আব্দুল গনি হাওলাদার এর সকল পোস্ট

আব্দুল গনি হাওলাদার সম্পর্কে

কাউকে বলতে না পারা কথা গুলো জীবনের এক আলোয় লেখার রূপ নিয়েছে যা জীবনের এক অনাকাঙ্ক্ষিত অংশ!!

“কৃষ্ণফুল”

ধরো বাঁচি নাহে তবো কৃষ্ণফুল
চাহিবে না তুমি জোড়া কুল!
বাঁচিবো মোরা প্রেমকূলে
ছুইবে তোরা,রইবে মোরা,
এক কানায় অর্ধকূলে।

বইবে তোরা নদীর তরে
রইবে মাঝি নদীর কূলে,
মনের দোহারায় ছুঁইবে প্রেম
কৃষ্ণফুলে রইবে প্রেম!
জড়ো ফুলে চাইবে তুমি
অর্ধকূলে প্রেমের নদী,!

ফুলের তোরা রইবে হাতে
তোমার হাতে সইবে না যে,!
কাহার হাতল ধরিবে তুমি
কাহার চন্দন হইবে তুমি,!
এক নদীর মাঝি তবো
এক আসমান সইবে যখন
কৃষ্ণ ফুল ফুটিবে কোহন,!

তবো ছুইবার কামনা তোমারও ফুল মালা
বোধ হারায় ক্রন্দন করিয়া হইবার চাই কূল হারাইয়া,
তুমি তবো কৃষ্ণফুল দেখিয়া দেখো তবো আমি রই কূল জুরিয়া,
আসমানের চন্দন সাক্ষী রাখিয়া রইয়া যাই তোমারও মন জুড়াইয়া
কোহনও যদি দেখিবার পারিতা আমারই এক মনে রাখিয়া,
বুঝিবার পারতা এক মনে বয় কতই না প্রেমের দোহরা,!

অমন এক কৃষ্ণফুলে
ভালোবাসা বইবে মনেরি অনেতে,
যাহাতে হাত তুমি রাখিবে
তাহাই তোমার রবে
যদি প্রেমকূলে বাঁচার ইচ্ছা যোগে,!

(১৭ জানুয়ারি ২০২৩)
আব্দুল গনি হাওলাদার

দুর্ভোগ

q

সবুজে সমবৃদ্ধি
কোলাহলে অনাবৃতি,
জাগ্রত মহল
কাগজই সম্বল!

রূপের দুনিয়ায়
মগজে পোকা,
বাস্তব চিত্তে
আগ্নেয়াস্ত্রর খেলা!

মানবিক দৃশ
জগতের উৎস,
সমাদৃত অরণ্যে
কলঙ্কের মূলমন্ত্র!

ভালো কাজে
রোইয়াছে চোখ,
মন্দ কাজে
নাই গো কোনো সুখ!

স্বর্গের লোভ
দুনিয়ার ভোগ,
মানব রূপে
রোইয়াছে চোখ!

চারকোনে দিক
সত্যের কনিশ,
নিত্যনতুন ন্যায়
তৈরী হয় ব্যয়!

ভোগের তারণায়
সৃষ্ট লোভ,
অন্ন হারায়
তীক্ষ্ণ রোগ!

মুক্ত মঞ্চে
নেই মুক্তি,
তস্করী তো আজ
খোলা প্রবৃদ্ধি!

আত্মত্যাগ এ
মৃত আত্মা,
প্রতিনিয়ত করছে
তারা আত্মহত্যা!

নীতিতে দোষ
মুখে রস,
সমাজতন্ত্র তো
কল্পনাতেই জোস!

উষ্ণ হওয়ায়
সজীব জীবন,
দোষ করা তো
কলবের কারণ!

অবক্ষয়তা
দুর্ভোগের ঊর্ধে,
অনুধাবন তো
সৃষ্টির পক্ষে!

কল্পে শক্তি
উন্মাদ এ ভক্তি,
তিরস্কার তো
মানবের মূলনীতি!

অর্থ সিক্তই
নীরব উৎস,
পিপীলিকা বলে
মানব সবচেয়ে নৃশংস!

শক্তিতে ভক্তিতে
মানবতা আজ যাচ্ছে কিসে,
লুণ্ঠন করে যাচ্ছে তারা
সবকিছু নিঃশেষ করে!

