আরিফা তাজরিমিন এর সকল পোস্ট

আরিফা তাজরিমিন সম্পর্কে

আমি তো শুধু মানুষ দেখি, মানুষের ভিতরের মানুষ।

ফেলে আসা রাত আর রাতজাগা পাখিদের গল্প


মধ্য রাতের শান্ত নগরী। রাতের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় ভরা পূর্ণিমার চাঁদ। ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সুপ্রাচীন বৃক্ষরাজি। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সবুজ ঘাসের চাদর। সেই চাদরে কৌতূহলী সন্তর্পণ পদক্ষেপ কদাচিত ভেসে আসে মৃদু যান্ত্রিক শব্দ কিংবা বিপরিত লিঙ্গের দৃষ্টি আকর্ষনের প্রচেষ্টায় রাতজাগা তরুণের আবাহন। কখনোবা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে ভেসে আসে অচেনা কোন বাঁশির সুর। রাতের মুগ্ধতা রুপ নেয় বিষণ্নতায়। জীবন বড্ড নেশাতুর লাগে।


রাতের বুক চিরে অঝর ধারায় বৃষ্টি নামে ধরণীর বুকে। দণ্ডায়মান বৃক্ষরাজি সিক্ত হয় তাতে। রাত্রির ঘন অন্ধকার, ল্যাম্প পোস্ট থেকে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্মি আর বৃষ্টির কনা মিলে চলে মনি-মুক্তোর ঝলকানি। হাতে ধূমায়িত কফি আর কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথ। চলে জীবনের আবাহন।


একদা এখানে রাত্রি এসেছিল ভয়াল রুপ নিয়ে। নিকষ কালো রাত্রি। হানাদাররা এসেছিলো পাশবিকতা আর মৃত্যুর ভয়াবহতা নিয়ে। হানাদারের বুলেটের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করেছিলো সেদিনের রাতজাগা পাখিদের। সবুজ ঘাসের চাদরে বয়েছিলো রক্তের হুলিয়া।

এই যে সুপ্রাচীন বৃক্ষরাজি, সবুজ ঘাস, দণ্ডায়মান লাল ভবন আর এই চলার পথ থাকে রাতজাগা পাখিদের যাপিত জীবনের সাক্ষী হয়ে।।

(ইহা রোকেয়া হলের রোকেয়া হলের সব রাতজাগা পাখিদের জন্য)

রচনাকালঃ ২০০৯

অনুগল্পঃ হিসাব

একটি অনুগল্পের অপমৃত্যু অতঃপর-

ঠিক একযুগ বয়সে বালিকা আনা ফ্রাংক হবার স্বপ্নে বিভোর। গোপনে বাবার পুরাতন ডায়েরীটা নিজের সম্পদ বানিয়ে ফেলে। লেখার মান খারাপ না। স্থানীয় দৈনিকে দু-দশটা লেখাও ছাপা হয়।

তার ঠিক আধ যুগ পরে সদ্য কৈশোর পেরুনো তরুণী তার স্বপ্নটাকে খুব হিসাব করে ওয়ারিয়ানা ফালাচি পর্যন্ত নিয়ে যায়। হাত বাড়িয়ে দাও। বালিকা তার হাত বাড়িয়ে দেয় স্বপ্ন ছোঁয়ার সাধে।

তারপর, ঠিক দুই যুগ বয়সে সারাদিনের ক্লান্তির ঘাম শাড়ির আঁচলে মুছে সেদিনের সেই আনা ফ্রাংক কিংবা অর্ধ যুগ আগের ওয়ারিয়ানা ফালাচি বাজার-সদাই এর ফর্দ লিখতে বসে। বাজার-সদাইয়ের হিসাব মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

হিসাব মেলেনা বাজার-সদাই কিংবা জীবনের। সবকিছু বড্ড বেহিসাবি মনে হয়।

নিশুতি রাতের ইতিকথা ৩

নিঃসঙ্গ রাত্রির নীরবতা পেরিয়ে
কে তুমি সম্মুখে এসে দাঁড়াও
নব রুপে নব সুরে
কর নব নব দিগন্তের উন্মোচন
কে তুমি পেরিয়ে যাও আমার সিদ্ধ নিষিদ্ধর সীমারেখা
কে তুমি বদলে দাও আমার সকল চাওয়া পাওয়ার হিসেব।