে
মিতালীরা বাড়ি যেত। বড়োসড়ো ওজনদার
তালা সদর দরজায় ঝুলিয়ে
দুই-তিন সপ্তাহের জন্য তারা হাপিস হয়ে যেত;
ইচ্ছে করতো আমি পাহারাদার হই,
তাদের সদর দরজায় তালা হয়ে ঝুলে থাকি।
চালের আড়তে বিশ কিলো ওজনের
বাটখারা খুব পছন্দ ছিল, ইচ্ছে ছিল
বাটখারা হব। আড়তের বৃদ্ধ কর্মচারীর
কষ্ট লাঘবে এগিয়ে গেলে;
সমস্ত শক্তি দিয়ে একচুল নড়াতে পারতাম না;
ঈর্ষার চোখে চাইতাম, আশেপাশে দেখতাম
বিশ কিলো মানুষের জীবন। মানুষকে
ভালোবেসে বাটখারা হতে চাইতাম।
চেরাই কাঠের
করাত ভীতি জাগাত, বিশাল বৃক্ষকে
নিমিষেই ফালাফালা করে ফেলত।
করাতের দোর্দণ্ড প্রতাপের কাছে
বৃক্ষের বিশালতা কত অসহায়। একদিন
মানুষের বুকে চির ধরাবো এই আশায়
করাত হতে চাইতাম।
আনসার মাঠ তছনছ করে
উঠছে সাত মহলা বাড়ি; অসহায় আমি
দূরে দাঁড়িয়ে সহ্য করছি হাতুড়ির আঘাত।
একটু একটু করে হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব
হারিয়ে যাচ্ছে স্মৃতি, হাতুড়ির প্রতি ক্রোধে
তোলপাড় হচ্ছে প্রাণ প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষায়
বিশালাকার হাতুড়ি হতে চাইতাম।
হাতুড়ি কেড়ে নিয়েছে শৈশব
আনসার মাঠে রোদের চিহ্ন নেই;
ইটের জঙ্গলে কেউ শৈশব খুঁজে না।
শৈশব হারিয়ে গেলে
কিছু হওয়ার ইচ্ছে মরে যায়
ওজনদার কোনকিছু লালায়িত করে না
এখন আমি অন্য অনেকের মত মানুষরূপী কীট।
শৈশব হারিয়ে গেলে
কিছু হওয়ার ইচ্ছে মরে যায়
ওজনদার কোনকিছু লালায়িত করে না
এখন আমি অন্য অনেকের মত মানুষরূপী কীট।