যাত্রায় বিরতি
মাঝপথে হয়রানি,
দিন শেষ দেখা যায়
ওইসব রাজতন্ত্রের মূলনীতি!

“মনস্তাত্ত্বিক”

05713

অতীতের কিছু ভুলে
পোকা জন্মেছে মগজে,
চক্ষু লজ্জায় ডুবেছি বলেই
চোখ আজ খসে পড়ছে!

চিৎকার পৌঁছে গেছে
মস্তিকের পোকার কাছে,
যাদের গুনগুন আজ
তীক্ষ্ণ যন্ত্রনা বহন করছে!

মনের ঊর্ধ্বে চিত্ত বহন
আত্মমনে মনস্তাত্ত্বিক দহন!
অবিকল আত্মার শরীরে
অক্ষত রক্তের প্রবাহ,
উজ্জ্বল রঙের রশ্মিতে
মানব মস্তিক হয় বাষ্প!

আঘাতের আত্মঘাতে
পরিলক্ষিত আবরণ,
মানব মস্তিকে হয়
অনাগত রক্তক্ষরণ!

উষ্ণ মনে কুণ্ঠিত বিত্ত
হয় বিভীষিকায় সিক্ত,
যা অনবরত করে
মৃত্যু কে কুন্ন্ঠ!

উদ্দেশ্য: একটি মানব মন, মস্তিক ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় কিছু আত্মঘাতিক সংলাপ যা মনস্তাত্ত্বিক এ রূপ নিয়েছে…!

“আমি জন্মেছি মা গরীব ঘরে”

আমি জন্মেছি মা গরীব ঘরে!
পাইনি খাবার, পাইনি সুখ,
মাথা রেখে ঘুমাবার জায়গাটাও ছিলো অনেক বড় স্বপ্নের!

ইচ্ছে ছিলো হবো অনেক বড় মানুষ
তাকিয়ে দেখি এই সব বড়োলোকের হুশ!
পড়ার জন্য ছিলো না কাপড়
ছিলো না কোনো প্রসাধনী
নিজেকে আজ উপহাসের পাত্র বানিয়ে
হয়েছি মানবতার প্রতিধ্বনি!

ছিলো স্বপ্ন মানুষ হওয়ার
ইচ্ছে ছিলো অনেক
শিক্ষার আলো জ্বালাতে গিয়ে
পুড়ছি শিক্ষার শ্মশান তোলে!
শিক্ষার এত দাম মা, জানা ছিলো না আমার
আগে যদি জানতাম এমন শিক্ষা তোমার পেট থেকেই শিখে আসতাম মা!

আমি মা জন্মেছি গরীব ঘরে!
পড়ার স্বপ্ন ছিলো স্কুলে
বাস্তবতার তাগিতে পড়ছি আমি কলকারখানার চারদেয়ালে!

আমার কিছু নেই,আমি নিঃস্ব
তবুও বেঁচে আছি কারণ আত্মহত্যা নিষিদ্ধ,
মা কেউ আমায় আপন করে নি
কেউ আমায় দুবেলা ভাত দেয় নি
কেউ আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার খবর নেই নি
আজ আমি কেনো গরীব ঘরে জন্মেছি মা
আমার কি দোষ ছিলো
গরীব ঘরে জন্ম নেওয়াই কি পাপ তবো,
বিধাতা আপনার কাছে অভিযোগ করার সামর্থ্য নেই আমার
তবুও আমি বলতে চাই তাদের আমার কোনো দোষ ছিলো না,
আমি জন্মেছি মা গরীব ঘরে
অন্ন বেঁচে খেয়েছি মোরা
অভিশাপের পদতলে..!

“ধন্যবাদ”

.
উদেশ্য: গরীব ঘরে জন্ম নেওয়া এক বালক যা কল্পনাচিত্তে অনেক বিড়ম্বনা তৈরি করে যার ফলে এই কবিতার জন্ম…!

“আমি উন্মাদ কবি”

আমি উন্মাদ কবি
আমি তো অবক্ষয়তার প্রাণী,
আমি তো অপ্রাণ,
আমি কর্তৃত্বের ভারে
বেঁচে থাকা সরলতার অভিমান!

মানবিক দৃষ্টি কোনে চেয়ে দেখো তুমি
উন্মাদের সৃষ্টি তে আমি এক অভিশপ্ত প্রাণী,
আমি তো উন্মাদ কবি
আমি তো ক্ষিপ্ত এক রাহাজানি!

