শ্রীগুরু পূর্ণিমা (ভক্তিমূলক কবিতা)

আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গুরুপূর্ণিমা তাঁদের কাছে গুরুকে শ্রদ্ধা জানানোর দিন। গুরু শব্দটি সংস্কৃত, ‘গু’এবং ‘রু’ এই দুটি শব্দ দ্বারা গঠিত। গু শব্দের অর্থ অন্ধকার বা অজ্ঞতা এবং রু শব্দের অর্থ আলো। অর্থাৎ যিনি অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে যান তিনিই গুরু। মনের অন্ধকারকে দূর করে শিষ্যকে আলোর পথ দেখান গুরু। কোনও কোনও সময় এই পূর্ণিমা শ্রাবণ মাসে পড়ে যায়৷

হিন্দুরা বিশ্বাস করেন যখন জগৎ নিম্নমেধায় ভরে গিয়েছিল তখন এক আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতে মহাভারত প্রণেতা এবং বেদ বিভাগ কর্তা মহর্ষি কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাসদেব জন্মগ্রহণ৷ তিনি জন্মগ্রহণ করেন মুনি পরাশর ও মাতা সত্যবতীর ঘরে। মহর্ষি ব্যাসদেবের জন্মতিথি বলে এই পূর্ণিমাকে ব্যাস পূর্ণিমাও বলা হয়ে থাকে। তাই আদিগুরু হিসেবে তাঁর জন্মতিথিকে কেন্দ্র করে এই গুরুপূর্ণিমা সমাজে প্রসার লাভ করে। যদিও অপর এক মতে বলা হয়, ভগবান শিব এই তিথিতেই সপ্তর্ষিকে জ্ঞান প্রদান করেন। সেই ঘটনা থেকেই কালক্রমে গুরু প্রথার সৃষ্টি হয়েছিল৷

।জানেন কি?

এই দিনটি বৌদ্ধদের কাছেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এই পূর্ণিমাতেই ভগবান বুদ্ধদেব সর্বপ্রথম তাঁর পাঁচজন শিষ্যকে উপদেশ প্রদান করেন। এই ঘটনাকে স্মরণ করে এই গুরু পূর্ণিমা দিনটি পালন করে তারা। তাই এই দিনটি হিন্দুদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে তারা তাদের আধ্যাত্মিক গুরুর পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আচার্য বা শিক্ষা গুরুদের উদ্দেশ্যে পূজা ও শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করে। গুরুকে স্মরণ করেই শুরু হয় তাদের কর্মজীবনের পথচলা।

এই পূর্ণিমা থেকেই বর্ষ৷র শুরু বলেও ধরা হয়৷ নেপালে এই দিনটি আবার শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়৷ ভারতেও কোনও কোনও স্থানে ছাত্রছাত্রীরা তাদের শিক্ষকদের এই দিন শ্রদ্ধা জানান৷

।শ্রীগুরু পূর্ণিমা
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শ্রীগুরু পূর্ণিমা আজি পবিত্র দিবসে,
এ জীবন ধন্য হোক চরণ পরশে।
শ্রীগুরু চরণ পূজা কর ভক্তি ভরে,
সুখী হবে এই ভবে চিরদিন তরে।

শোক তাপ জরা ব্যাধি জগত মাঝার,
গুরু কৃপা বিনা ভবে কিছু নাহি আর।
শুনহ জীবের জীব আমার বচন,
ভজ গুরু, পাবে তুমি অমূল্য রতন।

গুরু পদে নিষ্ঠা ভক্তি রাখ অনিবার,
গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু জগতের সার।
গুরু বিনা এ জগতে সকলি অসার,
দুঃখের সাগর হবে অনায়াসে পার।

অবিরাম গুরু নাম যে করে স্মরণ,
সুখী হন সেই জন কহেন লক্ষ্মণ।
এ জগতে গুরু হন ভবের কাণ্ডারী,
কবিতায় কহে কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

14 thoughts on “শ্রীগুরু পূর্ণিমা (ভক্তিমূলক কবিতা)

  1. অবিরাম গুরু নাম যে করে স্মরণ, সুখী হন সেই জন কহেন লক্ষ্মণ।
    এ জগতে গুরু হন ভবের কাণ্ডারী, কবিতায় কহে কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

  2. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও আপ্লুত হলাম।
    সাথে থাকবেন। জয়গুরু!

  3. আপনার পরিবেশনার শিক্ষণীয় বা জেনে নেবার মতো যথেষ্ঠ রশদ থাকে কবি। 

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম সতত সাথে থাকবেন প্রিয়।
      অনুপ্রেরণা দিয়ে উত্সাহিত করবেন।
      প্রীতি আর শুভেচ্ছা রইল।
      জয়গুরু!

  4. প্রণাম প্রিয় কবি দা। আপনার জ্ঞান সবার মাঝেও বন্টন হোক। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম সতত সাথে থাকবেন প্রিয় কবিবোন।

      অনুপ্রেরণা দিয়ে উত্সাহিত করবেন।

      প্রীতি আর শুভেচ্ছা রইল।

      জয়গুরু!

  5. দারুণ ভাণ্ডারী দা। প্রাক আলোচনা আর কবিতা দুটোই ভালো হয়েছে। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে বিমুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি সাথে থাকুন।

      আন্তরিক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানাই।
      জয়গুরু!

  6. পূর্ণিমা তিথি বিষয়ক আলেচনাটি আমার জানা ছিলো না। মুগ্ধ হয়ে পড়লাম।

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে বিমুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি । সাথে থাকুন।
      আন্তরিক প্রীতি আর শুভেচ্ছা জানাই।
      আন্তরিকতায় মুগ্ধ হলাম কবি
      জয়গুরু!

  7. আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথি ইন্টারেস্টিং। 

    1. মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম সাথে থাকবেন, পাশে রাখবেন।

      অনুপ্রেরণা দিয়ে উত্সাহিত করবেন।

      জয়গুরু!

    1. মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম । সাথে থাকবেন, পাশে রাখবেন।
      সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ দিদিভাই।
      জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।