রেসিপিঃ অল ইন ওয়ান- সব ধরনের মাছের তরকারি রান্না

(ব্যাচেলর এবং যেসব বিবাহিত ভাইদের বউ প্রায়ই বাপের বাড়ি ভেগে যান, তাদের জন্যে। 😀 )

ব্যাচেলর লাইফে টুকটাক রান্না জানা বেশ আবশ্যক। সঠিকভাবে রন্ধনপ্রণালী না জানার কারনে অনেকেই সবকিছু হজবরল করে ফেলেন। আবার অনেকেরই রান্নার জন্যে আলাদা আলাদা রেসিপি মনে থাকে না। ভাত মোটামুটি সবাই রাঁধতে জানলেও, তরাকারি রান্নার বেলায় আটকে যান অনেকেই। আজ আমি শেখাবো, একটি কমন নিয়মে কিভাবে সব ধরনের মাছের তরকারি সুস্বাদু করে রান্না করা যায়।

উপকরণঃ
সবার আগে উপকরণগুলো জোগাড় করে ফেলুন। আমরা ৪/৫ জনের উপযোগী এক বেলার মাছের তরকারী রান্না শিখবো। একবার শিখে গেলে প্রয়োজন অনুসারে উপকরন কমিয়ে/ বাড়িয়ে নিলেই হবে। উপকরনঃ

১. যে কোন সব্জি এক বা দুই পদ।(যেমনঃ ফুলকপি, সীম, কুমড়ো, বরবটি, মুলা, ঘাটি, কাচকলা, পেঁপে, লাউ ইত্যাদি)
২. আলু (ফালি করে কাটা বড় ১টি বা ছোট ২/৩ টি)।
৩. মাছ (প্রয়োজন অনুসারে ৪/৫ টুকরো)।
৪. সায়াবিন তেল (আধা কাপ+আধা কাপ)।
৫. রসুন বাটা (১ চা চামচ)।
৬. জিরা বাটা (১ চা চামচ)।
৭. পিঁয়াজ কুচি (পোনে ১ কাপ)।
৮. হলুদ গুঁড়া।
৯. মরিচ গুঁড়া।
১০. কাঁচা মরিচ (ফালি করে ৩/৪টি)।
১১. টমেটো ফালি (একটি), যদি থাক।
১২. ধনেপাতা কুচি।
১৩. লবন।

রান্নার প্রণালীঃ

১) প্রথমে সব সব্জি (আমরা সীম আর ফুলকপি নিলাম), আলু ও মাছ কেটে ধুয়ে নেয়া।

২) মাছ ভাজার জন্যে আলাদা কড়াই/ ফ্রাইপ্যান চুলোয় বসানো। মাছের টুকরোগুলোতে লবন ও হলুদ ভালো করে মাখানো। কড়াইতে আধা কাপ তেল ঢেলে, সেই তেলে মাছের টুকরোগুলো ভালো করে এপিঠ-ওপিঠ ভাজা।

৩) তরাকারি রান্নার জন্যে বড় কড়াই চুলোয় বসানো। কড়াইতে আধাকাপ তেল ঢালা। তেল গরম হয়ে আসলে, তাতে পেঁয়াজ কুচি (পোনে ১ কাপ) ও কাঁচা মরিচের ফালি (৩/৪টি) দিয়ে নেড়ে দেয়া।

৪) কিছুক্ষণপর পেঁয়াজ লালচে হয়ে আসলে, রসুন বাটা ১ চা চামচ ও জিরা বাটা ১ চা চামচ দিয়ে নেড়ে দেয়া।

৫) এর ১ মিনিট পর সামান্য হলুদের গুঁড়ো দেয়া এবং অল্প পরিমানে পানি দিয়ে নেড়ে দেয়া।

৬) পানি বলক আসলে (ফুটে বুদ বুদ ফোটা উঠলে), লবন ও মরিচের গুঁড়ো দেয়া। তার পরপরই সব সব্জি (ফুলকপি, সীম) ও আলুর ফালি দেয়া। তাপর কড়াই ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখা।

৭) আনুমানিক ১০ মিনিট পর তরকারি কষে আসলে (সব্জি ও আলু অর্ধ সেদ্ধ হলে), আবার বেশী পরিমানে পানি ঢালা (সব্জির পরিমান অনুযায়ী পানি কম বেশী হবে) ও সব্জিগুলো ভালোমত নেড়ে দেয়া। কড়াই ঢেকে রাখা।

৮) পানি/ ঝোল একটু কমে আসলে টমেটো ফালি ও ধনেপাতা কুচি দিয়ে সব্জিগুলো নেড়ে দেয়া। এরপরপরই ভাজা মাছের টুকরোগুলো সাবধানে তরাকরিতে দেয়া। কড়াই ঢেকে রাখা।

৯) আনুমানিক ১০/১৫ মিনিট পর ঝোল আরো কমে মাখা-মাখা হয়ে আসলে এবং সব্জি ও আলু পরিপূর্ণভাবে সেদ্ধ হলে, তরকারি উঠিয়ে ফেলা। তরকারি উঠানোর পূর্বে অবশ্যই লবন ঠিকমত হয়েছে কিনা, তা চেক করতে হবে। তরকারিতে লবন না হলে, পরিমান মত লবন দিয়ে, ২/৩ মিনিট পর তরকারি উঠানো। ব্যাস, হয়ে গেলো আপনার মাছের তরকারি রান্না। মনে রাখবেন, ঝোল কতটুকু রাখবেন সেটা আপনার ব্যাপার। মূলতঃ সব্জি, আলু সেদ্ধ হওয়া ও ঝোল রাখার পরিমানের উপর নির্ভর করে তরকারি উঠাবেন।

বি.দ্র.- রান্না একটি শিল্প, একদিনেই হয়তো আপনার রান্না খুব ভালো হবে না। তবে আস্তে আস্তে অনেক ভালো হবে ইনশাআল্লাহ। আমি নিজেই উপরের পদ্ধতিতে প্রথমবার রান্না করেও, অনেক সুস্বাদু তরকারি রাঁধতে সফল হয়েছিলাম। এবার আপনার পালা, ট্রাই ইট।

✔ পিডিএফ আকারে ডাওনলোড করুন এখান থেকে।

আমার ব্যক্তিগত ব্লগ।
ফেসবুকে আমি।

8 thoughts on “রেসিপিঃ অল ইন ওয়ান- সব ধরনের মাছের তরকারি রান্না

  1. আমার মুরুব্বীনি প্রায়শঃ আমাকে বাড়িতে একা ফেলে চলে যান মা-বোনের বাসায়।
    ঐতিহাসিক এই রেসিপি আমার কাজে লাগবে নিশ্চয়ই। প্রস্তুত হলাম। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_yahoo.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।