আমি তো হতে চাই নি উন্মাদ কবি
আমি চেয়েছি হতে সরলতার প্রতিধ্বনি,
কে বানিয়েছে যে আমায় ক্ষিপ্ত
তা কি জানতে চেয়েছো কেউ,
নাকি কবিতা শুনেই বলে দিচ্ছ
এতো উন্মাদ কবি, এতো ক্ষিপ্ত কবি!

সমাজের নরপশুদের জন্যই,
তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তোলার জন্যই
হয়েছি আমি উন্মাদ কবি, হয়েছি আমি ক্ষিপ্ত কবি!

কেউ প্রতিবাদ করছে ময়দানে
আমি আজ উন্মাদ হয়ে করছি প্রতিবাদ
কবিতার আলোকে,
ওহে সমাজের প্রকাশ্যে শত্রু
তোমরা কি শুনছো আজ আমার কবিতা
নাকি উন্মাদের ক্ষিপ্ততায় লুকিয়েছো একা!

কে আছো চলে এসো
আমাকে দাবিয়ে সমাজের উলঙ্গ খেলায় অংশ গ্রহণ করো,
এখনি সময় যদি দাবাতে না পারো আমায়
উন্মাদের কবিতায় তুমি হারিয়ে যাবে এবার,!

তোমাদের চোখে যে আজ ভয়ের ছাপ,
তা তো আমি লক্ষ করছি
এতো আমার উন্মাদ কবি হওয়ার প্রথম ধাপ!
এতো সবে শুরু আমি তো পুরো দমে হয়েছি উন্মাদের গুরু,!

দোষ তো তোমাদের নিজের দোষে
আজ আমায় যে উন্মাদ কবি বানিয়ে দিলে,
সময় তো এখনি পরিবর্তনের
যদি পরিবর্তন না আনতে পারো
তবে কাল তোমার সন্তানদের কি শিখাবে,
আজ আমি, কাল তুমি
এভাবে পরিবর্তন না হলে
প্রতিনিয়ত উন্মাদ কবির সৃষ্টি হবে!

আজ আমি লিখছি প্রতিবাদের প্রতিধ্বনি
কাল আরেকজন লিখবে,
আজ না হলে কাল তো হবে পরিবর্তন,
সুযোগ এখনি,
আমি করেছি শুরু,!
তোমরা করবে শেষ,!

..ধন্যবাদ..

“দাসত্ব”

দাসত্ব করছো কার
নিজের নাকি অন্যের,
বেঁচে আছো নামে,
দাসের জীবন রেখে,
হয়তোবা মরবে এখনি,
দাসত্বের জীবন ছেড়ে
আজ বেঁচে থাকা দায়,
এই জীবন রেখে কি লাভ
যদি দাস হয়ে বাঁচো,
ভয় করছো কিসে
দাস থেকে দাসত্বে,
তুমি নিজের পরিচয় বানাছো!

দোষ তো আমাদের না
দোষ তো ওই পূর্বপুরুষের,
যারা নিজের খেয়ে
অন্যের গোলামী করেছে
যুগের পর যুগে,
এরা কারা আমাদের
পূর্বপুরুষ নাকি
দাসত্বের অনুরূপ,
স্বাধীন হওয়ার পর
কেনো আমারা পরাধীন,

দোষ তো আমাদের,
নিজের খেয়ে অন্যের
গোলামী তো আমাদের
রক্তে বয়ে বেড়ায়,
যদি হতো সামর্থ্য
কবে মুছে ফেলতাম
তাদের অস্তিত্ব,
সময় তো এখনি
নিজের অস্তিত্বের জানান দিতে,

আমরাই তো নতুন দিগন্ত
দাসত্বের কাছে হেরে
যাবার চেয়ে তো আজ
মরে যাওয়া ভালো,
ওরা কারা যারা জাগ্রত
থেকেও আজ দাসে পরিণত,
আমি তো অভাগী
আমি তো রক্তে চোষা প্রাণী
আমি তো দাস
আমি দাসত্বের পরিণতি,
জেগে উঠো, এখনি তো সময়

আজ না হলে পরিবর্তন
ভবিষ্যৎ হবে দাসত্বের বাঁধন,
হে জাগ্রত সমাজ
তোমরা থেকো না আর নীরব
জীবন তো একটা রণক্ষেত্র
হয় মরণ,নয় জীবন।।