টুনি ও ফেরিওয়ালা

“পুতুল চাই পুতুল.. ” ফেরিওয়ালা রোজ হাঁকে,
বাড়ি থেকে বেরিয়ে টুনি ফেরিওয়ালাকে ডাকে।
টুনির ডাকে ফেরিওয়ালা পিছনেতে ফিরে দেখে,
আস্তে করে মাথার বোঝাটা নামায় মাথা থেকে।

টুনি বলে, “ফেরিওয়ালা! যাচ্ছো কোথায় তুমি?
দাওনা আমায় একটা পুতুল, বাঁশি ও ঝুমঝুমি”।
মা ডেকে কয়- “এদিকে আয়, আয় বলছি এক্ষুনি”
মায়ের ডাকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে ঢোকে টুনি।

বিধবা মায়ের আর কিছুই নেই মেয়েটিই সম্বল,
টুনির চোখে জল দেখে আজ মায়ের চোখে জল।
অনাহার যাদের নিত্যসাথী, বাড়িতে বাড়ন্ত চাল,
সুখের ছোঁয়া পায়না যারা, থাকে দুঃখ চিরকাল।

দেনার দায়ে বাড়িটা সেদিন টুনির মা রাখে বন্ধক,
এরপরে হায় মিটবে কি তার পুতুল কেনার শখ?
কিছুদিন পরে পুতুল নিয়ে ফেরিওয়ালা আসে গাঁয়ে,
না পায় দেখতে কচি শিশুমুখ দেখে না বিধবা মায়ে।

মাটির সেই বাড়ি নাই সেথা আর হয়েছে সে অট্টালিকা,
সারা ছাদ জুড়ে ফুলের টবেতে গোলাপ ফুল যায় দেখা।
যে ফুল না ফুটিতে ঝরে ধরণীতে বোঝে না সুখ-দুখ,
গোলাপের ফুল ছাদে ঝরে পড়ে তবুও তো তার সুখ।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

14 thoughts on “টুনি ও ফেরিওয়ালা

  1. টুনি ও ফেরিওয়ালা। আমাদের জীবনের এক একটি স্মৃতির স্বাক্ষ্য বহন করে। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. সুন্দর মন্তব্যে মন ভরে উঠলো গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হলাম।
      প্রিয়কবিকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু
      !জয়গুরু!জয়গুরু!

    1. সুন্দর মন্তব্যে মন ভরে উঠলো গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হলাম।
      প্রিয়কবিকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু
      !জয়গুরু!জয়গুরু!

  2. নস্টালজিয়ায় পড়লাম কবি ভাণ্ডারী দা। কী একটা সময় পেরিয়ে চলেছি।

    1. সুন্দর মন্তব্যে মন ভরে উঠলো গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হলাম।
      প্রিয়কবিকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু
      !জয়গুরু!জয়গুরু!

  3. টুনি বলে, “ফেরিওয়ালা! যাচ্ছো কোথায় তুমি?
    দাওনা আমায় একটা পুতুল, বাঁশি ও ঝুমঝুমি”।
    মা ডেকে কয়- “এদিকে আয়, আয় বলছি এক্ষুনি”
    মায়ের ডাকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে ঢোকে টুনি।

    ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেলো কবি দা। ভাল থাকুন। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. সুন্দর মন্তব্যে মন ভরে উঠলো গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হলাম।
      প্রিয়কবিকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু
      !জয়গুরু!জয়গুরু!

    1. সুন্দর মন্তব্যে মন ভরে উঠলো গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হলাম।
      প্রিয়কবিকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু
      !জয়গুরু!জয়গুরু!

    1. সুন্দর মন্তব্যে মন ভরে উঠলো গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হলাম।
      প্রিয়কবিকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু
      !জয়গুরু!জয়গুরু!

  4. "বিধবা মায়ের আর কিছুই নেই মেয়েটিই সম্বল, টুনির চোখে জল দেখে আজ মায়ের চোখে জল। অনাহার যাদের নিত্যসাথী, বাড়িতে বাড়ন্ত চাল, সুখের ছোঁয়া পায়না যারা, থাকে দুঃখ চিরকাল।"

     

    সুন্দর। 

    1. সুন্দর মন্তব্যে মন ভরে উঠলো গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হলাম।
      প্রিয়কবিকে আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু
      !জয়গুরু!জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।