অজয় নদীর জলধারা……. বয়ে চলে বারো মাস (দশম পর্ব)

অজয় নদীর জলধারা……. বয়ে চলে বারো মাস (দশম পর্ব)
তথ্যসংগ্রহ, সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

অজয় নদী সারা বছর বালির বোঝা নিয়ে শুয়ে থাকে। তিরতির করে একটা বা দুটো জলের ধারা বুকের উপর দিয়ে বয়ে যায়। এ কেমন নদী?

পার হয়ে যায় গরু, পার হয় গাডি.।’ ভি.আই.পি.দের জন্য … নদী জলে ভরে যায়। নৌকো চালু হয় নদী পারাপারের জন্যে। পুজোর পর পর্যন্ত চলবে এই ব্যবস্থা। মানুষ বিরাট কংকরিটের ব্যারেজ। নদীর বুকে বাঁশের সেতু. … এবছর বাদে সেটাও বদলি হয়ে চলে যাবে অন্য কোথাও। ঢেউয়ের টানে।

সারা বছর এই নদীতে জল থাকে৷ তবে এখন বছরের বেশিরভাগ সময়েই এই নদীতে কম জল থাকে৷ এক সময় এই নদীর জলেই বিস্তীর্ণ এলাকার চাষাবাদ হতো৷ নদীর জলেই ধান সেদ্ধ করা হত৷ এই জলে রান্নাবান্নাও হত৷ কিন্ত্ত এখন এই নদীতে সামান্য পরিমাণে জল থাকলেও তা ব্যবহারের অনুপযুক্ত৷

কিছু জায়গায় নদীর জলে গোরু, মোষ স্নান করানো হয়৷ তাতে নদীর জল দূষিত হচ্ছে৷ নদীর জল দৈনন্দিন চাহিদার বেশ কিছুটা পূরণ করলেও দূষণের কারণে নতুন প্রজন্ম তা আর দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করছে না৷

অজয় প্রাণের কথা বলে, অজয় মনের কথা বলে। গেয়ে যায় মাটির গান, স্রোতের টানে। দিন যায় রাত আসে। রাত কেটে ভোর হয়। আসে নতুন সকাল। দিন রাত, মাসের পর মাস অজয়ের জলধারা…. বয়ে চলে বারোমাস।

অজয় নদীর জলধারা…….বয়ে চলে বারো মাস
অজয় নদীর কবিতা-১০ (দশম পর্ব)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

অজয় নদীর ধারা বয় কলরবে,
কল কল বয়ে যায় শুধুই নীরবে।
প্রভাত পাখিরা গায় বসি তরুশাখে,
পূর্বদিকে সূর্য ওঠে অজয়ের বাঁকে।

নদীঘাট সুশীতল যাত্রী পার হয়,
প্রভাতের মৃদু মন্দ সমীরণ বয়।
সোনালি রোদ্দুর হাসে অজয়ের চরে,
জল নিতে আসে বধূ রাঙাপথ ধরে।

অজয়ের ওই পারে গ্রাম নবশন,
সিদ্ধপুর ঘাটে পার হয় যাত্রীগণ।
দুই ধারে সোনাধান পথ গেছে বেঁকে,
নদীঘাটে যাত্রী নামে গরুগাড়ি থেকে।

অজয়ের জলধারা বয়ে বারো মাস,
অজয়ের জল খেয়ে সুখে করি বাস।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

8 thoughts on “অজয় নদীর জলধারা……. বয়ে চলে বারো মাস (দশম পর্ব)

    1. সুন্দর মন্তব্যে আপ্লুত হলাম প্রিয় কবিবর।
      সাথে থাকুন, পাশে রাখুন।
      জয়গুরু!

  1. অজয় প্রাণের কথা বলে, অজয় মনের কথা বলে। গেয়ে যায় মাটির গান, স্রোতের টানে। দিন যায় রাত আসে। রাত কেটে ভোর হয়। আসে নতুন সকাল। দিন রাত, মাসের পর মাস অজয়ের জলধারা…. বয়ে চলে বারোমাস। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_heart.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম।
      সাথে থাকবেন- প্রত্যাশা করি।
      জয়গুরু!

  2. দুই ধারে সোনাধান পথ গেছে বেঁকে,
    নদীঘাটে যাত্রী নামে গরুগাড়ি থেকে।

    অপরূপ ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠলো কবি দা। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_rose.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম প্রিয়কবি।
      সাথে থাকবেন- প্রত্যাশা করি।
      জয়গুরু!

  3. অজয়ের জলধারা বয়ে বারো মাস,
    অজয়ের জল খেয়ে সুখে করি বাস। চমৎকার কবি। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_Yes.gif.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত হলাম।
      সাথে থাকবেন- প্রত্যাশা করি।
      জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।