একটি গোলাপের কান্না

একটি গোলাপের কান্না

একটি গোলাপের বিনিময়ে বন্ধত্ব কিনেছিলাম।
সেদিন বুঝিনি বা বোঝার চেষ্টাও করি নি
যে গোলাপের গায়ে কাঁটা আছে।
ভালবাসার কাঁটা আজও আমার গলায় বিঁধে আছে।
গাঁয়ের মেয়ে কাজলকে আমি ভুলে গেছি।
আজ আমার একমাত্র সাথী__
সোফিয়া, জুলিয়েট মার্থা, বিউটি ক্যুইন
মিস এলিজা ইসাবেল।
……
কোন এক কুক্ষণে এসেছিল
অভিশপ্ত ভ্যালেন্টাইন ডে।
এই দিনে শুধুমাত্র শত সহস্র
তরুণ তরুণীরাই বিপন্ন হয় নি।
ভেঙে গেছে দেশ।
মৃত্যু হয়েছে ভালবাসার।

পাশ্চাত্য সভ্যতার অনুকরণ করতে গিয়ে
আজকের দেশ অনেক নীচে নেমে গেছে।
আজও ভালবাসার নদীতে ভেসে ওঠে
বুলেটবিদ্ধ তরুণ-তরুণীর মৃতদেহ।
রাতের অন্ধকারে এই ধরণীতে
বহু অপরিশ্রুত ভ্রূণের জন্ম দেয়
অল্পবয়সী প্রেমিক-প্রেমিকারা।
অন্ধকার চোরা গলি পথে
ঘোরাফেরা করে আঁধারের মুসাফির।
ভালবাসার শকুনের দল পবিত্র ভালবাসা
পান করে সবুজ পেয়ালায়।
ভালবাসার রঙিন চশমা পরলে
গোটা বিশ্বকে সবুজ দেখায়।
তবে কি সত্যিই
ভালবাসা মরে গেছে !!! ???

অথচ আজও কামনার রাঙা গোলাপ
হাতে নিয়ে অধীর আগ্রহে
অপেক্ষা করে তরুণ তরুণীর দল
অভিশপ্ত এই দিনটির জন্যে।
ভালবাসার কেনা বেচা শুরু হয়
একটি গোলাপের বিনিময়ে।
ওরা ভুলে যায়-
সতী সাবিত্রীর দেশ এই ভারতবর্ষ।
গার্গী, মৈত্রেয়ী, খনা, লীলাবতী
সীতা আর অরুন্ধতী।
বীনা দাশ, কল্পনা দত্ত প্রীতিলতা ওয়েদ্দার।
বৃটিশ সিংহের বিরুদ্ধে ওরা অগ্নিকন্যা
হয়ে জ্বলেছিল। কিন্ত আজকের দিনে
তরুণীরা বিউটি ক্যুইন সেজে
তরুণদের অবচেতন মনে
জাগায় কামনার ইন্ধন।
শুধু একটি গোলাপের বিনিময়ে।

…………
দিন চলে যায়। রাত আসে… এখন অনেক রাত।
……রাতের আঁধারে একলা গোলাপ শুধু কাঁদে।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

6 thoughts on “একটি গোলাপের কান্না

  1. "দিন চলে যায়। রাত আসে… এখন অনেক রাত।
    ……রাতের আঁধারে একলা গোলাপ শুধু কাঁদে।"

    ___ অসাধারণ উপলব্ধি। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইলো কবি মি. ভাণ্ডারী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. আপনার সু-মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। শুভেচ্ছা নিরন্তর।

      সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। ধন্যবাদ জানাই।

      জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

    1. আপনার সু-মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। শুভেচ্ছা নিরন্তর।
      সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। ধন্যবাদ জানাই।
      জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

  2. হালের কথা তুলে ধরেছেন কবিতায়। এমনটাই দেখি চারপাশে। স্বার্থ আর স্বার্থ। 

    1. আপনার সু-মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম। শুভেচ্ছা নিরন্তর।
      সাথে থাকুন, পাশে রাখুন। ধন্যবাদ জানাই।
      জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।