পৌষ পার্বন মকর সংক্রান্তি …….. ঘরে ঘরে পিঠেপুলি এসো পৌষ যেও না পৌষপার্বনের কবিতা-৪

পৌষ পার্বন মকর সংক্রান্তি …….. ঘরে ঘরে পিঠেপুলি
অজয়ের ঘাটে সবাকার আহ্বান- এসো পৌষ যেও না

তথ্যসংগ্রহ সম্পাদনা ও কলমে – লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

মকর সংক্রান্তিতে কয়েক লক্ষ মানুষ অজয়ের ঘাটে স্নান করবেন। প্রচলিত রয়েছে, কবি জয়দেব বর্ধমানের কাটোয়ায় নিয়মিত গঙ্গাস্নানে যেতেন। জয়দেব থেকে এত পথ যেতে কষ্ট হত তাঁর। কবি এক দিন স্বপ্নে দেখেন, মা গঙ্গা তাঁকে বলছেন— ‘এ বার থেকে তোকে এত পথ হেঁটে আসতে হবে না। আমিই উজানে অজয় নদে আসব। তা বোঝা যাবে যখন মকর সংক্রান্তিতে জয়দেব সংলগ্ন অজয়ের কদমখণ্ডির ঘাটে একটি ফুল ভেসে আসবে।’ কথিত রয়েছে, সেই ফুল ভেসে এসেছিল ওই ঘাটে-ই। মকর সংক্রান্তিতে অজয়ের ঘাটে স্নান করলে গঙ্গাস্নানের পূণ্য অর্জন হয় বলে বিশ্বাস। তার জেরেই রাজ্যে ও দেশের নানা প্রান্ত থেকে পূণ্যস্নানের জন্য এ দিন আসেন মানুষ। শুধু মকরস্নান ও রাধাবিনোদ মন্দিরে পুজো দেওয়া এবং মেলায় ঘোরা নয়, জয়দেব কেঁদুলির মেলায় উপরি পাওনা, বিনা খরচে আখড়ায় থাকা-খাওয়া, কীর্তন ও বাউলের সুরে মজে থাকা।

এছাড়া আরও প্রচলিত রয়েছে, বীরভূম ও বর্ধমান জেলার মাঝবরাবর বয়ে যাওয়া অজয় নদের ধারে কেন্দুবিল্ব গ্রামে জন্ম লক্ষ্ণন সেনের সভাকবি জয়দেবের। গীতগোবিন্দের রচয়িতা জয়দেব যিনি পরিচিত সংস্কৃত সাহিত্যের শেষ বড় মৌলিক কবিরূপে। কথিত আছে, মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গায় স্নান করতে কবি প্রতিবছর যেতেন কাটোয়ায়। একবার অসুস্থ হয়ে পড়ায় কাটোয়া যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় তিনি মুষড়ে পড়েন। রাতে স্বপ্ন দেখেন তাঁর জন্য গঙ্গা উজান বেয়ে এসে মিলেছেন অজয়ে। মনে করা হয়, সেই থেকেই অজয় নদে মকর স্নান ও মেলার সূচনা। মকর সংক্রান্তিতে অজয়ের ঘাটে স্নান করলে গঙ্গাস্নানের পূণ্য অর্জন হয় বলে বিশ্বাস। তার জেরেই রাজ্যে ও দেশের নানা প্রান্ত থেকে পূণ্যস্নানের জন্য এ দিন আসেন মানুষ।

তথ্যসহায়তায়: আনন্দবাজার পত্রিকা

পৌষ পার্বন মকর সংক্রান্তি …….. ঘরে ঘরে পিঠেপুলি
এসো পৌষ যেও না ( পৌষপার্বনের কবিতা-৪)

কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

ঘরে ঘরে পিঠে পুলি ভারি ধূম হয়,
পিঠে খেলে পেটে সয় কর সুনিশ্চয়।
গুড় তিল চাঁছি দিয়ে সবে পিঠা গড়ে,
পিঠে পুলি উত্সব প্রতি ঘরে ঘরে।

খেজুর পাটালি গুড় সুস্বাদু আহার,
দুধ পিঠা বাটিসাপ্টা বিবিধ প্রকার।
সরুপিঠা গোটাপিঠা তিলপিঠা হয়,
প্রাণভরে খাও পিঠা নাহিক সংশয়।

ধন্য ধন্য পল্লীগ্রাম, ধন্য রীতিনীতি,
সকলেই পিঠে খায় রাতে টুসুগীতি।
ভোরে হয় নদীঘাটে টুসুর ভাসান,
নদীজলে সকলেই করে পূণ্যস্নান।

পৌষ মাস সংক্রান্তি মকর পরবে,
মেতে ওঠে সারাগ্রাম হর্ষ কলরবে।

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী সম্পর্কে

লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী –নামেই কবির পরিচয়। কবির বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে বর্ধমান জেলার পাথরচুড় গ্রামে। প্রকৃতির সাথে পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। বর্তমানে কবি বাংলা কবিতার আসর, বাংলার কবিতা ও কবিতা ক্লাবের সাথে যুক্ত। অবসর সময়ে কবি কবিতা লেখেন ও স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন। কাব্যচর্চার সাথে সাথে তিনি সাহিত্যচর্চাও করেন। গল্প ও রম্য রচনা আর ছোট গল্প লিখেন। বহু একাঙ্ক নাটকও তিনি লিখেছেন। অন্ধকারের অন্তরালে, সমাজের শত্রু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বহু যাত্রাপালা -সোনা ডাকাত, শ্মশানে জ্বলছে স্বামীর চিতা উল্লেখযোগ্য। কবির অভিনয় প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে বিচারক মণ্ডলী তাঁকে বহু সম্মানে ভূষিত করেছেন। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী একাধারে কবি ও অপর দিকে লেখক। তার লেখা “আমার গাঁ আমার মাটি”, আমার প্রিয় শহর জামুরিয়া, আমার প্রিয় শহর কুলটি, আমার প্রিয় শহর আসানসোল, আমার প্রিয় শহর রাণীগঞ্জ বহু পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী প্রকৃতপক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিনি অন্য ধর্মকেও শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বিশ্বাস করেন সব মানুষই ঈশ্বরের সন্তান। তাই ধর্মে আলাদা হলেও আমরা সবাই ভাই ভাই।

2 thoughts on “পৌষ পার্বন মকর সংক্রান্তি …….. ঘরে ঘরে পিঠেপুলি এসো পৌষ যেও না পৌষপার্বনের কবিতা-৪

  1. খেজুর পাটালি গুড় সুস্বাদু আহার, দুধ পিঠা বাটিসাপ্টা বিবিধ প্রকার।
    সরুপিঠা গোটাপিঠা তিলপিঠা হয়, প্রাণভরে খাও পিঠা নাহিক সংশয়। https://www.shobdonir.com/wp-content/plugins/wp-monalisa/icons/wpml_good.gif

    1. আপনার সুন্দর মন্তব্যে আপ্লুত হলাম।
      শুভাশীর্বাদ কাম্য। জয়গুরু!

মন্তব্য প্রধান বন্ধ আছে।