ঘরনী

– বউমা, ক’দিন ধরে লক্ষ্য করছি কোথাও বেরোচ্ছ না অথচ ঘরের মধ্যে সেজে গুজে ফুলবউ হয়ে থাকছ। ব্যাপারটা কি?
– কেন মা? আমি তো রান্নাবান্না ঘরের দেখাশুনা সবই করছি। তাহলে?
– তা করছো। তবে বাইরে বেরনো পোশাক আশাক সব বের করে উগ্র সাজ পরে আছো। কেন?
– কোথায় উগ্র মা। এভাবেই তো মেয়েরা সুন্দর।
– তা সুন্দর। তুমিও আমার সুন্দরী বউমা। তবে ঘরে এমন পোশাক কেন পরছো। কেউ কি আসবে?
শাশুড়িকে জড়িয়ে অগ্রণী বলল – আসবে মা আসবে। আপনার ছেলে।
শাশুড়ি শান্তাদেবী আঁৎকে ওঠেন। বলেন – সে কি? তাহলে কি শিবু তোমাকে আর ভালোবাসে না?
অগ্রণী এবার প্রাণের হাসি হেসে বলে – বাসে মা। খুবই ভালোবাসে। তাই তো তাকেই আমার সেরা আরও সৌন্দর্য রূপ দেখাতে হবে। বাইরের জন্য যা তা ঘর থেকে শুরু করা দরকার। তাই পরকে দেখানোর প্রাপ্য ঘরের মানুষ কেন বঞ্চিত হবে? মাঝে মাঝে এ রকম আমাকে দেখে আমার ঘরের মানুষ প্রেমে বলে উঠুক – তোমাকে দারুণ লাগছে। আই লাভ ইউ। তাই না মা?
শাশুড়ি কিছু বলল না। কটমট করে তাকিয়ে উঠে নিজের ঘরে চলে গেল। খুব রেগে গেল কি? অগ্রণী বুঝতে পারল না।
পরদিন বিকেলে বারান্দায় শ্বশুর মশাইয়ের পাশে ঝকঝকে ফুল বউ শান্তাদেবীকে দেখে অগ্রণীর চোখ ছানাবড়া।
চা দেওয়ার সময় শান্তাদেবী অগ্রণীর কানে কানে বলল – অনেকদিন পরে তোমার শ্বশুরমশাই আজ আমাকে বলেছে – তোমাকে দারুণ লাগছে। আই লাভ ইউ।
ছেলেকে পড়াতে হবে তাই হাসতে হাসতে অগ্রণী নিজের ঘরে চলে এল।

6 thoughts on “ঘরনী

  1. ইন্টারেস্টিং অণুগল্প। আই লাভ ইউ শব্দটি শোনা এবং বলায় দারুণ এক অনুভূতি প্রকাশ পায়।

  2. উগ্রতা বা সৌন্দর্য্য পুরোটা নিজের কাছে। মানুষ সুন্দর থাকতে পছণ্দ করে। করবেই না কেনো। শুভেচ্ছা কবিদা। :)

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।