পৃথিবীর গোলাপ বন্ধ্যাত্বের কারণ ও প্রতিকার

রৌদ্রত্রপা, কেউ না জানুক আমি তো জানি, পৃথিবীর সমস্ত গোলাপ সেদিন শুকিয়ে গিয়েছিল তোমার জল টলমলে আনত চোখে! এখন আর তাই গোলাপ নেই কোথাও। কোথ্থাও পাবে না আর একটি গোলাপও, যতো দামই দিতে চাও। এ পৃথিবী আজ সম্পূর্ণরূপে গোলাপ শূন্য।

আমার বাড়ির নিকটবর্তী সড়কে রাজ্যের রকমারি ফুল নিয়ে বসা ফুল বিক্রেতার কাছে আমি সেদিন একটি গোলাপ চেয়েছিলাম। সাফ জানিয়ে দিল, ‘একটি গোলাপও আজ আর অবশিষ্ট নেই কোথাও। হঠাৎ একদিন কোনও অজ্ঞাত কারণে পৃথিবীর সমস্ত গোলাপ বাগান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, শুকিয়ে গিয়েছিল সব ফুলও। সেই থেকেই পৃথিবীর গোলাপ বন্ধ্যাত্ব। সুমেরু থেকে দক্ষিণমেরু, যেখানেই যাও শুধু খুঁজে ফেরাই হবে সার, কিন্তু একটি গোলাপও কোত্থাও পাবে না আজ আর। তুমি অন্য কোনও ফুল নাও সাহেব, যতো ইচ্ছে, গাদা টগর বেলি শিউলি যা খুশি। দেশি বিদেশি হরেক রকমের বহু দুর্লভ মহামূল্যবান ফুলও আছে আমার সংগ্রহে, পানির দামে ছেড়ে দেবো। হিবাস্কাস কোকি, স্ট্রঙ্গিলোডোন ম্যাক্রোবোট্রিস, সুদূর মেক্সিকো থেকে নিয়ে আসা চকোলেট কসমস, সব দিয়ে দেবো পানির দামে। শুধু তুমি গোলাপ চেয়ো না সাহেব। এখন আর গোলাপ ফোটে না পৃথিবীতে। এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে চারিদিকে আজও, কিন্তু দুর্ভেদ্যই রয়ে গেছে এ রহস্য!’

সত্যিই, আজ আর পৃথিবীতে গোলাপ নেই রৌদ্রত্রপা। অনেক খুঁজেছি হন্যে হয়ে। পাইনি। জানি, সে সম্ভাবনাও ক্ষীণ। কারণ পৃথিবীর সব গোলাপ সেদিন শুকিয়ে গিয়েছিল তোমার জল টলমলে আনত চোখে। মরে গিয়েছিল সমস্ত গাছ। তারপর থেকেই পৃথিবীতে গোলাপ বন্ধ্যাত্ব। আজও রুদ্ধশ্বাসে গোলাপ খুঁজে ফিরছি সবখানে। দৈবাৎ যদি পেয়ে যাই একটি বা দুটি। যতো দামই হোক তার, আমি তা এনে পরিয়ে দিবো তোমার কবরীতে, তবেই পৃথিবীর এ গোলাপ বন্ধ্যাত্ব ঘুচবে।

12 thoughts on “পৃথিবীর গোলাপ বন্ধ্যাত্বের কারণ ও প্রতিকার

  1. গদ্য রূপের স্বরূপ এমনটা হলে ভালো লাগে। আমার ভীষণ পছন্দ এমনসব লিখা। অভিনন্দন এবং শব্দনীড় এ স্বাগতম মি. অর্ক। নিয়মিত লিখুন এবং শব্দনীড়ের পাশে থাকুন। ধন্যবাদ। :)

    1. চমৎকার প্রেরণাদায়ক মন্তব্য। ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।    

  2. চমৎকার দাদা ভাই। আপনার লেখা প্রথম পড়লাম। স্বাগতম জানাই। :)

  3. খুব সুন্দর অর্ক ভাই। শব্দনীড়ে স্বাগতম রইলো। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

  4. সহ-ব্লগারের লিখায় আপনার মন্তব্য দিন।
    মন্তব্য এবং প্রতি-মন্তব্যে ব্লগিং হোক আনন্দের।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।