চূড়ান্ত এর সকল পোস্ট

মানুষ !

আদতে আমি কি ? কতটা মানুষ ? মানুষ হিশেবে কতটা স্বার্থক – কতটা ব্যর্থ ? কতটা ভাবায় আমায় ?
এই যে আমার পৃথিবী , সত্যিই আমার ?

মানুষের পৃথিবী শুধুই কি মানুষের ? আর কারও নয় ?

আমরা পৃথিবীর মানুষ নই , পৃথিবীটাই একান্ত মানুষের,আবার পৃথিবীটা বিভক্ত – একটা ভূখন্ড আমার – কিছু মানুষের – ৭০০ কোটি মানুষের নামে পৃথিবী কয়েকশো খন্ডে লেখা হয়ে গেছে। কারও আবার তাও নেই । এ-খন্ডের মানুষ ও-খন্ডে যেতে হলে বিশেষ অনুমতি লাগবে – কেননা ও-খন্ডে অন্য মানুষ থাকে – তারা আর তুমি এক নও , আলাদা,ভিন্ন ।

দেখ – তোমরা দেখতে আলাদা, এক হলেও বর্ণ আলাদা, এক হলেও ভাষা আলাদা , এক হলেও ধর্ম আলাদা, এক হলেও…

দেখ- কিছু একটা আছে …কাঁটাতারটা দেখছো না …

এই যে আমি, আমি কিন্তু পৃথিবীর নই –

একটি দেশের – স্রেফ একটি দেশের –

দেশেরও আবার অনেক অঞ্চল – চালচলন, রেওয়াজ,কথার ধরন – বেমিল ।

আমি এবার – কোথাকার ছোকড়া !

অতঃপর আমি একটা অঞ্চলের – অমুক জায়গার – তমুক গ্রামের – অমুক পাড়ার – তমুক বাড়ির -অমুক ঘরের !

হা-হা-হা । চমৎকার !

অতঃপর আমি রাস্তার অভিমুখে, নর্দমার ধারে হাঁটছি – দেখছি কীট, বাড়ন্ত-জীবন্ত কীট ।

রিকশা আর গাড়িবহরের ঝগড়া –

উঁচু তলা, নিচু তলা –

৪ তলা, ৬ তলা,১০ তলা আর টিনের ছাবড়া – বসতি থেকে বস্তি – নাক্‌ সিটকানো বস্তি –

৪ তলা ৬ তলা হয়, ৬ তলা বাড়ে, ১০ তলাও বাড়ে , টিনের চালে কেবলই ফুটো হয় –

তারপর রাত হয়, মাতাল-নেশাখোরেরা জাগে – সেখানেও দেখছি বার আর মাটির ভাঁড় , সভ্য আর অসভ্য ইতর – তফাৎটা ঠিক কোথায় -?

অবক্ষয় কাকে বলে ? কুকুরগুলো ঘুমানোর পরও যারা জেগে থাকে, তারা অবক্ষয় ? অবক্ষয় বেপর্দা নারী ? প্রতিটি স্বাধীনচেতা মানুষ ?

রাস্তায় কোনো-কোনো পুরুষ সফেদ শাড়ির ভেতরে কি যেন খোঁজে – সেখানে নাকি অবক্ষয়ের সূত্রপাত – আর সেই সফেদ শড়ির ভেতরে থাকা মানুষ অবক্ষয়ের কারন –

অতঃপর আন্দোলন , মানুষের, মানবিকতার –

অথচ, দুই হাতে তালি বাজানো মানুষগুলোর রাতের বালিশ কি করে ভিজে – কি করে শুকিয়ে যায়, তার খবর কেউই রাখে না –

অবশেষে আমিও বোধহয় মানুষই – !

আমরা মানুষ !কাক আর কোকিলের তফাৎ শিখতে-শিখতে বেড়ে ওঠা মানুষ –

বৈষম্য যার অস্থিতে, এমনকি মজ্জায় ।

লোকটা দেখে

​লোকটা হঠাৎ করে কি যেন দেখে আঁতকে উঠে – চিৎকার করে – ভেতরে, বাইরে ভীত – আস্তে – কে?

উত্তরে আসে – তুমি ঘুমোও –

লোকটা ঘুমিয়ে যায় –

আর সেই লোকটা আরো এগিয়ে আসে – চারপাশ আরো পরিষ্কার হয় – একটা-একটা এভাবে কয়েকটা-কয়েকটা করে অনেকগুলো দৃশ্য – ভেসে উঠে – ছুটে আসে –

লোকটার ঘুম ভেঙ্গে যায় –

লোকটা দেখে প্রেম – তাকিয়ে থাকে – স্থির – নির্লিপ্ত চোখে – একটা শক্ত চুম্বন – দু’জোড়া চোখ লাল হয়ে যাচ্ছে –

লোকটা শোনে শিৎকার – হঠাৎ দেখে রক্ত –

এভাবে লোকটা দেখে এবং শোনে –

দেখে মানুষগুলো প্রচন্ড অভ্যস্ত – তাদের ভেতরের কথাগুলো শোনা যাচ্ছে না – বাইরেরটাকে সত্যি বলে ভ্রম হয় –

লোকটা দেখে – খানাতল্লাশি – একটা ব্লেড, একটা দড়ি, একটা ছুরি, একটা শিশি, একটা কাগজের টুকরো বা গোটা কাগজ – এভাবে কয়েকটা – বেশ কিছু – অনেকগুলো – অসংখ্যতে যায়নি বোধহয় – যেতে পারতো – আরো-আরো – অসংখ্য-অসংখ্য খানাতল্লাশি হতে পারতো – কিন্তু তাদের গলার নিচে কোন দাগ নেই, মুখে ফেনা নেই, কবজিতে কাটাছেঁড়া নেই, মাথাটাও থেঁতলায়নি রাস্তায়।