সিঁড়ি (অণুগল্প)

সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বিনয় ভাবে উপরের বাড়িটা থুড়ি ফ্ল্যাটটা আমার তো? আমাদের তো? অর্থাৎ বিনয় মনালি মৈসমের বাড়ি তো? গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করে চালাতে গিয়ে সামনে এসে যায় বয়স্ক বৃদ্ধ। পাশের বস্তিতে থাকে বোধহয়। অনেকটা বাবার হেঁটে যাওয়ার মত।
বিনয়ের বয়স তখন দশ বারো। প্রথম একখানা চটি পায়। ব্রেক কষতে গিয়ে পায়ের বুটে চোখ চলে যায়। মাঝে বেশ কয়েকটা বছর। খুঁটে আনা মায়ের সেই রান্না স্বাদ যত্ন কত হৃদয় মেশানো। রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করায়। কাছেই একটা ফ্ল্যাট হচ্ছে। এক ভদ্রমহিলা জল ঢেলে সিমেণ্ট মাখাচ্ছে। উপরের দিকে তাকিয়ে বিশ্রাম খুঁজছে। মা এভাবে বিনয়কে জড়িয়ে বিশ্রাম নিত। কত গাছ ছিল পুকুর ধারে। সব এখন বেপাত্তা।
গাড়ির কাঁচে হাত লাগিয়ে মায়ের চলে যাওয়া দেখে বিনয়। সকালের স্কুল সেরে বাড়ি ফেরাদের দেখে। আজ যেন জরুরী মিটিংয়ের গায়ে কি যেন সেঁটে আছে। আয় ও ব্যয়ের হিসেবে আরও চাই। সিঁড়ি টপকানো উচ্চতায় বিনয়কে মই করা নীতি একবার নীচে একবার উপরে।
অথচ সমতল আবদারে দাদা দিদি পাড়া প্রতিবেশী অনেকটাই আকাশ ছাড়িয়ে। বা নীচে খাদে।
বিনয় গাড়ি পার্ক করে অফিসে ঢুকে প্রথমেই ডেকে নিল গ্রাস রুটের কর্মীদের। চেষ্টা করল তাদের হাত ধরে নিজের সিঁড়িটা চিনতে।

6 thoughts on “সিঁড়ি (অণুগল্প)

  1. বেশ শুধু নয়; অনেক সুন্দর হয়েছে অণুগল্পটি। অভিনন্দন প্রিয় কবি। ধন্যবাদ।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।