প্রোক্রাস্টেস এর বিছানা

প্রোক্রাস্টেস এর একটা সরাইখানা ছিল। সেইটা ছিল এথেন্স এবং ইলিউসিস এর পথের ধারে। প্রোক্রাস্টেস এর অতিথি সৎকার ছিল গতানুগতিক পদ্ধতির বাইরে। সে পথিকদের ধরে নিয়ে আসত আর বেশ খানাপিনা করাত। তারপর তাকে শুতে দিত বেশ আরামদায়ক বিছানায়। শর্ত ছিল যে খাটে শুবে সেই খাটে একদম এঁটে যেতে হবে। যদি কেউ খাট থেকে লম্বা হত প্রোক্রাস্টেস তার পা কেটে নিত। আর কেউ যদি খাট থেকে ছোট হত তবে তাকে অদ্ভুত উপায়ে টেনে লম্বা করত। কোন উপায়েই পথিকদের জীবিত থাকার কোন উপায় ছিল না। প্রোক্রাস্টেস এর খাটে কেউ খাপেখাপ মিলে শুইতে পারছে এই ধরনের রেকর্ডও নাই। এই সবই হল গ্রীক পুরাণের কিচ্ছা।

আমাদের জামানায় আমরাও কিন্তু প্রোক্রাস্টেস এর মত চিন্তা করি। ধইরা নেই যে কোন কিছু আমাদের ধরে নেয়া স্টান্ডার্ডের মতই হবে। এর বাইরে কিছু নাই। থাকলে সেইটা ধইরা বাইন্ধা আমরা আমাদের স্টান্ডার্ডের মাঝে সেট করে নেবই। কিন্তু কখনই আমাদের চিন্তার সীমাবদ্ধতা ভেবে দেখব না। আমরা আমাদের স্কুলে ভর্তি হই বা ভর্তি করাই সবাইকে একই ছাঁচে গড়ে তোলার জন্য। স্কুলে ভর্তি করানো আমার কাছে অনেকটা প্রোক্রাস্টেস এর বেডে শোয়ানো। স্কুলে বাচ্চাদের মেধা ও বুদ্ধি অনুসারে কারিকুলাম তৈরি করা হয় না। বরং বাচ্চাদেরকেই স্কুলের কারিকুলাম মেনে চলতে হয়।

10 thoughts on “প্রোক্রাস্টেস এর বিছানা

  1. একবিংশ শতকের একদম গোড়া থেকেই এই প্রোক্রাস্টেস এর বিছানা থিম এর অবাধ বিচরণ শুরু হয়েছে আমাদের দেশে। বর্তমানে পারফেক্টলি এই অস্থিরতা পুরোপুরি স্থায়ীত্ব পেয়েছে সমাজ এবং সংসারে। দিন কয়েক আগে ভারতীয় মুভি 'হিন্দী মিডিয়াম' চলচ্চিত্রটিতে এরই এক বাস্তব প্রক্ষেপণ দারুণ ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

    অনেকদিন পর মি. আনু আনোয়ার এর পোস্ট শব্দনীড় এ অলঙ্কৃত হয়েছে। গ্রেট। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্য পোস্টটিকে আরো ক্লিয়ার করেছে। অনেক ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানাই। 

      আর আমাদের সমাজ রাষ্ট্রের চিনতা ভাবনা সহজ ও সুনদর হোক।          

  2. সর্ব ভারতেও এই একই প্রতিযোগিতা চলে যাচ্ছে বহুকাল।

  3. অসাধারণ উপস্থাপনা আনু আনোয়ার ভাই। আমরা আমাদের স্কুলে ভর্তি হই বা ভর্তি করাই সবাইকে একই ছাঁচে গড়ে তোলার জন্য। ঠিক বলেছেন।

    1. আমরা এরকম অনেক বিষয়ে প্রোক্রাস্টেনিয়ান ধারণা পোষণ করি।

      ধন্যবাদ কবি।      

  4. স্কুলে বাচ্চাদের মেধা ও বুদ্ধি অনুসারে কারিকুলাম তৈরি করা হয় না। বরং বাচ্চাদেরকেই স্কুলের কারিকুলাম মেনে চলতে হয়। দুঃখজনক।  :(

  5. কাব্য রূপ দিই। শ্বাশত এই বিষয়টি এখন সামাজিক সর্বজনীন গ্রহণীয় হয়ে উঠেছে। মেনে নিয়েছে সবাই। অখচ শিক্ষা পরিবেশের পূর্ণমূল্যায়ণের দাবি থাকলেও তা কখনও সোচ্চার হয়ে ওঠেনি।

    1. যথাযথ বলেছেন কবি সুমন ভাই। 

      ধন্যবাদ জানাই।    

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।