দ্বিতীয় রূপকথা

একজন দার্শনিক হিসেবে বলতে পারি, তোমার আমাকে ছেড়ে যাওয়া ছিল আন্তর্জাতিক মানের ঘটনা। তুমি পরিহার করেছ, আমার এই স্বীকারোক্তি অবশ্য আমার একধরণের চলে যাওয়াকেও প্রমাণ করছে।

যতক্ষণ না কেউ বলে সে ফিরে যাচ্ছে, নিয়মমতো ধরে নেওয়া হয়, মানুষটা উপস্থিত; আর যদি মুখ ফুটে বলল ‘ঘর বাঁধলাম, বাবি’, তবে তো কথাই নেই। কিন্তু একজন দার্শনিক সংক্ষেপে একজন দার্শনিক বলেই এই কাছে থাকা বা দূরে যাওয়ার রহস্যে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখে না। সে জানে, যেমন কাল্পনিক বিদায় আছে, তেমনি কাল্পনিক উপনিবেশও, তাই শুরুতেই দ্বিতীয় রূপকথাকে ভেঙে দিতে এগিয়ে আসে।

আবার, হারিয়ে যাওয়াকে হারিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে, বা প্রস্থানের অভিনয়ের সঙ্গেও গুলিয়ে ফেলা উচিত হবে না, যদিও বলা যায়, অভিনয় সবচেয়ে স্থায়ি বাস্তবতা।

তুমি বলেছিলে পাশে আছি, তারপর দেখা গেল মুছে দিয়েছ আমাকে; তাহলে আইন মতো ধরলে, পাশে থাকার সময়ই অগ্রহণ করেছিলে। শুধু তাই নয়, তুমি অনন্তকাল ধরেই দূরে আছ। মানে, ছেড়ে যাওয়ার মধ্যে একরকম অসীমতা রয়ে গেল। যদি শান্ত আর শান্তিতে থাক, মনে হতে পারে বুঝি আমার মন ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছ। আবার এমনও ভাবা যায় যে তুমি হয়তো সম্ভবত শান্ত শান্তিতে বিরাজ করছ অন্য কোথাও।

তাহলে, পরিবেশ সব সময়ই সংকটে রয়েছে। অথচ, আমরা দুঃখের লাগোয়াভাবে সংকটের কথা বলি, সুখের সংযুক্তে বলি না। কেন বলি না?

যদি শক্তি হিসেবে দেখা যায় — তোমার চলে যাওয়া ভীষণ সৌন্দর্যময়, যাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে। কারণ সৌন্দর্যের গভীরতম ভেতরে বিচ্ছেদ রয়েছে আর সে খুব ক’রে ওখানটাতেই থাকতে চায়।

ওকে বসতে দিও।

2 thoughts on “দ্বিতীয় রূপকথা

  1. যুক্তিযুক্ত কথা গুলোন বেশ নান্দনিক ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। গ্রেট। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

  2. এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে, জানিনা সে এইখানে শুয়ে আছে কিনা — আপনার লেখা পড়ে আমার এই লাইন দুটি মনে পড়ল।

    ধন্যবাদ জানাই।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।