শিরোনামহীন

ফুলদানিতে কেমন বীভৎসভাবে শুকিয়ে নুয়ে পড়েছে বাসি ফুলগুলো
আজ আর কোনও সুঘ্রাণ নেই সৌন্দর্য নেই
সব রঙ হারিয়ে হাসপাতালের মরনাপন্ন রোগীর চোখের মতো পাণ্ডুর পড়ে আছে।
সত্যি বলতে, ওগুলোকে ফুল বলে সম্বোধনেও আজ আমার দ্বিধা হয়-
আদৌ কি ফুল- নোংরা থুকথুকে নাম না জানা জাড্য বস্তু কতিপয়!

আহা, কখনও সতেজ ছিল ফুলগুলো- রঙিন বাঙময় সদ্যফোটা
কেউ একজন ভালবেসে দিয়েছিল প্রীতি উপহার
আমি তা সযত্নে এনে সাজিয়ে রেখেছিলাম ফুলদানিতে;
শুরুতে কতোই না শোভাবর্ধন করেছিল আমার ছোট্ট ঘরখানির
আর কী যে মন মাতানো সুঘ্রাণে ভরে থাকতো চারপাশ- সারাবেলা
যেন বসন্তরাগ অবিরাম ঝঙ্কৃত হতো মধুর ঘ্রাণে ভরা ইথারে ইথারে!
অভ্যাগতদের অকৃপণ বেশুমার প্রশংসা ফুলের ও আমার সৌন্দর্যবোধেরও
স্ফীত করেছিল বুক অফুরন্ত গৌরবে (কিঞ্চিৎ অহমিকাতেও বৈকি)।

অথচ আজ জীর্ণ থুকথুকে বাসি ফুলগুলোর দিকে তাকালে আমি শিউরে উঠি-
মনে পড়ে যায় বিগত দিনগুলি- একগুচ্ছ সতেজ সুরভিত ফুল ফুলদানিতে
আর কেমন যেন একধরণের শূন্যতা, আতঙ্ক অদ্যন্ত গ্রাস করে-
আমার কণ্ঠনালি শুকিয়ে আসে, শ্বাস নিতে অব্দি কষ্ট হয়…
শুকনো বেরঙ বাসি ফুল এতোটা ভীতিকর হতে পারে!

তুমি এমন কিছু কেন দিলে না যা নিত্য ব্যবহার্য অথচ জীবনভর রয়ে যায়-
পিতলের খসখসে চা চামচ সিগারেট কেস কিম্বা আস্তিনের সামান্য বোতাম;
আর ফুলই যদি দেবার ছিলো তবে দিতে কাগজ কিম্বা প্লাস্টিকের ফুল-
সুঘ্রাণ না ছড়ালেও সময়ে শুকিয়ে বাসি হয়ে এরকম ভীতিপ্রদ হতো না।

3 thoughts on “শিরোনামহীন

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।