এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে – মা লক্ষ্মীর বিসর্জন – সমাপ্তি পর্ব স্বর্গের লক্ষ্মী ও মর্ত্যের লক্ষ্মী

এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে – মা লক্ষ্মীর বিসর্জন – সমাপ্তি পর্ব
তথ্যসংগ্রহ, সম্পাদনা, কাব্য রচনা ও পাঠ- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

গতকাল ছিল কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা। প্রায় প্রতিটি হিন্দু গৃহস্থ পরিবারে আজ মহাসমারোহে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়েছে। সন্ধ্যা বেলায় কোনও কোনও বাড়িতে দেবী লক্ষ্মী প্রতিমা কিংবা কোনও বাড়িতে আবার লক্ষ্মীদেবীর পটকে পুজো করা হয়েছে। বিশেষ করে বাঙালিদের মধ্যে এই কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর একটা বিশেষ রীতি দেখা যায়। তবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে কোনও প্রতিমা নয় বরং নিজের মেয়েকে দেবীর আসনে বসিয়ে, দেবী লক্ষ্মীর মতো সাজিয়ে পুজো করলেন নদিয়ার এক স্কুল শিক্ষক। জীবন্ত লক্ষ্মীকে পূজা দেওয়া হয়েছে।

মর্ত্যের লক্ষ্মীরা অবহেলার পাত্রী নয়, কন্যা সন্তানকে পুত্রবধূ হিসেবে এনে তাঁকে যেন সমাজের অত্যাচারিত না হতে হয় এই বার্তা দিতেই নদিয়ার ওই শিক্ষক এক অনন্য নজির গড়েছেন। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের শিবনিবাস গ্রামের ওই স্কুল শিক্ষক শাস্ত্র মতে পুরোহিত ডেকে এবং রীতিমতো পুজোর আয়োজন করে তাঁর পাঁচ বছরের লক্ষ্মী মেয়েকে পুজো করেছেন।

রবিবার ছুটির দিনে কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমায় ওই শিক্ষক এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা এক ব্যতিক্রমী লক্ষ্মীপুজোয় মেতে উঠেছিলেন। এই পরিবারে পুজো করতে আসা পুরোহিত জানিয়েছেন, যেহেতু মেয়েরা মা লক্ষ্মীর একটি জাত তাই শাস্ত্র মেনেই শিশু কন্যাকে পুজো করা হয়েছে।

সমাজে যেভাবে নারী নির্যাতন বেড়ে চলেছে তার প্রতিবাদ করতেই এই অভিনব লক্ষ্মী পুজোয় মেতে উঠেছিলেন ওই শিক্ষক। নদিয়ার শিব গ্রামে ওই শিক্ষক তথা রমেশ চন্দ্র বিশ্বাসের শ্বশুর বাড়ি। রবিবার তাঁর দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে রূপকথাকে লক্ষ্মী দেবীর মতো সাজিয়ে পুজো করেছেন তাঁরা। মর্ত্যের জীবন্ত লক্ষ্মীকে পূজা করা হয়েছে।

আর এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ওই শিক্ষক জানিয়েছেন সমাজে কিংবা শ্বশুরবাড়িতে জীবন্ত লক্ষ্মীদের যে ভাবে নানা ভাবে অত্যাচারিত হতে হচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন পাশাপাশি সমাজে যাতে কোনও মর্ত্যের লক্ষ্মীকে অত্যাচারিত না হতে হয় এবং লক্ষ্মী মেয়েদের যেন অবহেলা না করা হয় তাঁর বার্তা দিতেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বলে জানান রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস। তবে রমেশ চন্দ্র বাবুর স্ত্রী জানিয়েছেন তাঁদের বড় মেয়ে অর্থাত্ রূপকথার জনমের পর তাঁদের সংসারের আয় উন্নতি অনেক বেড়ে গিয়েছে আর তাতেই মেয়েকে লক্ষ্মী দেবী রূপে পুজো করলেন তাঁরা।

এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে – মা লক্ষ্মীর বিসর্জন – সমাপ্তি পর্ব
স্বর্গের লক্ষ্মী ও মর্ত্যের লক্ষ্মী

কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

স্বর্গের লক্ষ্মী মর্ত্যে এসে পূজা পায় প্রতি ঘরে,
মর্ত্যের লক্ষ্মী অন্নহীনা চোখ আসে জলে ভরে।
স্বর্গের লক্ষ্মী মর্ত্যে এলে হয় শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা,
মর্ত্যের লক্ষ্মী পথেপথে ঘুরে দুনয়নে অশ্রুভরা।

স্বর্গের লক্ষ্মীর স্বর্ণ-কুম্ভে পূর্ণ ধনরত্ন রাশিরাশি,
মর্ত্যের লক্ষ্মী লাজ বাঁচাতে গলায় পরে ফাঁসি।
স্বর্গের লক্ষ্মী বিষ্ণুলোকে দিন কাটে তার সুখে,
মর্ত্যের লক্ষ্মী ভিখারিণী দিন কাটে তার দুঃখে।

লক্ষ্মী-হীনা ধরিত্রীর বুকে লক্ষ্মীরা আজ কাঁদে,
পতিহীনা লক্ষ্মীর সন্তানের দায়িত্ব তার কাঁধে।
পুত্রহারা বিধবা লক্ষ্মীর চোখ ফেটে আসে জল,
হয়েছে সময় দেরি নয় জাগো লক্ষ্মীমায়ের দল।

কবিতা আমার ক্লান্ত আজি বিদ্রোহী কবির কলম,
লক্ষ্মীর ঝাঁপি শূণ্য কেন আজি? কহে কবি লক্ষ্মণ।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

11 thoughts on “এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে – মা লক্ষ্মীর বিসর্জন – সমাপ্তি পর্ব স্বর্গের লক্ষ্মী ও মর্ত্যের লক্ষ্মী

  1. লক্ষ্মী-হীনা ধরিত্রীর বুকে লক্ষ্মীরা আজ কাঁদে,
    পতিহীনা লক্ষ্মীর সন্তানের দায়িত্ব তার কাঁধে।
    পুত্রহারা বিধবা লক্ষ্মীর চোখ ফেটে আসে জল,
    হয়েছে সময় দেরি নয় জাগো লক্ষ্মীমায়ের দল।

    অসাধারণ প্রিয় কবি মি. ভাণ্ডারী। একরাশ শুভকামনা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি।
      শুভ সকালের একরাশ শিশিরভেজা শুভেচ্ছা।
      সাথেই থাকুন। জয়গুরু!

  2. কবিতা আমার ক্লান্ত আজি বিদ্রোহী কবির কলম,
    লক্ষ্মীর ঝাঁপি শূণ্য কেন আজি? 

    যুক্তিযুক্ত প্রশ্ন করেছেন কবি দা। শুভেচ্ছা জানবেন। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_flowers.gif

    1. এ প্রশ্ন শুধু আমার একার নয় কবি,
      আপনার, আমার, আমাদের সকলের।

      আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি।
      শুভ সকালের একরাশ শিশিরভেজা শুভেচ্ছা।
      সাথেই থাকুন। জয়গুরু!

  3. স্বর্গের লক্ষ্মী মর্ত্যে এলে হয় শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা,
    মর্ত্যের লক্ষ্মী পথেপথে ঘুরে দুনয়নে অশ্রুভরা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি।
      শুভ সকালের একরাশ শিশিরভেজা শুভেচ্ছা।
      সাথেই থাকুন। জয়গুরু!

  4. পরম এ বাস্তবতার ভীড়ে প্রতিটি হিন্দু গৃহস্থ পরিবারে আজও মহাসমারোহে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা। আচারে মাতি কার্যতে দিল্ রাখি না। চালতে রাহো।

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি।
      শুভ সকালের একরাশ শিশিরভেজা শুভেচ্ছা।
      সাথেই থাকুন। জয়গুরু!

    1. মার অভিষেকে এসো সবাই
      নাই নাই আর দেরী নাই।
                   এসো সবাই লক্ষ্মীমায়ের দল।

      আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ হলাম প্রিয়কবি।
      শুভ সকালের একরাশ শিশিরভেজা শুভেচ্ছা।
      সাথেই থাকুন। জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।