আমি জ্যোৎস্না ছুঁয়েছি বহুবার
এমন জ্যোৎস্না ছুঁয়ে দেখিনি কখনো।
এ কেমন জ্যোৎস্না ছিলো তবে?
দুধের মত নির্মল সাদা, ঠিক তা নয়,
স্ফটিক স্বচ্ছ জলের উপর ঠিকরে পড়া আলোর মতন।
ঠিক তাও নয়।
রুপালী ইলিশের পিছলে পড়া ভোরের সূর্যের মত?
আরে না, ঠিক তা না।
তা হলে কেমন ছিল সে চন্দ্রিমা রাত?
এ যেন গলে যাওয়া মোমের তরলে নিজেরই প্রতিবিম্ব,
না, ঠিক যেন এটাও না।
এ যেন ঈশ্বরের দ্যুতিতে আলোকিত এক বিলীন চরাচর,
সমস্ত সবুজ, জলাশয়, পর্বত, মালভূমি,
উপত্যকা, খানা খন্দক,
পত্রবিহীন বৃক্ষ লতা রুপোর ঝুমকো লতায় সজ্জিত বসুধা,
যখন এলো স্বচ্ছ নীল নীলাম্বরে,
চকচকে নিখুঁত রুপোলী আগুনে মিহি পোড়া
সোনার রঙে সেজে।
এ যেন সেই জোর্তিরময়ীরই কারুকার্য খচিত কলা,
ভাষা, শব্দ, উপমা যেখানে অসহায়।
কসম সেই সৃষ্টি কর্তার, যে
আজ আমায় দাঁড় করিয়ে দিলেন,
অন্য পৃথিবীর ভূস্বর্গে,
অন্য কোন অদেখা অদ্ভুত অপুর্ব,
অপার্থিব পৃথিবীর সামনে,
শুধু চেয়ে দেখা, নির্বাক, বিহ্বল চোখ হতে,
অকস্মাৎ এক বিন্দু জল চিবুক বেয়ে গড়িয়ে যাওয়া ছাড়া,
আমি কার্যত উন্মাদ, হতবিহ্বল বিবেচনা রহিত প্রাণ,
ঠান্ডা হিমের রাত লুকিয়ে আছে তুষারে প্রগাঢ় আলিঙ্গনে।
আর আমায় গ্রাস করছে সর্বগ্রাসী মস্ত,
মত্ত এক চাঁদ,
পিন পতন ধরিত্রীর সাথে আমি আর আমার পরিতৃপ্ত আত্মা আর সেই আমার অপ্রাকৃত চন্দ্রিমা।
রায়হান এর সকল পোস্ট
কবিতার নাম যুদ্ধ
ন্যাটো,
প্রিয় ভবিষ্যৎ পৃথিবীর পথিকৃৎ,
তুমি এখন কোথায় আছো?
কেমন আছো?
এবার শীতে, শীতের কাপড় আছে কি?
পথিকৃৎ,
আমাদের আকাশ মেঘের ধুয়াশায় ঢেকে রেখেছে
আমায়।
মেঘ ভেদ করে বৃষ্টি নয় ঝরছে মৃত্যুর বাণ,
অজানা আতংকে কাঁপছে শহর, নগর বন্দর গ্রাম,
দলে দলে মানুষ ছাড়ছে তার প্রিয় ঘর, বাড়ি,
প্রিয় আসবাব, ড্রেসিং টেবিল, আয়না আর মায়া,
প্রিয়তম স্বামী, পুত্র পরিজন।
ঠান্ডা হিমের রাত, নেই লুকানোর গরম কাপড়,
ফায়ার প্যালেস কঠিন বরফের স্তুপের আকড়।
বন্যপ্রাণীরা পালাচ্ছে দিক বিদিক, শাসরুদ্ধ বাতাস,
পাখিরা নিয়ন্ত্রণহীন উড়ছে,
উড়ে যাচ্ছে ছেড়ে শহর।
তোমরা কি আমায় দুটো ডানা দেবে ডানা?
আমিও পাখিদের মতোই দিব এক উজাড় উড়াল।
ন্যাটো,
ভয় পেয়ও না, প্রিয় ভবিষ্যৎ পৃথিবীর পথিকৃৎ।
আমরা আছি তোমাদের খুব কাছাকাছি,
প্রচ্ছন্ন ছায়ার মতো,
আমাদের ব্যস্ততার মাঝেও আমরা
জল্পনা কল্পনা স্বপ্নের সিড়ি দিয়ে আপন গতিতে
উঠছি নামছি,
বয়কটের দিয়েছি ডাক।
পথিকৃৎ,
তাতে থামছে কি সাইরেন?
থামছে কি মৃত্যুর দহন?
থামছে কি মায়ের হৃদয়ের ধুকপুক?
থামছে কি আমার অশ্রু জল?
থামছে কি দানবীয় আক্রোশ,?
গলছে কি তোমাদের বরফের স্তুপের লুকায়িত মানবতা?
বড্ড স্বাদ ছিলো,
লাল ঝুঁটিওয়ালা কাকাতুয়াটি
নিয়ে নিব সঙ্গে,
প্রিয় পাখিটি,
আমার জন্ম থেকেই বন্দী,
ছটফট করে আগুনে পুড়বে, নয়তো পাথর চাপায় মরবে।
তোমাদের কি?
