হে রাজ্ঞী, আমি যা দেখেছি — উচ্চারণ করা অনুচিত, কেননা মানুষ তা বিশ্বাস করবে না। আমি কি জগৎবাসীকে জানাব গ্রামের শরীর উৎক্ষিপ্ত হয়েছে কাপাস তুলোর মতো, ছোট ছোট ধাতুর ফুৎকার সেই দেহগুলিতে ছিদ্র করে দিচ্ছে। আমি কি ফাঁস করে দেব এই তথ্য যে শ্রীমধুসূদনের হাতের টানে শিশুরা পায়ুবরাবর দু’ফালি হয়ে যাচ্ছিল, তারপর রাজাবাজারের কসাইবস্তিতে যেমন গোরুর মুন্ডু, কলজে, নাড়িভুঁড়ি চপারে কেটে আলাদা আলাদা প্যাকিং হয়, তাদের ঠাসা হচ্ছিল বস্তার মধ্যে। একের পর এক এলাকাদখল, সেখানে মারুতি থেকে নামছেন, ধৃষ্টকেতু, চেকিতান আর কুন্তিভোজ … এর মধ্যে খবরঃ কোনও কোনও সাংবাদিক ঘটনাস্থলেই লুকিয়ে আছে। হল্লা উঠল, শালা সঞ্জয় মিত্র যেন পালাতে না পারে! কুঁজো হয়ে ছুটতে ছুটতে দেখছিলাম লাশের ঢিবি নিয়ে ট্রলার পাড়ি দিচ্ছে মোহনার দিকে, আর জলে তাজা রক্তের গন্ধ পাওয়া ঝাঁক ঝাঁক হাঙর, কুমির, ঘড়িয়াল উঠে এসেছে নদীতে, খালের মুখটায়। অয়ি পৃথা, ক্ষমা করবেন, কেননা আমি আজও জানতে পারিনি এই দৃশ্য দুঃস্বপ্ন না বাস্তব যে ধানখেতে আমার পায়ে জড়িয়ে যাচ্ছিল মেয়েদের মাথার চুল, টুকরো অন্তর্বাস; এ-প্রশ্নও করবেন না কেন আমি হোটেলের মেঝে বেসিন বাথরুম কঠিন বমনে ভরিয়ে দিচ্ছিলাম এবং তা থেকে ছিটকে বেরোচ্ছিল খণ্ড খণ্ড রক্তমহাভারত, শ্রীশ্রীগীতার কার্তুজ…
2 thoughts on “লাশফুল ফুটিয়েছ: আট”
মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।
এই ধারাবাহিকের আগে পড়ের বিষয়টি জানা না থাকলেও স্বতন্ত্র চেতনা আর অপূর্ব শব্দের ব্যবহার ভালো লেগেছে প্রিয় চন্দন দা। অন্তত আমার কাছে। শুভ সকাল।
ঠিক আছে, দাদা। আমি “লাশফুল ফুটিয়েছো” — এই গোটা সিরিজটাই পাঠিয়ে/পোস্ট করে দেবো।