আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-৬

আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-৬
– লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের আদর্শ ও উপদেশ।

অবতার
————–
## বর্তমানে হিন্দু সমাজের বড় একটি কুসংস্কার হল, আমরা যাকে খুশী তাকেই অবতার, যুগাবতার, পুরুষোত্তম, পূর্ণ ব্রহ্ম এসব নাম দিয়ে অধর্ম প্রচার করে থাকি। এই সব মিথ্যা অবতারদের জন্য হিন্দু সমাজে দলা -দলি, হিংসা -হিংসী, করে হিন্দু সমাজ ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। হিন্দু হিন্দু ভাই ভাই এ কথা এখন আর কেউ বলতে চায় না। গুরু ভাই, অমুক সংঘের ভাই ভাই হয়ে গেছে। ১৭৩০ সাল থেকে ১৮৮৮ সাল পর্যন্ত প্রসিদ্ধ ৭ জন অবতারের সৃষ্টি হয়েছে, আর ছোট খাট বহু অবতারের সৃষ্টি হয়েছে।

তাই হিন্দু সমাজকে এক করার জন্য, ভগবান বানানো, মিথ্যা অবতার বানানো, এসব কুসংস্কার দূর করার জন্য, ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র বলেছেন,

১/ দ্যাখ ভাই, আমি গুরুগিরি, অবতার টবতার বড় ঘৃণা করি। আমার দেশে দুই একবার হরি বললেই অবতার হয়ে পড়ে। ( পূণ্যপুথি, ৫৬/১২)

২/ আমি অবতারও নই, ভগবানও নাই। তবে তুমি ভগবানকে ভালবাস, তার পথে চল,মানুষ যাতে শ্রদ্ধা করে তেমনভাবে চল,তবে ভাল হবে। ( আলোচনা প্রসঙ্গে, ২১, পৃষ্ঠা- ৩০)

৩/ ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের কিছু বিপথগামী শিষ্যরা, ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রকে যুগাবতার প্রচার করতো, তখন তিনি অনেক রাগ করতেন এবং তাদেরকে নিষেধ করতেন। ( জীবনী গ্রন্থ)

বন্দে পুরুষোত্তম
————————-

## গীতার ১৫ অধ্যায়টির নাম হল পুরুষোত্তম যোগ। আমাদের পুরুষোত্তমের সাথে যুক্ত হতে হবে। গীতায় (১৫/১৮) শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, বেদে আমি পুরুষোত্তম নামে বিখ্যাত। অর্থাৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন পুরুষোত্তম। ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত। তাই তিনি সব সময় শ্রীকৃষ্ণের ধ্বনি দিতেন, বন্দে পুরুষোত্তম। এবং তার অনুসারিদেরও তিনি বন্দে পুরুষোত্তম ধ্বনি দিতে বলতেন।

১/ উদাত্ত কণ্ঠে বল – বন্দে পুরুষোত্তমম। ( আদর্শ বিনায়ক – ২৩৯)
সাধু হও
————–

## ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র সব সময় চাইতেন, সমাজে সাধু মানুষদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাক। কারন সাধু বা ভাল মানুষদের সংখ্যা বৃদ্ধি হলেই সমাজ ভাল থাকবে। কিন্তু ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র চাইতেন সাধু না হয়ে শুধু শুধু সাধুর পোশাক ( ধূতি, পাঞ্জাবি, মালা, তীলক, টিকি, পৈতা, প্রভৃতি) পড়ে ঘুড়ে বেড়িয়ো না। কারন সাধু না হয়ে, যারা সাধুর পোষাক পড়ে, তাদের উদ্দেশ্য ভাল নয়,তারা স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এই পোশাক ধরেছে।

ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র চাইতেন, তুমি সাধু হয়ে, সাধুর পোশাক পড়। শাস্ত্রে সাধুদেরও পোশাক চিহ্নের কথা বলা হয়েছে। স্কুলে ভর্তি হলে স্কুল ড্রেস পড়তে হয়। স্কুলে ভর্তি না হয়ে শুধু শুধু স্কুল ড্রেস পড়ে ঘুড়ে বেড়ানো অপরাধ, আবার স্কুলে ভর্তি হয়ে স্কুলের নির্দিষ্ট পোশাক না পড়াও অপরাধ। হিন্দু বিবাহিত মহিলাদের শাখা সিঁদুর চিহ্ন, ব্রাহ্মণের পৈতা চিহ্ন, এগুলো পরিধান না করা, তাদের জন্য অপরাধ। এ রকম ডাক্তার, আর্মি, উকিল এদেরও নিদিষ্ট পোশাক পড়েছে, যা তাদের কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি করে। তেমনি সাধুদেরও পোশাক তাদের ভক্তি পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করে, যা সাধুদের শাস্ত্র পথে চলতে দায়িত্বশীল করে।

তাই ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র চাইতেন সাধু হয়ে সাধুর পোষাক পরিধান করুক। তাই তিনি বলতেন-

১/ সাধু সেজো না, সাধু হও।( সত্যানুসরন)

আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-৬
-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

প্রাণের ঠাকুর দয়াল আমার
নাম এনেছেন এ ধরায়.
আয় গো তোরা নাম নিবি কে আয়।

গুরু ব্রহ্মা গুরু বিষ্ণু গুরু ভগবান,
গুরু পিতা গুরু মাতা দেবতা সমান,
গুরু কাছে দীক্ষা নিলে অজ্ঞান অন্ধকার মুছে যায়।

আয় গো তোরা নাম নিবি কে আয়।
প্রাণের ঠাকুর দয়াল আমার
নাম এনেছেন এ ধরায়.
আয় গো তোরা নাম নিবি কে আয়।

নামের গুণে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়।
এই নামেতে ভাসালে তরী কাটে বিপদ ভয়।
কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কয়, দয়াল নাম আনিলেন বসুধায়।

আয় গো তোরা নাম নিবি কে আয়।
প্রাণের ঠাকুর দয়াল আমার
নাম এনেছেন এ ধরায়.
আয় গো তোরা নাম নিবি কে আয়।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

10 thoughts on “আমার প্রাণের ঠাকুর গীতিকবিতা-৬

    1. সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অভিভূত হলাম প্রিয় কবি।
      আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পাই।সাথে থাকবেন।
      প্রত্যাশা রাখি। জয়গুরু!

  1. সাধু সেজো না, সাধু হও।( সত্যানুসরন) https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    1. আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পাই।সতত সাথে থাকবেন।
      পরমপিতার অমিয় পরশে সবাকার জীবন ধন্য হোক।
      প্রত্যাশা রাখি। জয়গুরু!

  2. ঠাকুরের জন্য প্রণাম রাখি প্রিয় কবি দা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পাই।সতত সাথে থাকবেন প্রিয় কবি।
      পরমপিতার অমিয় পরশে সবাকার জীবন ধন্য হোক।
      প্রত্যাশা রাখি। জয়গুরু!

  3. নামের গুণে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হয়।
    এই নামেতে ভাসালে তরী কাটে বিপদ ভয়।
    কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কয়, দয়াল নাম আনিলেন বসুধায়। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পাই।সতত সাথে থাকবেন প্রিয় কবি।
      পরমপিতার অমিয় পরশে সবাকার জীবন ধন্য হোক।

      পরম পিতার জয় দাও। কোটি কোটি কণ্ঠে উচ্চারিত হোক
      বন্দে পুরুষোত্তমম। জয়গুরু!

  4. "আমি অবতারও নই, ভগবানও নাই। তবে তুমি ভগবানকে ভালবাস, তার পথে চল, মানুষ যাতে শ্রদ্ধা করে তেমনভাবে চল, তবে ভাল হবে।' https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. শ্রী শ্রী ঠাকুর বলেছেন-

      “সত্গুরুর শরণাপন্ন হও, সত নাম মনন কর। আমি নিশ্চিত করে বলছি
      তোমার উন্নয়নের জন্য তোমাকে ভাবতে হবে না।”

      আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পাই।
      সতত সাথে থাকবেন।
      প্রত্যাশা রাখি।

      পরমপিতার অমিয় পরশে সবাকার জীবন ধন্য হোক।

      জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।