অশ্রু দিয়ে লেখা কবিতা

অশ্রু দিয়ে লেখা কবিতা
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

অন্ধ কানাই গান গেয়ে যায়
হাট কবিতার পাতায়।
অন্ধ জনক জননীরে হেরি
রামায়ণে কাব্যগাথায়।

অন্ধ মহারাজ ধৃতরাষ্ট্র যিনি
জননী গান্ধারীর পতি,
অন্ধ চৈতালী যাত্রাপালায়
দৃষ্টিহীনা হলেও সতী।

অন্ধ সমাজের অন্ধকারে কত
কাঁদে অভাগিনী নারী,
স্বজন-হারা স্বামী-পুত্র সংসার
কভু কি ভুলতে পারি?

না ফোটা ফুলের কলিরা যত
আঁধারেই ঝরে যায়,
রাতের আঁধারে রজনীগন্ধারা
নীরবে অশ্রু ঝরায়।

অশ্রু ঝরানো সোনালী প্রভাতে
সংবাদ পৌঁছায় দ্রুত,
আসে নিকো ফিরে কলেজ হতে
তরুণীরা কত শত।

নিরুদ্দেশ হয়েছে কত তরুণী
কেবা রাখে সে খবর,
হিসাব রাখি না ওদের কারা
দিয়েছে জীবন্ত কবর?

সবুজ মাটিতে কেন রক্তে সিক্ত
এ মাটি মায়ের আঁচল,
পারি না লিখতে ওদের কবিতা
চোখ বেয়ে আসে জল।

অশ্রু সজল কাব্য লিখে কবি
কবিগণও আজ অন্ধ,
পিস্তল ও ছুরির বাহাদুরি আজ
বাতাসে লাশের গন্ধ।

অশ্রু দিয়ে লেখা হয়েছে জানি
আমার কবিতা কত,
অশ্রু ঝরা নারী হৃদয়ের ব্যথা
জমা হয় অবিরত।

কবির লেখনী বিদ্রোহী আজিকে
শুনি আজ পেতে কাণ,
বিদ্রোহীনী নারী জেগেছে আজি
হও সবে সাবধান।

কবির লেখনী ক্লান্ত আজিকে
সময়ের কথা বলে,
এসেছে সময় বিদ্রোহ করো
এই ধরণীর তলে।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

5 thoughts on “অশ্রু দিয়ে লেখা কবিতা

  1. আমার বেশ লেগেছে। তবে কবিতার চেয়ে বেশি গান হিসেবে। পুরান কিছু শব্দ যেমন "হেরি" আধুনিক কবিতায় স্বস্তিতে থাকেনা; কিন্তু গানে বেটার অবস্থায় থাকে। লেখার ধরণটাও গানের মতো লেগেছে। 

    সার্বিক বিবেচনায় পাঠক মুগ্ধ হবে!

  2. উপরের মন্তব্য দাতার মন্তব্যের সাথে আমি একমত মি. লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।

    ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।

  3. শব্দনীড় এ আপনার প্রোফাইল পড়েছি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী দা। ভালো লিখেছেন। আশা করি ধীরে ধীরে আধুনিক ধারার আরও লেখা পড়ার সুযোগ হবে আপনার মাধ্যমে। শুভেচ্ছা। :)

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।