OBSCENE: from latin obscenus

OBSCENE: from latin obscenus. meaning ill-omened, a sign of fearful future

অবসিন শব্দের অর্থ অশ্লীল। কিন্তু ওপরে দেখা যাচ্ছে, অবসিন এসেছে ল্যাটিন obscenus থেকে, যার মানে “কুলক্ষণযুক্ত”, “এক ভয়জনক ভবিষ্যতের চিহ্ন”।

নগ্নতাকে আমরা অশ্লীল বুঝি, অথচ শুরুতে মানুষ ছিল নগ্ন বা নগ্নপ্রায়, যৌনতা নিয়ে বিধিনিষেধ অনেক সামান্য ছিল, ভাষাকে ভালো-খারাপে ভাগ করে দেওয়া হয়নি। সভ্য-অসভ্যের বাইনারিও তখন অ-তৈরি।

অশ্লীল কী? যা শোভন নয়। কিন্তু অশোভন কিছু আমাদের ভয়ের শাসানি দেবে কেন? বিশেষ করে যখন ওই অবস্থাটার ভেতর দিয়েই এগিয়ে এসে মানুষজাত এ-পর্যন্ত পৌঁছেছে?

সভ্যতা নিয়ে অত বড় ক’রে না ভেবে যদি নিজের বেড়ে ওঠা নিয়েই চিন্তা করি, আমার ন্যাংটো শিশুরূপ সামনে এসে দাঁড়ালে নিশ্চয়ই ভয় পেয়ে ইল-ওমেনড মনে করবো না সেই নগ্নতাকে?

তার মানে, যত দিন গেছে আমরা ভাবতে শিখেছি — অশ্লীলতার বিহার যৌনতাযোগে। সাদা বাংলায়: যে নগ্নতা প্রাপ্তবয়স্কের, যে নগ্নতার যৌনসক্ষমতা আছে, সেটুকুই আসলে অশ্লীল, অথবা — আবার শব্দের মূল মানেতে ফিরে আসি, কুলক্ষণযুক্ত।

এই যুক্তি অনুসরণ করে পাবো: একজন “সুলক্ষণা” নারীর শরীর থেকে পোষাক খসে গেলে সে “কুলক্ষণযুক্তা” হয়ে পড়ছে (পুরুষের বেলাতেও তাই)। মানে, স্বভাবে বা চেহারায় নয়, সুলক্ষণ সুতোর গায়ে লেগে থাকে। সভ্যতা আর অসভ্যতার মাঝখানে এইভাবে পোশাক এসে দাঁড়িয়েছে — থার্ড আম্পায়ার। থার্মোমিটারও বলতে পারি। কিন্তু বিজ্ঞান বা ক্রিকেট খেলার মতো এখানে কোনও পরীক্ষিত নিয়ম বা কর্তৃত্ব নেই ব’লে আমরা প্রত্যেকে নিজের মতো করে বুঝি আর বোঝাতে চাই কতোটা নগ্নতাকে অশ্লীল নাম দেওয়া যাবে। কুড়ি পার্সেন্ট, চল্লিশ নাকি শতকরা ষাট ভাগ?

অবসিনিটি-র ধারণা যৌনতার শক্তির বিরুদ্ধে কাজ করছে। আর কার্য-কারণ নিয়মে ধরে নেওয়া হচ্ছে যে নগ্নতা যৌনতা ডেকে আনবে (যেমন দুর্গন্ধ বমন-উদ্রেককারী)।

আজ পর্যন্ত পৃথিবীর বড় ধর্মমতগুলো যৌনতাকে ঠেকানোর চেষ্টা করে গেছে। ক্বচিৎ দুএকজন ছাড়া আমরা কোনও গুরু পেয়েছি কি যিনি যৌনতার শক্তির কাছে “ঈশ্বর” গোহারা হারবে টের পেয়ে তার পেছনে “নরকের ভয়” নামের তদন্ত সংস্থা লাগিয়ে দেননি? বদনামের বন্যা বইয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেননি যে যৌনতার বহি:প্রকাশ হচ্ছে অশ্লীল মানে obscenus মানে “এক ভীতিজনক ভবিষ্যতের স্বপ্ন”, মানে, ধর্মের ভাষাতে “নরকের ভয়”?

নদীর বান সমুদ্রজোয়ার আটকাতে পারে কিনা আমার জানা নেই, তবে ধর্ম-যৌনতার এই মুটভেড়ে আমরা সেই সৌন্দর্যময় ইনোসেন্ট বিষয়টাকে হারালাম — নগ্নতা। ধর্মরাষ্ট্র থেকে রাজনৈতিক রাষ্ট্রে আসার সময় সভ্যতা লাগেজে করে এই বোঝাপড়া খুব দারুণ বয়ে এনেছে। সভ্যতার এক নম্বর অসভ্যতা হয়তো এখানেই: নগ্নতাকে শহীদ বানিয়ে সে যৌনতার কোমর ভেঙে দিতে চেয়েছিল। আর তাই শরীরের ধারণা হয়ে দাঁড়াল একমাত্রিক, বস্তাপচা কিন্তু ভীষণ গোপনীয়! দেহের অধিপতি হয়ে বসলো পোশাক। কোন দেহ? যে চাঁদের আলো মাখে না, বসে না শিল্পীর তুলির সামনে, মাতৃভাষা ভুলেছে… যে দেহের দর্শক তো আছে, কিন্তু কোনও দর্শন নেই!

আর তাই নগ্নতা হয়ে দাঁড়িয়েছে শুধু যৌনতা উৎক্ষেপকারী নকল এক স্পেস শাটল।

3 thoughts on “OBSCENE: from latin obscenus

  1. যুক্তি এবং তথ্যপূর্ণ চমৎকার আলোচনা। শুভ সকাল প্রিয় চন্দন দা। 

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।