টাইম টু টাইম খাচ্ছো,
টাইম টু টাইম বিছানায়,
রমণীয় রমণ শেষে ক্লান্তিতে ঘুম।
ফ্রেশ সকালে কফির মগে চুমক দিতে দিতে,
টিভির নিউজে চোখ,
গাড়িতে এয়ারকুলার কিংম্বা হিটারে হিট,
লাউড স্পিকারে মিউজিক শুনতে শুনতে আফিস,
মিটিং, জল্পনা কল্পনা বয়কট,ব্যস্ততায় কাটে সময়,
স্বপ্নের সিড়ি দিয়ে উঠা নামা, ফের বাড়ি ফেরা,
তোমাদের দেশে সব আজব নিয়ম, দলিল দস্তাবেজ,
আমরা এখানে ক্ষণে ক্ষণে মরি, ক্ষণে ক্ষণে বাঁচি,
আর কত জন শামিল হবে মৃত্যুর মিছিলে, আজ।
.
০৩/০৯/২২ রায়হান
যখন প্রেম আসে
যখন প্রেম আসে,
ভ্রমর গুন গুন করে ভিতরে,
আর ভ্রমর গুন গুন করলেই
ফুলকে নারী বলে ভুল করি।
কাঞ্জিবরণ মন তখন চনমনে
নিরাভরণ।
মনে জাগে প্রশ্ন,
আচ্ছা কালিদাস কি ঋতুর? নাকি,
ঋতুকামের কবি।
বর্ষার জলোচ্ছ্বাসের মত ভেসে যাই,
যেতে যে ইচ্ছে করে তাই, যাই।
পূর্বাপর কে ভাবে তখন।
.
০৩/০২/২২ রায়হান।
মৃত্যুর ও মৃত্যু হয় ০৩/০৮/২০২২
পুতিন।
তুমি কি? গ্রীক উপখ্যানের সিসিফাস,
যে মৃত্যুর দেবতাকে শিকলে বেঁধে ফেলবে।
মৃত্যুর দেবতারও একদিন মৃত্যু হবে।
যেদিন তোমার প্রতিরক্ষার সমস্ত সুউচ্চ বেদির,
বূহ্যভেদ করে মৃত্যুর দেবতা থ্যানাটোস পৌছে যাবে
তোমার সম্মুখে,
সেদিন থেমে যাবে তোমার সমস্ত তর্জন, গর্জন
কুত্শিত অভিলাষের আগ্রাসন।
লেখা; রায়হান
মানুষ যখন মুগ্ধ
০২/১৯/২২
আমি তখন স্কুলে,
রাজবাড়ীর গ্যাটের পাশে কৃষনচুড়ায়
ফুটেছে আগুন রংঙা ফুল।
চোখে মাদকতায় মাদক নেশা
টের পাই কে যেন মেলছে পাখা।
সূর্যকে পিছনে রেখে হেটে যাই
দুই সারি বিশাল দউতকায় গাছের ছায়ায়,
ভাংগা ইটের ধুলামাখা পথে।
জোর পুকুর পার হয়ে সোজা পূর্বে।
দৈত্যের মত বিশাল শিমুল শাখে
পাখিদের হললা ঝগড়া
শিমুলের বিনীত প্রেম ছড়িয়ে উদবাহূ মেলে
বিদায়ী সূযের শেষ নমস্কারে শিমুল যেন
রক্তা্কত হৃদয়ের কিংবদন্তির কথা বলে।
আমি বিচলিত।ঊনমাদ প্রায়।
দুই ধারে ফসলের মাট, পএহীন বনজপতি,
চনমনে মনে হেটে যাই, খেয়াঘাট অবধি।
বট গাছের নীচে খানিক্ষন দাঁড়ায়, দেখি
দখিনা সবুজ সমুদ্রের খেলে ফাগুন হাওয়া
উওরে শশ্মান মন্দিরের চূড়া।
খেয়ার ওপাড়ে, গ্রামের বাড়ির মাঝে দিয়ে
ধূলিমাখা পথ,
বেখেয়ালি মন যখন ফিরে এল মনে
তখন আমি কেশুরিতা বাজারে বিশালাকার
এক প্রকান্ড বট বৃক্ষের নিচে,
মনে পড়ে গেলো শামসুর রাহমানের,
বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা।
আমার সামনে অন্তরালহীন সবুজ
ফিরুজা আকাশে ছাই রং এর মেঘ।
আঁকাবাকা খেতের আইল ধরে
আমিও যাই হেটে এঁকেবেঁকে।
অপার আনন্দের অনুভূতিতে
সম্মোহিত হয়ে চলে যাই বাড়ি।
অস্তির রাত শেষে
আমি এক বিপন্ন-বিস্ময়ের কবি।
যে পথ
প্রেম বিহীন চলে যাবে পথ
ভাবতে পারি কি?
যেমন ভাবতে পারি না
ধুয়া ছাড়া নির্মল আগুন।
এমন জন্ম হবে কিংম্বা হতে পারে,
যতদুর চোখ যায় স্মৃতির দাওয়ায়
কোন উদাসী প্রেমও আসেনি।
এমন ত নয়।
অতিবাহিত সময় আর যাপিত জীবন
যদি বলে দিতে পারতো আগামীর পথ,
তবে দিবধাহীন তোমায় নিয়েই,
দিতাম নিরন্তর উড়াল।
সহজে সব কিছু যেত
নির্বিকার মেনে নেওয়া।
বন্ধুরা যখন পত্রমিতালিতে প্রেম খুঁজে বেড়ায়
আমি তখন শূন্যতায় প্রেমের ভান করি।
তখন যদি জানা যেতো প্রেম এক
জটিল রসায়নের নাম।
তবে দিঘির জলে সাতার না চেয়ে
যে পথ আসেনি সময়ে
শিশির জলবিন্দুতেই নিতাম শরণ।