শরীর

এক.

নাফ নদীডা বঙ্গ সাগরে মিইশা গ্যাছে।
বার্মা রাজ্যের অনেকগুলান
মরা মানুষ ভাইসা আইছে।
মাইয়াডা সাগর দিয়া ভাসতে ভাসতে চইলা আইছে
কেউ জানে না কেমনে আইছে!
সবায় জানে ভাইসা আইছে।
পরথম তারে দ্যাখা গেছে উবুত হইয়া হুইয়া আছে।
জটল্লা বাইন্দা হগলতে দেখতে লাগচে।
একডা মাইয়া উবুত হইয়া হুইয়া আছে।
মাইয়াডা ভাইসা আইছে।
হগলতে কয় মাইয়াডা বাইচা আছে!
কিছুপর মাইয়াডা চোখ মেইল্লা চাইয়া রইছে।

দুই.

ভাষাডা বাংলামতো কিছু বুঝা যাইছে।
অল্প পরে অবাক হইছে ,
মাইয়াডা সুইন্দর কইরা
কোরানডা তোলোয়াত করতে লাগছে।
এতিম খানায় তার ঠাই হইছে।
সকাল বিকাল খাইবার পাইছে।
ছোড ছোড পোলাপান তার কাছে কায়দা
পড়া করতে লাগছে।
মাঝে মাঝে সাগর পারে ঘুরতে গেছে,
ঝিনুক শামুক কুড়াইয়াছে।
বেশতো দিন কাটিছে,
মাইয়াডার একটা ঠাই হইছে।

তিন.

সইন্ধাবেলায় অনেকগুলা জোয়ান পোলা
সাগর পারে ঘুরতে লাগছেে
একটা পোলা আন্ধাইরে
মাইয়াডারে কাছে ডাইকা লইছে
ঝিনুক শামুক দামাদামি করতে লাগছে,
এক ফাকে তার বুকের মাঝে হাত দিয়াছে।
কতবেল সাইজের ফুইলা উঠা
ছোড ছোড মাংসগুলায় আদর দিছে, আদর দিছে।
মাইয়াডা কাইপা উঠছে, মাইয়াডা কাইপা উঠছে।
ছেলেডা জিগাইছে, কেমন লাগছে? কেমন লাগছে?
মজা লাগচে, মজা লাগছে।
মজা লাগচে, মজা লাগছে।
ঝিনুকের মালা না নিয়া কই যাইতে লাগছে?
বিশ টাহা তার দাম আছে।
ছেলেডা একশ টাকা গুইজা দিছে।
বুকের মাঝে আদর দিলে তার দাম আছে,
মাইয়াডা বুইজা গেছে।

চার.

সকাল বেলা কুরানডা পইড়া মাইয়াডা
যেই বাইরে আইতে লাগছে।
পিছন থেইকা হুজুর মিঞা যাইতা ধরছে।
বুকের মাঝে হাত পড়েছে।
মাইডা বুঝতে পারছে। অবাক হইয়া চাইয়া রইছে।
হুজুর মিঞা হাসতে হাসতে
আরও জোরে চাইপা ধরছে।
জিগায়তাছে, কেমন লাগছে? কেমন লাগছে?
মজা লাগচে, মজা লাগছে।
মজা লাগচে, মজা লাগছে।
বুকের মাঝে আদর দিলে তার দাম আছে,
মাইয়াডা চাইয়া রইছে।
গরিব মানুষ, আমার একটু শখ জাগছে-
বইলা হুজুর চইলা যাইতে গালছে।
বুকের মাঝে আদর দিলে তার দাম আছে,
মাইয়াডা পিছন পিছন চইলা আইছে।

পাঁচ.

পরের দিন বিয়ানে মাইয়াডা হুজুররে খুঁজতে লাগছে
পরের দিন দুপুরে হগলতে হুজুররে খুঁজতে লাগছে
পরের দিন রাইতে হুজুর কোথাও নাই
হগলে জাইনা গেছে।
আদর দিয়া হুজুর মিঞা কোথায় যেন চইলা গ্যাছে,
সাগর দিয়া ভাইসা গেছে।

6 thoughts on “শরীর

  1. লেখকের কলম ও পাঠকের সমাজ পরিবর্তনের বলিষ্ঠ হাতিয়ার । 

    1. মন্তব্যটি বুঝতে পারছি। 

      এই লেখায় এই মন্তব্যটি কি পজেটিভ? 

  2. এটাই হচ্ছে সত্যিকারার্থের প্রতিভা। ভেবে পাই না … এমন সব কনসেপ্ট মাথায় আসে কিভাবে স্যার ? কোন এক সময় আমার হাতের কলম কী-বোর্ডের শব্দের প্রসব বেদনা উঠলেও এখন বন্ধ্যাত্ব চলে এসেছে। পেটে বোমা ফাটলেও তিন লাইনের বেশী উগরানো সম্ভব হয়ে উঠেনা। সেখানে জাত লিখিয়েরা নিত্য নতুন সব স্বতন্ত্র ধারার কথা কাব্য পাঠককে উপহার দিতে পারেন … সমকালীন চিত্রপট অসাধারণ এসেছে। ভালো থাকুন এবং সবাই ভালো থাকুক এমন প্রত্যাশায় লিখাকে এগিয়ে নিয়ে চলুন কবি। শুভেচ্ছা।

    1. এই যে এখানে তিন লাইনের বেশি লিখলেন।  তবে কি এই কবিতাটি একটা ডিনামাইট?  হা হা হা

  3. অহনে মাইয়াডাও বুইজা গেছে, মজার দাম আছে; আদরের দাম আছে। আগে কিন্তুক বুইজা উঠতে পারব নাই। হিল্লাইগা হুজুর বেডায় মজা নিয়ে। হের পরে উদাও অইছে। 

    এভাবেই এদেশে নারীর দেহ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলছে, কবি দাদা। মহান স্রষ্টার কাছে জানতে চাই, এর শেষ কোথায়? 

    শুভকামনা থাকলো শ্রদ্ধেয় কবি দাদা। সাথে শারদীয় শুভেচ্ছা।

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।