নয়
তোমার-আমার তুলনা করতে গেলেই আশ্বিনফুলের সঙ্গে অসময়ের বৃষ্টির তুলনা
এসে যায়। এক মাঠ পড়ে আছে শায়িত,
তার ওপর এক-আবরণ হলুদ। ছোট দিগন্তের
দিক থেকে উঠবে কুয়াশা; সন্ধেবেলাকে অরণ্য ধরলে কুয়াশা বাঘ, অরণ্যশাসন। পুটুশ করে সন্ধ্যাতারা জাগবে। জাগবেই গো!
তুমি সবসময় পরিণতি খুঁজেছ —ছড়া থেকে প্রবন্ধের দিকে, রাবাংলা থেকে লালিগুরাশের দিকে। তাই তোমার জীবনে বারবার সৃষ্টি আর প্রলয় নেমে আসছে। তুমিও আমার মতোই অনন্ত, কিন্তু লক্ষ্যের দিকে ছোটা অনন্ত তুমি। তুমি আমাদের প্রেম শেষ হলেও থেকে যাবে। আমি প্রেমের শেষে থাকব এবং থাকব না।
আমি যে সবার রোদ্দুরের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারি না — এই সত্যকে অচিখ্যান করেছি, আমি যে টাকা নদীজঙ্গলে নষ্ট ক’রে ফেলি — এই ধারণাকে দেশনা করেছি, আমি যে আজও যোনিজনপদে একটা ছাতা হাতে ঘুরতে যেতে চাই —এই ইচ্ছেকে উত্থানীকৃত করেছি। জড় আর নিঃশ্বাসীদের তৈরি খামের মধ্যে ঢুকে মাঠের দুই শেষে দেখছি জন্ম আর মৃত্যুকে। মাঠের মধ্যেও জলকীটের ভেতর, সাপের অস্তগামী চলাচলের মধ্যে, এই উত্থিতগুচ্ছ তো ওই পরিণামদর্শী নোয়ানো ধানশীষে অসংখ্য জীবন আর চ’লে যাওয়া। হৃদয়ে কৃষ্ণ আসেন, স’রে যান। শীতার্ততায় বুদ্ধের ছায়া পড়ে, তারপর তিনিও অবলেশ। আমার মধ্যে আমি প্রবেশ করি শেষ অবধি।
এই ঘটনাকে “সমুদ্রের শুরু আছে” ব’লে জানলে তুমি দুঃখ থেকে মুক্ত হবে না। এই বুঝ-কে “সমুদ্রের শুরু আর শেষ আছে” ব’লে জানলে
তুমি দুঃখ থেকে মুক্ত হবে না। এই সহজকে “সমুদ্রের শুরু আর শেষ আছে, কিন্তু ঢেউ অন্তহীন” ব’লে জানলে তুমি দুঃখ থেকে মুক্ত হবে। যেহেতু প্লাইউডের ভেতরে কাঠের টুকরোর মতো তোমাকে ছোট ছোট নিত্যের সমাহার বলা যায়, তাই তুমি মৃত্যুর পরে থাকো না।
আমি মৃত্যুর পরে থাকি…
…নাহ!
প্লাইউডের ভেতরে কাঠের টুকরোর মতো তোমাকে ছোট ছোট নিত্যের সমাহার বলা যায়, তাই তুমি মৃত্যুর পরে থাকো না।
আমি মৃত্যুর পরে থাকি…
…নাহ!
সময়োপযোগী বিশ্লেষণ ।