মহাপ্রলয়ের আগে

মহাপ্রলয়ের আগে


আমরা ভুলে যাবো আমাদের মানবিক পরিচয়
আর তখনই মহাপ্রলয় আসবে নেমে আমাদের
খুলির উপর। যে দেহ- এই মাটি গ্রাস করেছিল
অনেক আগেই,
সেই দেহকে অস্বীকার করবে প্রিয় প্রাণপাখি,
বলবে-
আমি কোনোদিনই তোমার সাথী ছিলাম না।
.

আমি অনেক আগেই পড়েছি হাড় হত্যার কাহিনি
জানি, কীভাবে উল্টে ধরতে হয় ছাতা, কীভাবে—
বজ্র এবং বিবেকের মিশ্রণে
রাঙাতে হয় শাদা কাপড়ের থান। কতোটা
রক্তাক্ত হলে,
জীবনকে বিসর্জন দেয়া যায়।
না—
আপাততঃ কোনো সুইসাইড নোটই কাম্য নয় আমার।
.

দেশত্যাগের জন্য যেসব যোগ্যতা থাকার দরকার ছিল,
তার কোনোটাই আমার ছিল না। তারপরও আমি
হয়েছিলাম দেশান্তরি। গৃহত্যাগী ঝরণায় ভেসে যে স্মৃতি
এর আগে খুঁজেছিল সূর্যের দেখা— আমি তার
ছায়ামূর্তি হয়ে সেরেছিলাম সমুদ্রের সপ্তম বিহার।
অষ্টম নৌবহর যুদ্ধে যাবে না, এমন নিশ্চয়তা পেয়ে
ছুঁ’তে চেয়েছিলাম চাঁদের চতুর্থ আঙুল ।
আলো মানুষকে শান্তির বারতা দেয়।
ভুলে গিয়েছিলাম—
একদিন ধ্বংস এসে আমাদের দেখাবে নতুন
নির্মাণের শৈলীকলা।
এবং
সকল মহাপ্রলয় মানেই হারানোর বেদনা নয় ।
.

যারা পত্রের উত্তর দিতে পছন্দ করে না, তাদের প্রতি
আমার কোনো ক্ষোভ নেই। কিংবা যারা বৃষ্টিতে ভিজবে বলে
সড়কে বেরিয়ে, ঘরে নিয়ে ফিরেছিল বজ্রঝলক—
তাদের প্রতিও কোনো হিংসে নেই আমার।
এ শহরে কেউ আমার প্রতিদ্বন্ধী ছিল, এমন অঙ্কনের
ভেতর আমি কখনও’ই খুঁজিনি দানার প্রতিচ্ছবি।
গ্রামের পাঁজর চিরে বয়ে গেছে যে পথ,
সে পথের পাশে বসেই আমি বাজিয়েছি আমার মোহন বাঁশি।
কেউ শুনবে না জেনেও দিয়েছি ডাক—
কাছে টেনে প্রলয়ের প্রথম পরিণয়।

4 thoughts on “মহাপ্রলয়ের আগে

  1. প্রলয় তো প্রতিনিয়তই হচ্ছে! যা দেখতে পাই আমার চারপাশে। হ্যাঁ হচ্ছে তো! অহরহ হচ্ছে। কিন্তু কেউ এই প্রলয়ের তোয়াক্কা করছে না। সবাই এড়িয়ে যাচ্ছে। 

    আপনার লেখনী পড়ে শুধুই ভাবছি! দারুণ লিখেছেন! আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ ।

  2. কবিতায় শুভেচ্ছা প্রিয় কবি প্রিয় ইলিয়াস ভাই। শুভ সন্ধ্যা এবং শুভ সকাল।

  3.                                 কিংবা যারা বৃষ্টিতে ভিজবে বলে
    সড়কে বেরিয়ে, ঘরে নিয়ে ফিরেছিল বজ্রঝলক—
    তাদের প্রতিও কোনো হিংসে নেই আমার।

     

    * মুগ্ধ… https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।